সুন্দরবনে বংশ বৃদ্ধি করছে মহাবিপন্ন বাটাগুর বাসকা জাতের কচ্ছপ
মহাবিপন্ন প্রজাতির বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের বংশবৃদ্ধি ও প্রকৃতিতে অবমুক্তি বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম চালিয়েছে বন বিভাগের বিশেষজ্ঞ টিম। ৪ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ৪ দিন এ গবেষণা কার্যক্রম চালানো হয়। সুন্দরবন খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, খুলনার মৎস্য বিশেষজ্ঞ, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন এবং অস্ট্রিয়ার জু ভিয়েনা এর গবেষকগন এ কাজে অংশ নেন।
এসময় সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন পুকুরে থাকা কচ্ছপ গুলো তুলে পরীক্ষা-নিরিক্ষা করা হয়। পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রানী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, পৃথিবীতে যখন বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপ বিপন্ন হয়ে পড়ে তখন ২০১৪ সালে জমিদার বাড়ী থেকে খুঁজে বের করে দুইটি কুমির দিয়ে সুন্দরবনের করমজলে এই প্রজাতির প্রজনন কেন্দ্র চালু করা হয়। এরপর প্রজন্ম বৃদ্ধি করে প্রায় ৫ শতাধিক বাচ্চা হয় ওই কুমির থেকে। সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে থাকা বাটাগুর বাসকা কচ্ছপকে সংরক্ষণের জন্য বনের পুকুরে ছাড়া হচ্ছে এবং কিছু বাচ্চা প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হলো মহাবিপন্ন এই প্রজাতির কচ্ছপগুলো যাতে বিলুপ্ত না হয়ে যায়। এ বন কর্মকর্তা জানান, ২০২২ সালে প্রজনন কেন্দ্র থেকে ৩৭টি, ২০২৩ সালে ৩৩টি, ২০২৪ সালে ৪১টি ও ২০২৫ সালে ২৩টি, মোট ১৩৪টি কুমির ছাড়া হয় ১৬টি পুকুরে। তিনি দাবি করেন, সবকটি কুমির সুস্থ ও ভালো রয়েছে। সময়মতো এসব কুমির তাদের প্রজনন বৃদ্ধি করবে।
বাটাগুর বাসকা, যা একসময় সুন্দরবনে প্রচুর দেখা যেত, বর্তমানে পৃথিবীর বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপের মধ্যে অন্যতম। করমজল কেন্দ্রে এদের প্রজননের মাধ্যমে সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। প্রজনন কেন্দ্রের পুকুরে প্রথমে বাচ্চাগুলোকে বড় করা হয়। পরে সেগুলোকে ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক পরিবেশে ছাড়া হয়। এর আগে কিছু কচ্ছপকে সুন্দরবনের খাল ও নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সুন্দরবনের করমজল কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্রের সফলতায় বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিভি/এসজি




মন্তব্য করুন: