তারেক রহমানের আবেগঘন বক্তব্য ও অশ্রুসিক্ত বিএনপি নেতারা
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান
গত ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ঢাকা বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আবেগঘন বক্তব্য দেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নিজের মা ও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া’র ত্যাগের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমার মা ছয়বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন, কিন্তু আপনাদের ছেড়ে আসেননি। শেখ হাসিনা আমাদের চল্লিশ বছরের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে, তবু মা কখনো আপস করেননি— কারণ তাঁর লক্ষ্য ছিল ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।”
তিনি উদাহরণ টানেন সেই “আসল মায়ের” গল্পের, যিনি সন্তানের ক্ষতি হতে দেননি এবং বলেন, “আপনারাও সেই আসল মায়ের মতো হোন— ঐক্যের স্বার্থে ত্যাগ শিখুন।”
তারেক রহমানের কণ্ঠে তখন আবেগ ও অশ্রু মিশে যায়। সভায় উপস্থিত নেতাদের অনেকেই কান্না ধরে রাখতে পারেননি। সভা শেষে একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “তারেক রহমানের কথায় ছিল না রাজনীতি, ছিল এক মা ও ছেলের আত্মত্যাগের গল্প।”
তারেক রহমানের মধ্যে যেমন মানবিক কোমলতা আছে, তেমনি প্রশাসনিক দৃঢ়তাও প্রবল। দলের অভ্যন্তরে কোনো অনিয়ম বা শৃঙ্খলাভঙ্গ তিনি সহ্য করেন না। একদিকে তিনি হাসিমুখে কর্মীর কাঁধে হাত রাখেন, অন্যদিকে প্রয়োজন হলে সেই কর্মীর ভুল ধরতেও দ্বিধা করেন না। এই ভারসাম্যপূর্ণ নেতৃত্ব তাঁকে আলাদা করে তোলে অন্য সব রাজনীতিকের চেয়ে।
তারেক রহমানের কঠোর বার্তার কিছু নমুনা
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কড়া বার্তাও দিয়েছেন। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে তিনি স্পষ্ট জানান— দলে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও অসদাচরণ কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। অভিযোগের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে সাত হাজারের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “শৃঙ্খলাই দলের শক্তি” এবং বিএনপি সততা ও স্বচ্ছতার ওপর প্রতিষ্ঠিত একটি রাজনৈতিক সংগঠন। তরুণদের আশা পূরণ, তৃণমূলকে শক্তিশালী করা এবং জনগণের সেবায় নিবেদিত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বার্তার শেষে তিনি আরও বলেন— “ঐক্যবদ্ধ থাকুন, শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকুন, জনগণের সেবায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকুন- তাহলেই গণতন্ত্রের পথ উজ্জ্বল হবে।”
শেখ হাসিনা সরকারের গুম-খুনের বিচার হবে
সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানে এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান বলেন, “আগামীতে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার আমলের সব গুম, খুন ও অন্যায় নিয়ে সুষ্ঠু বিচার করা হবে। যে মানুষগুলো এদেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্যাতিত হয়েছে, তাদের ন্যায্য বিচার দিতে হবে। অন্যায়কারীকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
তারেক রহমান আরও জানান, “জুলাই-আগস্ট মাসে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, নির্যাতিত ও শহীদ হয়েছেন— সেই হত্যারও বিচার আমরা করব, ইনশাআল্লাহ।”
তরুণ প্রজন্ম আজ তারেক রহমানকে দেখে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে। তাঁর বক্তৃতা, ভিডিও বার্তা, দিকনির্দেশনা— সবকিছুতেই তারা খুঁজে পায় যুক্তি, বিশ্বাস ও দেশপ্রেমের সংমিশ্রণ।
যেখানে রাজনীতি এখন প্রায়শই বিভাজনের প্রতীক, সেখানে তারেক রহমান ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তিনি তরুণদের রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনছেন নৈতিকতার হাত ধরে, আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির আলোয়।
ব্যক্তিজীবনে তাঁর সরলতা, বিনয় ও পারিবারিক মূল্যবোধও সমান প্রশংসনীয়। মা বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা, পরিবারের প্রতি ভালোবাসা এবং তাঁর নম্র আচরণ— সব মিলিয়ে তিনি মানুষের কাছে ‘নেতা’ নয়, বরং ‘আপনজন’। তিনি জানেন, রাজনীতি মানে জনগণের সঙ্গে সম্পর্কের রাজনীতি। বিলাসবহুল জীবনযাপন নয়— তিনি বেছে নিয়েছেন নিঃশব্দ দায়িত্ববোধের জীবন। যিনি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেন না, বরং রাজনীতিকে দেখেন সেবার মহাসাধনা হিসেবে।
আজকের বাংলাদেশে যখন মানুষ বিভ্রান্ত, হতাশা ও অনিশ্চয়তায় ঘেরা— তখন তারেক রহমান যেন এক আশার বাতিঘর। তিনি সেই মানুষ, যিনি বিশ্বাস করেন, জাতি কখনও পরাজিত হয় না যদি তার তরুণেরা আদর্শে অটল থাকে, যদি নেতারা সৎ থাকেন এবং যদি মানুষের ভালোবাসা রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়। তাঁর রাজনীতি প্রতিশোধের নয়— এটি পুনর্গঠনের রাজনীতি।
তাঁর স্বপ্ন, একটি ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ- যেখানে মানুষ ভয়হীনভাবে বাঁচবে, যেখানে রাষ্ট্র হবে নাগরিকের অভিভাবক, নয় শাসক। বাংলাদেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক আজ এক কণ্ঠে প্রার্থনা করছেন— আল্লাহ তারেক রহমানকে সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু দান করুন। তিনি যেন দেশের গণতন্ত্র ও মানবতার পুনর্জাগরণের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকেন।
২০ নভেম্বর তাই কেবল একটি জন্মদিন নয়; এটি এক বিশ্বাস, এক প্রেরণা, এক নব সূচনার দিন। যে দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়— এই জাতি এখনো শেষ হয়ে যায়নি, কারণ তারেক রহমানের মতো নেতারা এখনো আমাদের আশার প্রতীক হয়ে আছেন।
তারেক রহমান যেমন মানবিক, তেমনি দৃঢ়; যেমন কোমল, তেমনি আপসহীন। ভালোবাসার প্রয়োজন হলে তিনি হৃদয় উজাড় করে দেন, আর দায়িত্বের মুহূর্তে দেখান কঠোরতার প্রস্তুতি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাঁর মতো এমন ভারসাম্যপূর্ণ নেতার নেতৃত্ব আজ বড়ই প্রয়োজন।
তাঁর জন্মদিন তাই কেবল শুভেচ্ছার নয়, বরং নতুন করে আশায় বুক বাঁধার দিন। শুভ জন্মদিন, মানবতার প্রতীক তারেক রহমান- বাংলাদেশের ভবিষ্যতের দীপ্ত বাতিঘর।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক, আহ্বায়ক, আমরা বিএনপি পরিবার ও সদস্য, বিএনপি মিডিয়া সেল।
(বাংলাভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, বাংলাভিশন কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার বাংলাভিশন নিবে না।)
বিভি/এজেড




মন্তব্য করুন: