১৩৮২ কোটি টাকার বিভিন্ন নজরদারি পণ্য কিনেছিলো আওয়ামী সরকার (ভিডিও)
২০১৬-২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী শাসনামলে ১৩৮২ কোটি (138 মিলিয়ন) টাকা বিভিন্ন নজরদারি পণ্য কেনা হয়েছে। আমদানি তথ্য এবং চুক্তি অনুসারে, এসব সার্ভিলেন্স পণ্য ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি), র্যা ব ও পুলিশের জন্য কেনা হয়।
এসব সার্ভিলেন্স পণ্যের মাধ্যমে এনটিএমসি “ইন্টিগ্রেটেড লফুল ইন্টারসেপশন সিস্টেম (আইএলএলএস) নামে এমন একটি কাঠামো তৈরি করেছে যার মাধ্যমে জাতীয় ইন্টারনেট ও টেলিকম ট্রাফিকে ইন্টারসেপ্ট করা যায়।
র্যাব যেসব ডিভাইস কিনেছে তার মধ্যে মোবাইল ও ভেহিকল জ্যামার, আইএমএসআই ক্যাচার, মোবাইল কমিউনিকেশন অ্যানালাইজার এবং কোনো নির্দিষ্ট ব্যাক্তির মোবাইল অ্যাক্টিভিটিজ চেক করা।
এছাড়া পুলিশের কেনার তালিকায় জিপিএস ট্র্যাকার, স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন অ্যানালাইজার, স্পিকার রিকগনিশন সিস্টেম, স্পাইওয়্যার ইনজেক্ট এবং এনক্রিপ্টটেড কমিউনিকেশন সিস্টেমে ইন্টারসেপশন করার যন্ত্র রয়েছে।
২০১৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এনটিএমসি, পুলিশ এবং র্যা বের পক্ষ থেকে নজরদারি সরঞ্জামের জন্য মোট ১,৩৮২ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে, যার মধ্যে এনটিএমসি একাই খরচ করেছে ৬৫ শতাংশেরও বেশি, যার পরিমাণ ৯০৪.৩৯ কোটি টাকা।
চুক্তিপত্রের কপি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইয়ানা টেকনোলজিস এবং এর যুক্তরাজ্যভিত্তিক সহায়ক প্রতিষ্ঠান ইয়ানা লিমিটেড এনটিএমসিকে আইএলআইএস অবকাঠামো স্থাপনে সাহায্য করেছে, যার জন্য ব্যয় হয় ৫৪৬.৭ কোটি টাকা।
২৩টি দেশের অন্তত ২০টি কোম্পানি বাংলাদেশে নজরদারি সরঞ্জাম রফতানি করেছে বলে জানা গেছে। যেমন:
ইয়ানা টেকনোলজিস (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)
ইকমট্রেড হোল্ডিংস প্রাইভেট লিমিটেড
প্যানমার্ক ইমপেক্স
অক্টাসিক
এটিইসিএস এজি
ইন্টারসেক
ডেলহেজ লিমিটেড
টিয়ার্সেক
প্যাসিটোরা লিমিটেড
টেলেডিন এফএলআইআর ডিটেকশন ইনকর্পোরেটেড
স্পাইডার ডিজিটাল ইনোভেশন
রোয়া ইন্টারন্যাশনাল
ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনটিএমসি প্রাঙ্গণের ভিতরে একটি ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার আছে যেখানে প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণে ডেটা জমা হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সার্ভারে অ্যাক্সেস নিয়ে তথ্য নিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরাধ প্রতিরোধ, অপরাধীদের নজরে রাখা, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি নিরসনে নজরদারি ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, স্বচ্ছতা ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া এই ধরনের শক্তিশালী নজরদারি ব্যবস্থার অপব্যবহার হতে পারে—যার মাধ্যমে রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন, এবং সাধারণ নাগরিকদের উপর গুপ্তচরবৃত্তি চালানো হতে পারে, যা সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত গোপনীয়তার অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
বিভি/ এসআই
মন্তব্য করুন: