• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী পাসের দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ১৬:৫৩, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী পাসের দাবিতে মানববন্ধন

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী অবিলম্বে পাসের দাবিতে মানববন্ধন করেছে তামাকবিরোধী তরুণরা। 

শনিবার (৬ ডিসেম্বর ২০২৫) সকালে বেসরকারি সংস্থা নারী মৈত্রীর আয়োজনে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এই মানবন্ধনে তামাকবিরেধী ইয়ূথ ফোরামের সদস্যরা এই দাবি তুলে ধরেন। 

মানববন্ধনে জানানো হয়, ‘তামাকের কারণে অসংক্রামক রোগ যেমন- হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, দীর্ঘমেয়াদী শ্বাসরোগ, ক্যানসার, কিডনি রোগ এবং আঘাতজনিত রোগ ক্রমেই বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টোব্যাকো এটলাস ২০২৫’ এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে  তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার ১৩৫ জন মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেন। সে হিসাবে প্রতিদিন প্রায় ৩৫৭টি প্রাণ ঝরে যাচ্ছে তামাকের কারণে।’

বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল-এফসিটিসি’তে স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশ। তামাকের মহামারী সম্পর্কিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ধুমপানমুক্ত পরিবেশ এবং তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রণোদনা নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে এখনও সর্বোত্তম মান অর্জন করতে পারেনি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত প্রস্তাবিত সংশোধনীটি পাশ হলে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতাগুলো দূর হবে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি’র সুপারিশসমূহের কার্যকর বাস্তবায়ন এবং বৈশ্বিক সর্বোৎকৃষ্ট অনুশীলনের আলোকে বাংলাদেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি বৈশ্বিক মানদন্ডে উপনীত হবে। 

সম্প্রতি তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের কিছু পদক্ষেপ নেয়া সত্ত্বেও এখনও বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের হার দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশী। প্রস্তাবিত সংশোধনীটি পাশ হলে একই সঙ্গে দেশে তামাকের ব্যবহার হ্রাস পাবে এবং এর মারাত্মক স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কমানো সম্ভব হবে। 

তামাকবিরোধী ইয়ূথরা জানান, ‘তামাক ব্যবহারজনিত কারণে প্রতিবছর অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় ৩৯.২ হাজার কোটি টাকা প্রায়। তামাকের এই সর্বগ্রাসী আগ্রাসনকে তাই আমরা তামাক মহামারী হিসেবেই গণ্য করছি। এই মহামারী রোধকল্পে প্রয়োজন শক্তিশালী আইন। তাই আমরা অবিলম্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণাণলয় কর্তৃক প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাসের দাবি জানাচ্ছি।’

ইয়ূথরা আরো জানান, ‘তামাক কোম্পানিগুলোর প্রধান টার্গেট আমাদের মত তরুণরা। কারণ তারা জানে যে, তরুণদের আকবার আকৃষ্ট করতে পারলে তারা দীর্ঘমেয়াদী ভোক্তা পাবে। এ লক্ষ্যে তারা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে। সিগারেট, ই-সিগারেটের পর এখন তাদের নতুন কৌশল হলো নিকোটিন পাউচ। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রলোভন ও ভূল তথ্য দিয়ে তারা তরুণদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি দেখা গেছে ফিলিপ মরিচের মত তামাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের কারখানা স্থাপনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই কূটকৌশল রুখে দিতে হবে এখনই। আর তার জন্য প্রয়োজন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস করা।’

মানববন্ধনে ইয়ূথরা বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের ৬টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সেগুলো হলো—পাবলিক প্লেস এবং গণপরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বাতিল করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা (CSR) কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, তামাকপণ্যের খুচরা ও মোড়কবিহীন বিক্রয় বন্ধ করা, বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, সিগারেট ও অন্যান্য তামাকপণ্যের প্যাকেটের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি করা এবং ই-সিগারেট বা ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশু-কিশোর ও তরুণদের রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। 

মানববন্ধন শেষে ইয়ূথরা বিশ্বসাহিত্যকেন্দ্রে নারী মৈত্রীর আয়োজনে এক আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করে। সেখানে এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।

বিভি/এআই

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2