• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

মিশরের নীলনদ ও সাহারা মরুভূমি ভিত্তিক ভূপ্রকৃতি

নুসাইবা তাসনিম

প্রকাশিত: ১৩:২৫, ৮ আগস্ট ২০২২

আপডেট: ১৩:২৮, ৮ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
মিশরের নীলনদ ও সাহারা মরুভূমি ভিত্তিক ভূপ্রকৃতি

 উত্তর আফ্রিকায় প্রবাহিত এক অস্বাভাবিক নদ হল নীল নদ

 উত্তর আফ্রিকায় প্রবাহিত এক অস্বাভাবিক নদ হল নীল নদ। এটি ৪১৫৭ মাইল দীর্ঘ ও পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী। নামটি এসেছে গ্রিক শব্দ নীলোস থেকে। গ্রিকরা কোথা থেকে পেল শব্দটা তা অজানা, কারণ এর তীরে যারা বাস করত তারা এটাকে শুধু “নদী” বলেই জানত। নীল নদের সবচেয়ে উত্তরে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন দুটি সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, আর প্রায় ছয় হাজার বছর ধরে এর উভয় কুল বরাবর গ্রামগুলোতে জটিল সমাজব্যবস্থা গড়ে ওঠে। এ সময়টাতে কেউই জানত না এই নদের উৎপত্তি কোথায় হয়েছে। এর জলধারা দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রবাহিত। 

 

তবে প্রাচীন ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের কোনো মানুষই সর্ব দক্ষিণে এর উৎসস্থল আবিষ্কার করতে পারেনি। প্রাচীন জাতিসমূহের কাছে নীলের উৎস সন্ধান ছিল চাঁদের অপরপৃষ্ঠ আবিষ্কারের মতোই কৌতূহলোদ্দীপক আর দুঃসাধ্য। শুধু ১৯শ শতকের দ্বিতীয়ার্ধেই ইউরোপীয় আর আমেরিকান অভিযাত্রীরা নীল নদের গতিপথ অনুসরণ করে তার উৎসমূলে পৌঁছতে সমর্থ হয়। ১৮৫৭ সালে জন হেনিং নামে এক ইংরেজ এক বিশাল হ্রদ ভিক্টোরিয়াতে পৌঁছে ব্রিটেনের তৎকালীন রানির নামানুসারে তার নাম রাখে ভিক্টোরিয়া। এটা ঠিক নিরক্ষরেখার ওপর আর এখান থেকেই নীল নদের উৎপত্তি। মধ্য-পূর্ব আফ্রিকার ছোট বড় অনেক নদীই এসে মিশেছে নীল নদের সাথে। 

প্রাচীন জাতিসমূহের কাছে নীলের উৎস সন্ধান ছিল চাঁদের অপরপৃষ্ঠ আবিষ্কারের মতোই কৌতূহলোদ্দীপক আর দুঃসাধ্য
উত্তরমুখী গতিপথে একে অনেক সংকীর্ণ আর খাড়া উপত্যকা পেরিয়ে যেতে হয়েছে। উন্মত্ত জলধারা প্রস্তরখণ্ডের ওপর ছিটকে পড়ছে আর নিম্নমুখী গতিপথে সৃষ্টি করেছে অনেক জলপ্রপাত। উত্তাল জলধারা আর জলপ্রপাত পার হয়ে জাহাজ চলাচল সম্ভব নয়, আর তাই নদীটা বিভক্ত রয়েছে কয়েক খণ্ডে। প্রপাতগুলোর সংখ্যা নির্ণয় করা হয় উত্তর থেকে দক্ষিণে। প্রথম প্রপাতটা অবস্থিত মোহনা থেকে প্রায় ছয়শ মাইল দক্ষিণে। বর্তমানে প্রপাতটা আসোয়ান শহরের সামান্য দক্ষিণে, তবে প্রাচীনকালে গ্রিকদের কাছে শহরটা পরিচিত ছিল “সাইয়িনি” নামে। মোহনা থেকে প্রথম প্রপাত পর্যন্ত নীল নদের প্রথমাংশ এই গ্রন্থের মূল দৃশ্যপট। নদীর এই অংশ অতি সাধারণ নৌযানের জন্যও সহজনাব্য, যার ফলে এখানেই গড়ে উঠেছে এক লক্ষণীয় সভ্যতা। 

এর আয়তন প্রায় যুক্তরাষ্ট্রের সমান

 সাহারা মরুভূমির পূর্বপ্রান্ত ঘেঁষে নীল নদ প্রবাহিত। সাহারা (আরবী ভাষায় যার অর্থ মরুভূমি) উত্তর আফ্রিকার অধিকাংশ এলাকা জুড়েই অবস্থিত আর এর আয়তন প্রায় যুক্তরাষ্ট্রের সমান। প্রকৃতপক্ষে এটা পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমি। এই গোটা এলাকাতেই কোনো বৃষ্টিপাত নেই। যেটুকু জল আছে তা মাটির অত্যন্ত গভীরে, শুধু মাঝে মাঝে মরুদ্যানে তা ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি উঠে এসেছে। তবে সাহারা চিরকাল মরু অঞ্চল ছিল না। বিশ হাজার বছর পূর্বে ইউরোপের অধিকাংশ এলাকা হিমবাহে আবৃত ছিল, আর শীতল বায়ুপ্রবাহ সেখান থেকে আর্দ্রতা বয়ে নিয়ে আসত উত্তর আফ্রিকায়। আজ যেখানে মরুভূমি সেকালে সেখানে ছিল নদী, হ্রদ, অরণ্য আর তৃণভূমিশোভিত মনোরম এক ভুখন্ড।

মন্তব্য করুন: