জেনে নিন কোন আম কখন খাবেন, কখন আসবে বাজারে
চলছে বাংলা বছরের দ্বিতীয় মাস জ্যৈষ্ঠ। এই মাসকে মধুমাসও বলা চলে। এই মাসেই বাজারে আসে রসালো সব গ্রীষ্মকালীন মিষ্টি ফল। মধুমাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফল হচ্ছে আম।
বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর ও রংপুর আমের জন্য বিখ্যাত। ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ফজলি, হিমসাগর, মোহনভোগ, গোলাপ খাস, সূর্যপুরি, মিসরি ভোগ, আশ্বিনাসহ প্রায় কয়েক শ' জাতের আম উৎপাদন হয় এসব অঞ্চলে। এখন বৃহত্তর সিলেট, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগাম এবং বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোতেও আম্রপালি জাতের আম চাষ হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেওয়া তথ্যমতে, কয়েক বছর ধরে আরও কিছু জাতের আমের প্রতি আগ্রহী হয়েছেন চাষিরা। এর মধ্যে রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা, ঠাকুরগাঁওয়ের বান্দিগুড়ি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গৌরমতি, বারি উদ্ভাবিত বারি-৪, বাউ উদ্ভাবিত বাউ-১৪ (ব্যানানা ম্যাংগো), রাংগুয়াই (বার্মা), পলিমার (ভারত), নান ডকমাই (থাই) অন্যতম।
এ মাসের মাঝামাঝি থেকেই বাজারে আসছে রাজশাহীর আম। ১৫ মে আসবে গুটি আম। রাজশাহী জেলার 'আম ক্যালেন্ডার' অনুযায়ী উন্নত জাতের আমগুলোর মধ্যে গোপালভোগ ২০ মে, লক্ষণভোগ বা লখনা ও রাণীপছন্দ ২৫ মে এবং হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি ২৮ মে থেকে গাছ থেকে নামানোর দিন নির্ধারণ করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন।
এ ছাড়া ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে ফজলি ও আম্রপালি এবং ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪ নামানো যাবে। জুনে ল্যাংড়ার পর মৌসুমের শেষ দিকে আসবে আরও নানা জাতের আম। এছাড়া রঙিন আম খ্যাত বারি আম-১৪ নামবে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তায়।
আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্থানীয় আমচাষীরা জানিয়েছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে বাজারে আসতে শুরু করবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, এবার প্রথমে নামবে গুটি আম। সেটি আরও ১৫ দিন পর বাজারে আসবে। আমচাষীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আম গাছে পাকলে তারপর নামিয়ে বাজারে পাঠানো হবে। অপরিপক্ক আম বাজারে পাঠালে ভোক্তা অধিকার আইনে মামলা এবং জরিমানা হবে।
নাটোরে ১০ মে গাছ থেকে নিরাপদ আম ও লিচু সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রাসায়নিক পদার্থের অপব্যবহার রোধ করে পরিপক্ক ফল প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পুরো মৌসুমে গাছ থেকে বিভিন্ন জাতের আম ও লিচু সংগ্রহের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নাটোর জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১০ মে থেকে গুটি আম এবং মোজাফ্ফর জাতের লিচু সংগ্রহ করা শুরু হয়েছে। এছাড়া গোপালভোগ ২০ মে, ল্যাংড়া ৫ জুন, ক্ষিরসাপাত ২৮ মে, লক্ষণভোগ ২৫ মে, ফজলি ২০ জুন, আম্রপালি ২০ জুন, মল্লিকা ৩০ জুন, আশ্বিনা ১৫ জুলাই, রানীপছন্দ ২৫ মে, মোহনভোগ ১৫ জুন, বারিআম-৪ ১০ জুলাই, হাঁড়িভাঙ্গা ২০ জুন এবং গৌরমতি আম ১৫ আগস্ট থেকে পাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
নওগাঁ জেলা প্রশাসনের ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী, ১০ মে থেকে গুটি আম এবং মোজাফ্ফর জাতের লিচু সংগ্রহ করা শুরু হয়েছে। এছাড়া গোপালভোগ ২০ মে, ল্যাংড়া ৫ জুন, ক্ষিরসাপাত ২৮ মে, লক্ষণভোগ ২৫ মে, ফজলি ২০ জুন, আম্রপালি ২০ জুন, মল্লিকা ৩০ জুন, আশ্বিনা ১৫ জুলাই, রানীপছন্দ ২৫ মে, মোহনভোগ ১৫ জুন, বারিআম-৪ ১০ জুলাই, হাঁড়িভাঙ্গা ২০ জুন এবং গৌরমতি আম ১৫ আগস্ট থেকে পাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বাজারে উঠতে শুরু করেছে সাতক্ষীরার আম। তবে প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়ের কারণে প্রথমে গোপালভোগ ও গোবিন্দভোগ জাতের আম পাড়ার অনুমতি পেয়েছেন চাষীরা। পর্যায়ক্রমে পাড়া হবে হিমসাগর, আম্রপালি ও ল্যাংড়া। দেশের অন্য জেলার তুলনায় সাতক্ষীরার আম আগে ভাগেই পাকে।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নূরুল ইসলাম জানান, এ বছর এখনো সাতক্ষীরায় ঝড়-বর্ষা হয়নি। তাপদাহে আম কিছুদিন আগেই পেকেছে। তাই পাড়ার তারিখও এগিয়ে আনা হয়েছে।
বিভি/এসডি
মন্তব্য করুন: