• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

আজ বিদ্রোহী কবির জন্মদিন

প্রকাশিত: ১০:১৫, ২৫ মে ২০২২

ফন্ট সাইজ
আজ বিদ্রোহী কবির জন্মদিন

আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ, বুধবার। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী। সারা দেশে নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্‌যাপিত হচ্ছে ‘নজরুলজয়ন্তী’।

বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মেছিলেন তিনি। তাঁর ডাক নাম 'দুখু মিয়া'। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন। শৈশব থেকেই দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে বেড়ে ওঠেন তিনি। আর সেই পথপরিক্রমায় তিনি হয়ে ওঠেন অসাম্প্রদায়িক ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী।

কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন নিপীড়িত মানবতার কবি। সারা জীবন তিনি সমাজের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে কলম ধরেছেন। তিনি নির্ভীক চিত্তে কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা ও কূপমণ্ডূকতার বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষুরধার রচনা অব্যাহত রেখেছেন। থেকেছেন আপসহীন। লোভ–খ্যাতির মোহের কাছে মাথা নত করেননি। কারা নির্যাতনেও বিচ্যুত হননি লালিত আদর্শ থেকে। অন্যদিকে তিনি মানুষের হৃদয়ের কোমল অনুভূতির প্রতিও সমান আবেগে সাড়া দিয়েছেন। অজস্র গানে তিনি সমৃদ্ধ করেছেন বাংলার সংগীত ভুবন। প্রবর্তন করেছিলেন বাংলা গজল।

কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ছিল ঘটনাবহুল। অভাব–অনটন ছিল শৈশব থেকেই তাঁর নিত্যসঙ্গী। শৈশব থেকেই লেটো দলের বাদক, রুটির দোকানের শ্রমিক এভাবেই পেরিয়ে গেছে তাঁর শৈশব–কৈশোর। পরে কাজ করেছেন সৈনিক হিসেবে। সাংবাদিকতা করেছেন। কাজ করছেন এইচএমভি ও কলকাতা বেতারে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে পথে নেমেছেন। পাশাপাশি সাহিত্যসাধনা তো ছিলই। শাসকের কোপানলে পড়েছেন, কারারুদ্ধ হয়েছেন কিন্তু নত হয়নি নজরুলের উচ্চ শির।

কাজী নজরুল ইসলাম সাহিত্যের সব শাখায় বিচরণ করলেও তাঁর পরিচিতি মূলত কবি হিসেবে। ১৯২২ সালে তাঁর বিখ্যাত কবিতা-সংকলন 'অগ্নিবীণা' প্রকাশিত হয়, যা বাংলা কবিতায় এক নতুন ধারার সৃষ্টি করে। তাঁর রচিত 'চল, চল, চল' বাংলাদেশের রণসংগীত। প্রায় ৩ হাজার গান রচনা ও সুর করেছেন তিনি। ইসলামী সংগীত বা গজল রচনা করে তিনি নতুন এক ধারার সূচনা করেন। একই সঙ্গে সমানতালে রচনা করেন শ্যামাসংগীত। মধ্যবয়সে তিনি পিকস ডিজিজে আক্রান্ত হন। এর ফলে আমৃত্যু তাঁকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। এক সময় তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। ১৯৭২ সালের ২৪ মে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। এ সময় বঙ্গবন্ধু তাঁকে জাতীয় কবির মর্যাদা দেন। ১৯৭৬ সালে কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব এবং 'একুশে পদক' দেওয়া হয়। একই বছরের ২৯ আগস্ট মারা যান তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
নজরুলের প্রেম, বিয়ে বিচ্ছেদ, গ্রেপ্তার, সমাবেশ এবং কাব্য ও সংস্কৃতি চর্চাসহ বহু ঘটনার নীরব সাক্ষী কুমিল্লা শহর। সেই হিসেবে এবার কুমিল্লায় কবির জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান করা এবং প্রতিপাদ্য 'বিদ্রোহীর শতবর্ষ' বিশেষ তাৎপর্যময়।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী ও তাঁর কালজয়ী কবিতা ‘বিদ্রোহী’র শতবর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কবির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে বলেন, সাম্য, মানবতা, প্রেম ও প্রকৃতির কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবন ও সৃজনশীল কর্ম জাতির অন্তহীন অনুপ্রেরণার উৎস। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে কবির গান ও কবিতা মুক্তিকামী মানুষকে অনিঃশেষ প্রেরণা জুগিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান স্বাতন্ত্র্য মহিমায় সমুজ্জ্বল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন কবির প্রতি একান্ত অনুরক্ত। স্বাধীনতা–পরবর্তী পর্যায়ে তাঁরই ঐকান্তিক আগ্রহে কবিকে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে এনে জাতীয় কবির সম্মানে অধিষ্ঠিত করা হয়। নজরুল যে অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন, তারই প্রতিফলন আমরা পাই জাতির পিতার সংগ্রাম ও কর্মে।

বিভি/কেএস

মন্তব্য করুন: