১৬ কোটি বছর আগে উড়তো টিকটিকি, জানালেন বিজ্ঞানীরা
								ছবি: শাস্তা মারেরো/ রয়টার্স
১৬ কোটি বছর আগে উড়তে পারতো এমন একটি টিকটিকির সন্ধান পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এটি ছিল জুরাসিক যুগের (ডাইনোসরদের যুগ) সবচেয়ে বড় উড়ন্ত ডাইনোসর। টেরোসররা ক্রিটেসিয়াস যুগের প্রাণী। সে তখন আকাশে পাখিদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারতো।
গবেষণা তথ্যে জানানো হয়,  সম্প্রতি স্কটল্যান্ডের আইল অফ স্কাইয়ের সমুদ্র সৈকতে একটি উড়ন্ত ডাইনোসরের ৮ ফুটের একটি জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়েছে। যার নাম ছিলো জার্ক স্কিনি (Dearc sgianthanach)। জার্ক স্কিনি জুরাসিক বা ডাইনোসরদের যুগের একটি টেরোসর। এর সময়কাল ২০.১৩ কোটি বছর থেকে ১৪.৫০ কোটি বছর আগের। Dearc sgianthanach এর দুটি অর্থ আছে। প্রথম ‘ডানাযুক্ত সরীসৃপ’। দ্বিতীয় টিকটিকি (Skye থেকে সরীসৃপ) আকাশ থেকে এসেছে।
সম্প্রতি কারেন্ট বায়োলজি জার্নালে আবিষ্কারের এই গবেষণাতথ্যটি প্রকাশিত হয়েছে।
এ বিষয়ে এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তন ও প্যালিওন্টোলজির অধ্যাপক স্টিভ ব্রুসেট জানিয়েছেন, এটি ছিল জুরাসিক যুগের সবচেয়ে বড় উড়ন্ত ডাইনোসর। টেরোসররা ক্রিটেসিয়াস যুগের প্রাণী। সে তখন আকাশে পাখিদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারত। 
তিনি দাবি করেন, Dearc sgianthanach ডাইনোসর ছিল না। এটি আসলে প্রথম মেরুদণ্ডী যে উড়ে যাওয়ার ক্ষমতা অর্জন করেছিল। এটি ট্রায়াসিক যুগের অন্তর্গত। প্রাচীনতম টেরোসরের রেকর্ডটি ২৩ মিলিয়ন বছর পুরানো।
সবচেয়ে বড় টেরোসরের রেকর্ড যে গড়েছিল তার নাম ছিল কোয়েটজালকোটলাস (Quetzalcoatlus)। এর ডানার দৈর্ঘ্য ছিল ৩৬ ফুট। এটি ছোটো প্লেনের মতো দেখতে ছিল। টেরোসরদের উড়তে পারত কারণ তাদের ওজন কম ছিল বলেও জানান বিজ্ঞানিরা।
এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গবেষক এবং প্যালিওন্টোলজির ডক্টরাল প্রার্থী নাটালিয়া জাগিলস্কা বলেন, ওড়ার জন্য হাড়গুলির ভিতর ফাঁপা হওয়া প্রয়োজন। হাড়ের দেওয়াল পাতলা হওয়া বাঞ্চনীয়। টেরোসরদের এই সমস্ত বৈশিষ্ট্য ছিল। তাদের জীবাশ্ম বেশিদিন সংরক্ষণের উপযুক্ত ছিল না। কারণ হাড় দ্রুত গলে যায়। কিন্তু আমরা একটি জীবাশ্ম খুঁজে পেয়েছি।
নাটালিয়া আরও বলেন, এই জীবাশ্মটি প্রায় ১৬০ মিলিয়ন বছরের পুরোনো। এর হাড়ের দিকে দেখলে মনে হয়, এই টেরোসরকে সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হওয়ার আগেই তাকে হত্যা করা হয়েছিল। কম্পিউটেড টমোগ্রাফি সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে যখন এটি সনাক্ত করা হয়, তখন দেখা যায় যে ডিয়ারক সাইনথানাচের চোখের অংশটি অনেক বড়। তার দৃষ্টি ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। 
নাটালিয়া জানান, স্কটল্যান্ডের এলাকা খুবই আর্দ্র। এই সমুদ্রের জলও উষ্ণ। সে কারণেই টেরোসররা নিশ্চয়ই প্রাচীনকালে মাছ এবং স্কুইড খেতে এখানে এসেছে। তীক্ষ্ণ দাঁত ও ধারালো নখের সাহায্যে তারা খাবার জোগাড় করতে পারত।
জীবাশ্মটি এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিজ্ঞানের প্রাক্তন ডক্টরেট ছাত্র এমিলিয়া পেনি আবিষ্কার করেন। এটি স্কটল্যান্ডের জাতীয় জাদুঘরে রাখা হবে বলে জানা গেছে।

বিভি/কেএস
						


							
							
 
										
							
							
							
							
							
							
							
							
							
							
											
											
											
											
মন্তব্য করুন: