• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

ছয় বছরে বিদেশ থেকে ফিরেছেন ৬৭ হাজার নারী  

প্রকাশিত: ১৯:২০, ৭ মে ২০২৫

ফন্ট সাইজ
ছয় বছরে বিদেশ থেকে ফিরেছেন ৬৭ হাজার নারী  

বাংলাদেশ থেকে নারীদের বিদেশে যাওয়া যেমন বাড়ছে তেমনি অনেক নারী ফেরতও আসছেন। এই নারী অভিবাসীদের দেশে-বিদেশে সুরক্ষা ও কল্যাণে সরকারি ও বেসরকারি সব সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। 

বুধবার (৭ মে) ঢাকার একটি হোটেলে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘নারী অভিবাসীদের অধিকার ও ক্ষমতায়নে আমরা সবাই এক’ শীর্ষক কর্মশালায় এই বক্তব্য উঠে আসে। 

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে নারী অভিবাসন বাড়ছে। বিদেশে তাদের যেমন সুরক্ষা দিতে হবে তেমনি দেশে ফেরার পর মর্যাদার সঙ্গে তাদের বিভিন্ন কাজে ও উদ্যোগে যুক্ত করতে হবে। এসএমই ফাউন্ডেশন বিদেশ-ফেরত নারীদের উদ্যোক্তা তৈরি, প্রশিক্ষণ ও অর্থ সহায়তার জন্য কাজ করবে। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো. সাইফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘নারীরা পরিবার থেকে শুরু করে নানাভাবে সহিংসতার শিকার। বিদেশে নারীরা যেন বিপদে না পড়েন সেজন্য অভিবাসনকে নিরাপদ করতে হবে। পাশাপাশি বিদেশ-ফেরত নারীদের জন্য বিমানবন্দরে সেবা থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে সেবার মান বাড়াতে সরকার কাজ করছে।’ 

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের রেইজ প্রকল্পের পরিচালক ড. এটিএম মাহবুব-উল-করিম জানান, ‘বিদেশ-ফেরত প্রায় ৩১ হাজার নারীকে সরকার চিহ্ণিত করে সেবা দিয়েছে। এই কাজ চলমান আছে।’   

বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘দক্ষ করে না পাঠানোয় বিদেশে গিয়ে নারীরা নির্যাতনের শিকার হন। ফিরে এসেও তাদেরকে সমাজে হেয় হতে হয়। নারীর অভিবাসনকে নিরাপদ ও ফেরার পর সহায়তা দিতে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়তে হবে।’ 

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে ব্র্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন এন্ড ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান জানান, ‘বাংলাদেশের প্রায় ১০ লাখ নারী এখন বিদেশ আছে। গত ছয় বছরে ৬৭ হাজারেরও বেশি নারী নানা সংকটে পড়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। এদের অনেকেই নিপীড়নের শিকার। বিদেশ-ফেরত নারীদের যেন আমরা সবাই মিলে সেবা দিতে পারি সে জন্যে নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশি উইমেন মাইগ্রেন্টস কাজ করবে। প্রতিটা সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এখানে তার সেবা নিয়ে এগিয়ে আসবেন।’ 

জনশক্তি প্রেরণের সঙ্গে যুক্ত সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘ফিলিপাইনের মতো দেশ নিজেদের নারী অভিবাসীদের কোনো সমস্যা হলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু সেটা কি আমরা পারি? যে নিয়োগকর্তা নিপীড়ন করেন তাকে কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে।’ 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্র্যাকের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত ‘ইমপ্রুভড সাসটেইনেবল রিইন্টিগ্রেশন অব বাংলাদেশি রিটার্নি মাইগ্রেন্টস (প্রত্যাশা-২)’ প্রকল্পের আওতায় হোটেল সোনারগাঁয়ে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিদেশ-ফেরত বাংলাদেশি নারীদের সহায়তা করতে গড়ে তোলা ব্র্যাকের ‘নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশি উইমেন মাইগ্রেন্টস’-এর চেয়ারপারসন শীপা হাফিজা। তিনি বলেন, সবাই মিলে কাজ করলে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবেই। 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সেন্টার ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন স্টাডিজের সভাপতি অধ্যাপক ইশরাত শামীম, বাংলাদেশ ফেডারেশন অব উইমেন এন্টারপ্রেনার্সের সভাপতি ড. রুবিনা হোসেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার রাহনুমা সালাম খান, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) প্রোগ্রাম অ্যাসিস্টেন্ট আমরিন জামান আনিশা, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) উপপরিচালক মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী, ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের উপপরিচালক (কল্যাণ) শরিফুল ইসলাম, নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রোগ্রাম অফিসার নাজনীন আখতারী, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি (বিএনডব্লিউএলএ)-এর ফেরদৌস নিগার, বাংলাদেশী অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ রুমানা, ব্লাস্টের মোস্তফা জামিলসহ অংশীজনরা।

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন: