• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

শহর উৎসবে মাতোয়ারা, ছিটেফোঁটাও পেলো না ওরা

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ১৪ এপ্রিল ২০২২

আপডেট: ২১:৫৬, ১৪ এপ্রিল ২০২২

ফন্ট সাইজ
শহর উৎসবে মাতোয়ারা, ছিটেফোঁটাও পেলো না ওরা

যান্ত্রিক শহরের জীবন এখন বড্ড ব্যস্ততায় কাটে। অবসরের ফুরসত একেবারেই মেলে না। তবে বিশেষ বিশেষ দিনে রং বদলায় প্রাণের শহর ঢাকা। রঙিন হয়ে ওঠে মানুষের মুখ। আনন্দ-উল্লাস আর হৈ-হুল্লোড়ে পেরিয়ে যায় সেসব দিনগুলো। যার মধ্যে অন্যতম উৎসব পহেলা বৈশাখ। যা আজ দিনভর পালিত হলো।

কিন্তু এই আনন্দ-হর্ষের পেছনে রয়েছে বিষাদের এক করুণ রূপ। শহুরে বিত্তবানদের উল্লাসের আওয়াজে চাপা পড়ে যায় কিছু কান্না কিছু আক্ষেপ। নতুন বছরে নতুন সূর্য উঠেছে। 
রমনা বটমূলে বছরকে স্বাগত জানাতে হাজারো মানুষ মেতেছিল উল্লাসে। কিন্তু সে উল্লাসের ছোঁয়া লাগেনি ছিন্নমূল মানুষের জীবনে।

মো. শামীম, বছরখানেক ধরে থাকেন রাজধানীর কমলাপুরে। সময় কাটানোর জন্য বন্ধুর সাথে খেলছেন তিন গুটি। তবে আজ যে উৎসব, সে দিকটি তার ঠিকই মনে আছে। বৈশাখের এই দিনে তার খারাপ লাগা আর ভালো লাগার কথা বলেছেন বাংলা ভিশনের সাথে। 

চারপাশে মানুষ যখন নতুন জামা-কাপড় পরে ঘুরছে। ওদের মতো করে নতুন জামা পরে ঘুরতে তারও ইচ্ছে করে বলে জানান ১২ বছরের শামীম। সমাজে শামীমের মতো এমন অসংখ্য ছিন্নমূল মানুষের চাপা আক্ষেপেরে কথা- কতটুকু পৌঁছায় সমাজ, রাষ্ট্র, বা বৃত্তবানদের কাছে?

শামিমের মতো আরেকজন বিথী আক্তার। রমনার মূল অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মাত্র কয়েক মিনিটের দূরত্বে রাস্তার পাশে ফুটপাতে বসবাস। স্বামী-সন্তান নিয়ে কয়েক বছর থেকে এখানে বাস করছেন। বলছেন, যেখানে দু’বেলা দু’মুঠো আহার জোটে না, সেখানে এই আনন্দ তেমন কিছুই না। 

তার মতো ফুটপাতে দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে বসবাস করছেন মো. সোবহান। স্ত্রীর মৃত্যুর পর ৭ বছরের সন্তানকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস। এখানে বসেই শুধু দেখে যান প্রত্যেকটা বৈশাখে সবার আনন্দ আর উল্লাস। এইসব উৎসব আমেজ নিয়ে রয়েছে তারও আক্ষেপ।

পহেলা বৈশাখে রাজধানীর রাজপথে ছিল মিছিল-স্লোগান। কর্মব্যস্ত শহরের প্রাণকেন্দ্রে উৎসবের আমেজ। কিন্তু এই আমেজ ছিটেফোটাঁও পায়নি খেটে খাওয়া মানুষগুলো। যেখানে দু’বেলা দু’মুঠো আহারের সন্ধান করতেই জীবনের সময় পার- সেখানে এইসব আনন্দ তাদের কাছে বিলাসিতা ছাড়া কিছুই না।

তালপাতার অনুসঙ্গ নিয়ে শহরবাসীর কাছে হাজির হওয়া আলতাপ মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, গ্রাম্য জীবনে পহেলা বৈশাখের যে আমেজ তার কিছুই খুঁজে পায় না শহরের এইসব উৎসব। শুধু দেখি রঙিন জামা-কাপড় পরে হাত ধরে হাঁটছেন বা রিকশা করে ঘুরছেন। কেউ কেউ বসেছেন পার্কে। 

তবে যেভাবেই পালিত হোক না কেন, নতুন বছর পারিবারিক বন্ধনকে করবে আরও সুদৃঢ় করবে, মানুষে মানুষে সম্প্রীতির ন্যায্যতাকে দিবে স্নিগ্ধতার রূপ। পাশাপাশি এইসব ছিন্নমূল মানুষের প্রতি মানুষ সহানুভূতিশীল হবে- এটাই হোক পহেলা বৈশাখীর অঙ্গীকার।

বিভি/এএইচ/এজেড

মন্তব্য করুন: