• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

পরিবেশ দিবসে ১৭০০ স্বেচ্ছাসেবী লাগালেন ৫ সহস্রাধিক গাছ

প্রকাশিত: ২৩:১৫, ৫ জুন ২০২৫

ফন্ট সাইজ
পরিবেশ দিবসে ১৭০০ স্বেচ্ছাসেবী লাগালেন ৫ সহস্রাধিক গাছ

বিশ্ব পরিবেশ দিবসে সারাদেশের ৬৪ জেলায় একযোগে ৬৪টি পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রায় ১৭০০ স্বেচ্ছাসেবী ৫ হাজারের বেশি গাছ লাগিয়ে ভিন্নরকম এক কর্মসূচি পালন করেছে। শুধু তাই নয়, একইসঙ্গে প্রতিটি জেলায় প্লাস্টিকবিরোধী মানববন্ধন ও প্লাস্টিক ব্যবহার কমাতে জনসচেতনতা তৈরিতে লিফলেট বিতরণও করেন তারা। বৃহৎ এই আয়োজনকে ঘিরে সারাদেশে পরিবেশপ্রেমী সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা গেছে, যা বাংলাদেশের পরিবেশ আন্দোলনের ইতিহাসে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা। 

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দেশের অন্যতম শীর্ষ তারুণ্যভিত্তিক পরিবেশবাদী সংগঠন ‘মিশন গ্রিন বাংলাদেশ’ এর আয়োজনে সারাদেশে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে জাতীয় পর্যায়ে জাতীয় সহ-আয়োজক ছিল বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ (সিথ্রিইআর), ইয়্যুথ ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশ, তরু পল্লব, স্বপ্নপূরী কল্যাণ সংস্থা ও ছাওয়াব ফাউন্ডেশন। এছাড়া স্থানীয়ভাবে যুক্ত ছিল দেশের বিভিন্ন জেলার ৫৬টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

"প্লাস্টিক দূষণ কমাও" প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে স্কুল, মসজিদ, মন্দির, ঘরবাড়ি ও রাস্তার ধারে বৃক্ষরোপণ করা হয়, পাশাপাশি প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সারা দেশের ১৭ শতাধিক ভলান্টিয়ারের অংশগ্রহণে ৬৪ জেলাতে ৫ সহস্রাধিক গাছ রোপণ করা হয়।

সকালে রাজধানীর উত্তরা জনপথ মোড়ে মানববন্ধন, বৃক্ষ রোপন ও বিতরণ এবং জনসংযোগের মাধ্যমে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। পরে উত্তরা স্টুডেন্ট সোসাইটির সহযোগিতায় উত্তরা ১৩ নম্বরের সেক্টরের লেকপাড় ও সড়কদ্বীপে বৃক্ষরোপন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মিশন গ্রিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি বলেন, “এই কর্মসূচি কেবল একটি দিবস উদযাপন নয়—এটি একটি স্থায়ী পরিবর্তনের সূচনা। আমরা চাই, বাংলাদেশে প্রতিটি জেলা ও উপজেলা হয়ে উঠুক একটি করে সবুজ বিপ্লবের কেন্দ্র। আমরা চাই, দেশের প্রতিটি মানুষ পরিবেশ রক্ষায় নিজেকে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলুক। ৬৪ জেলার এই আয়োজনটি আমাদের বছরব্যাপী বাংলাদেশের ৪৯৫টি থানায় বৃক্ষরোপণ ও প্লাস্টিক দূষণবিরোধী কার্যক্রমের প্রথম ধাপ। সারা বছরে আমরা সারাদেশের প্রতি অঞ্চলে এই উদ্যোগটি ছড়িয়ে দিতে চাই।”

শিগগিরই সবগুলো উপজেলায় একই কর্মসূচি আয়োজনের পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)-এর পলিসি ও ক্যাম্পেইন কো-অর্ডিনেটর বারীশ হাসান চৌধুরী বলেন, "পরিবেশগত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আমাদের স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা ও আইনি সহায়তা একসাথে চালিয়ে যেতে হবে। পরিবেশগত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হয়, আর এই কর্মসূচি সেই কাজটাই করেছে। দেশের ৬৪ জেলায় একযোগে প্লাস্টিক দূষণ বিরোধী বার্তা পৌঁছে দিয়ে আমরা দেখিয়েছি, নাগরিক উদ্যোগ কতোটা শক্তিশালী হতে পারে।"

ছাওয়াব ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মু. বোরহান উদ্দিন বলেন, "জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে আমরা প্রতিনিয়ত নানান দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছি। প্লাস্টিক দূষণ সেইসব দুর্যোগকে আরও ত্বরান্বিত করছে। বিশ্বকে বাঁচাতে হলে আমাদের ব্যাপক হারে গাছ লাগাতে হবে এবং প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।"

এদিকে ফেনী শহীদ মিনার এলাকায় বৃক্ষ বিতরণ ও প্লাস্টিকবিরোধী জনসংযোগ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ণ কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘প্লাস্টিক মানুষের শরীরে ক্যান্সারের সৃষ্টি করছে।  ফেনীসহ সারাদেশে প্লাস্টিক বর্জ্য পোড়ানোর কারণে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর ক্যামিকেল মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করে ফুসফুস নষ্ট করে দিচ্ছে। প্লাস্টিকের কারণে আমাদের নদীখালগুলো প্রাণ হারাচ্ছে। কৃষিজমি উর্বরতা হারিয়ে আমরা খাদ্য সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছি। সবমিলিয়ে বলতে হয়,  আমাদেরকে বাঁচতে হলে প্লাস্টিক প্রতিরোধ করতেই হবে। সারাদেশে প্লাস্টিকবিরোধী গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’

এ সময় তিনি পরিবেশ বিপর্যয় থেকে বাঁচতে সবাইকে ব্যাপকহার বৃক্ষ রোপণেরও আহ্বান জানান তিনি।

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন: