• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়বে

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ৩০ মে ২০২৩

ফন্ট সাইজ
সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়বে

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে দু'বছর ধরে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ায় সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে নতুন পে-স্কেলের দাবি উঠে। আগামী অর্থবছরে নির্ধারিত ৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের বাইরেও অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে অর্থবিভাগ।

মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করেই সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা থাকছে আসন্ন অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে। তবে কোন প্রক্রিয়ায়, কী হারে বেতন বাড়বে, তা নির্ধারণের কাজ শুরু হবে জুনে বাজেট ঘোষণার পর।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে দু'বছর ধরে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ায় সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে নতুন পে-স্কেলের দাবি উঠে। এর প্রেক্ষাপটে আগামী বাজেটে তাদের জন্য মহার্ঘ্যভাতা ঘোষণার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় ছিলেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।

গত ১৬ মে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহার্ঘ্যভাতা দেওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে বলেন, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধি করা হবে।

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বাজেট ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাওয়ার পর মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বেতন বাড়ানোর উদ্যোগ নেবেন তারা। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে গেজেট জারি হতে পারে।

এবারও ১ জুলাই সরকারি চাকরিজীবীরা ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পাবেন এমনটিই জানিয়েছেন অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা। তিনি জানান, ‘পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই মাস সময় লাগতে পারে। তবে যখনই বেতন বৃদ্ধির গেজেট জারি হোক না কেন, তা জুলাই মাস থেকেই কার্যকর হবে।’

অর্থ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আওতায় সরকারি চাকরিজীবীর মোট পদ সংখ্যা ১২.৪৬ লাখ। ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টসহ তাদের বেতন-ভাতা বাবদ আগামী অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ থাকছে ৭৭ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু মোট পদের মধ্যে ২.৭০ লাখ পদ শূন্য রয়েছে। ফলে বেতন-ভাতায় বরাদ্দের পুরো অর্থ আগামী অর্থবছর ব্যয় হবে না। সমন্বয়ের ফলে সরকারি চাকরিজীবীদের যে পরিমাণ বেতন বাড়বে, তা এই বরাদ্দ থেকেই দেওয়া সম্ভব হবে। এজন্য বাড়তি বরাদ্দের দরকার হবে না।  

চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতায় বরাদ্দ ছিল ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এখাতে বরাদ্দ ১০৯৩ কোটি টাকা কমানো হয়েছে।

২০১৫ সালে ঘোষিত পে স্কেলে বলা আছে, সরকারি চাকরিজীবীদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্টের হার হবে ৫ শতাংশ। তবে মূল্যস্ফীতির হার ৫ শতাংশের এর বেশি হলে সে অনুযায়ী ইনক্রিমেন্টের হারও বাড়বে।

বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে ইনক্রিমেন্টের হার নির্ধারণ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও অর্থবিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন দু'জনই তাদেরকে বাজেট ঘোষণার পর এ বিষয়ে কাজ শুরুর পরামর্শ দিয়েছেন।

তাছাড়া, ২০তম গ্রেড থেকে ১ম গ্রেড পর্যন্ত সবার জন্য একই হারে বেতন বাড়বে, নাকি প্রধানমন্ত্রীর ভিন্ন কোন ভাবনা রয়েছে সে বিষয়েও নির্দেশনা চাইবে অর্থ মন্ত্রণালয়। তার ভিত্তিতেই বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হবে।    

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, গত এপ্রিলে মূল্যস্ফীতির হার ৯.২৪ শতাংশ। আর গত মে-এপ্রিল ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতির হার ৮.৬৪ শতাংশ। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আগে সরকারি হিসাবে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৫ শতাংশ-৬ শতাংশ এর মধ্যে থাকায় তফসিল অনুযায়ী ইনক্রিমেন্টের ব্যবস্থা করছে অর্থ বিভাগ। এখন এমন নিয়ম করা হবে, যাতে তফসিল ও বিধিমালার মধ্যে যেটি বেশি হবে, সরকারি চাকরিজীবীরা সে অনুযায়ী ইনক্রিমেন্ট পাবেন।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: