প্রবাসীরা যেভাবে এনআইডি’র জন্য আবেদন করবেন
প্রবাসী বাংলাদেশিরা জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সেবা পেতে (ভোটার হওয়ার জন্য) যেকোনো দেশ থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। করোনা মহামারীর কারণে সশরীরে উপস্থিত হওয়ার কার্যক্রম আটকে থাকলেও অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানিয়েছে।
এনআইডি উইংয়ের আইডিইএ প্রজেক্টের অফিসার ইনচার্জ (কমিউনিকেশন) স্কোয়াড্রন লিডার কাজী আশিকুজ্জামান বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, যেকোনো দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। পরবর্তীতে তারা দেশে আসলে বা করোনা মহামারী স্বাভাবিক হলে আমাদের প্রতিনিধি দল সংশ্লিষ্ট দেশে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সেবা দিয়ে আসবেন।
অনলাইনে আবেদন করবেন যেভাবে
https://sevices.nidw.gov.bd সাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করার সময় ভেরিফায়েড করার জন্য বাংলাদেশে থাকা পরিচিতজনের (আত্মীয়-স্বজন) মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে। কারণ আবেদন করতে গেলে ওই নম্বরে একটি ওপিটি নম্বর যাবে। বাংলাদেশি ওই ব্যক্তির মোবাইল থেকে ওটিপি নম্বর নিয়ে তা কনফার্ম করতে হবে।
যেসব দলিলাদি লাগবে
প্রবাসীদের ভোটার হওয়ার জন্য মোট ছয়টি ডকুমেন্ট দিতে হবে। সেগুলো হলো: পাসপোর্টের ফটোকপি, বিদেশি পাসপোর্টধারী হলে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদের ফটোকপি বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে শনাক্তকারী একজন প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকের পাসপোর্টের কপি, বাংলাদেশে বসবাসকারী রক্তের সম্পর্কের কোনো আত্মীয়ের নাম, মোবাইল নম্বর, এনআইডি নম্বরসহ অঙ্গীকারনামা ও বাংলাদেশে কোথাও ভোটার হননি মর্মে লিখিত অঙ্গীকারনামা এবং সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের প্রত্যয়নপত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা আবেদন করেছেন তাদের তথ্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসে পাঠানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের টিম বিদেশে গিয়ে ভোটারের ছবি, দশ আঙুলের ছাপ, চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবিসহ আনুষঙ্গিক কাজ করার কথা ছিলো যা করোনার কারণে বন্ধ আছে। এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় শুরু হবে।
জানা গেছে, ৪০টি দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এনআইডি সেবা দিতে চায় কমিশন। আর প্রবাসীদের এনআইডি সেবার ফি নির্ধারণ করা যায় কি না সেটিও যাচাই বাছাই করছে ইসি।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সাল থেকে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও নাগরিকদের এনআইডি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর দুই নির্বাচন কমিশনার প্রবাসীদের ভোটার করার ও ভোট নেওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বিদেশ সফরও করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে ভোটার তালিকা আইন সংশোধন করা হয়, যার লক্ষ্য ছিলো বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার তালিকায় এনে ভোট প্রদানের সুযোগ করে দেওয়া। কিন্তু তা না হওয়ায় এবং দেশে না ফিরে জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের নানান সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যদিও কমিশন মাঠপর্যায়ে প্রবাসীদের ভোটার করা বা এনআইডি সেবা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়ার জন্য বারবার নির্দেশনা দিয়েছে। অবশেষে ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর থেকে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা শুরু হয়।
২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও এনআইডি সংক্রান্ত সব সেবা ফ্রি দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে এনআইডি সংশোধনসহ এনআইডি নষ্ট হলে পুনরায় তুলতে বা হারানো এনআইডি’র সেবা নিতে হলে নাগরিকদের ফি দিতে হচ্ছে। ইসি’র সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১১ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার ৬৬৯ জন ভোটার রয়েছেন।
বিভি/এইচকে/এয়াইএইচ
মন্তব্য করুন: