৩২ হাজার শিক্ষকের স্বপ্নদ্রষ্টা সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া। দীর্ঘদিন ধরে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন। তবে অল্পদিনেই আইনি দক্ষতা দিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। পরিচিতি পেয়েছেন গরিবের আইনজীবী হিসেবে। চাকরি সংক্রান্ত (সার্ভিস ম্যাটার) মামলায় একাধিক রায় পেয়ে দেশজুড়ে আলোচনায় এসেছেন। কম বয়সেই অনেক সুনাম ও খ্যাতি অর্জন করেছেন। বয়সের মাপকাঠি দিয়ে দক্ষতা ও যোগ্যতার বিচার করা যে ভুল, সেটা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন এ আইনজীবী। তার বুদ্ধিদীপ্ত আইনি লড়াইয়ে শিক্ষকসহ ও অসংখ্য চাকরিজীবীর ভাগ্য বদলেছে। হাজারো পথহারা যুবক বেকারত্বের বোঝা থেকে মুক্তি পেয়েছে। ছোটবেলা থেকেই বড় হওয়ার স্বপ্ন ছিল সিদ্দিক উল্যাহ মিয়ার।
সেই সুবাদে লেখাপড়া করেন আইন বিষয়ে। পরবর্তীতে ক্যারিয়ারও গড়েন আইনজীবী হিসেবে। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের মধ্যে সার্ভিস ম্যাটার বিশেষজ্ঞ আইনজীবী হিসেবে পরিচিত মুখ এ আইনজীবী। আইনি দক্ষতা দিয়ে আলো ছড়াচ্ছেন প্রতিনিয়তই। একের পর এক সফলতা যোগ হচ্ছে তার ক্যারিয়ারে। নির্ভুল আইনি সেবা দিতে ও আইন বিষয়ে অধিকতর দক্ষতা অর্জনে এখনো নির্ঘুম কাজ করছেন। তবে কঠোর পরিশ্রমের ফলও পাচ্ছেন। নিয়োগ জটিলতা, পদোন্নতি, বদলি জটিলতা, বেতন স্কেল বৃদ্ধি, বেসরকারিদের সরকারিকরণ, বিসিএসসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ মামলার আইনি লড়াই করেন তিনি। ইতিমধ্যে বেশকিছু আলোচিত মামলায় রায় পেয়ে দেশব্যাপী প্রশংসা কুড়িয়েছেন এডভোকেট সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া।
তার ঐক্লান্তিক প্রচেষ্টা আশার আলো দেখছেন সকল বিসিএস’র নিয়োগ বঞ্চিতরা। ফলে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত পর্যন্ত বঞ্চিত হাজারো চাকরিপ্রার্থীর স্বপ্নদ্রষ্টায় পরিণত হয়েছেন সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া। তার হাত ধরেই নিয়োগ বঞ্চিত ৩২ হাজার প্রাইমারি সহকারি শিক্ষক ফিরে পেয়েছেন চাকরি। ওই মামলার রায় উচ্চ আদালতের আলোচিত রায়গুলোর ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত খ্যাতি পেয়েছেন ‘শিক্ষক বন্ধু ও চাকরির বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আইনজীবী হিসেবে।
এ ছাড়াও কৌশল, বিচক্ষণতা, আইনি জ্ঞান ও ন্যায়পরায়ণতা দিয়ে একজন আদর্শ আইনজীবী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন তিনি। শুধু আইন পেশায়ই নয় করোনায় মানবিক সেবা দিয়েও প্রশংসিত হয়েছেন এ আইনজীবী। মহামারির সময়ে হোম কোয়ারেন্টিনে থেকে মানবিক সেবা দিয়ে নিজ এলাকার জনগণের পাশে ছিলেন। যেকোনো প্রয়োজনে বাড়িয়ে দিয়েছেন সহযোগিতার হাত। করোনায় কর্মহীন শত শত অসহায় মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে খবরের শিরোনামও হয়েছেন তিনি। সিদ্দিক উল্যাহ মিয়ার পৈতৃক নিবাস ভোলার চরফ্যাশনে খ্যাতি পেয়েছেন মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে। করোনায় নিজ এলাকার নিম্নআয়ের মানুষকে নানাবিধ সহায়তা করেছেন।
শুধু শিক্ষা বিষয়ক মামলার সফলতা নয়, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন চাকরির মামলা, প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ মামলা, এনটিআরসি সম্পর্কিত মামলা, রাজনৈতিক ও বিভিন্ন প্রশাসনিক মামলায় সফল। সিদ্দিক উল্লাহ মিয়া স্যার জনস্বার্থে বিভিন্ন মামলা ফ্রি পরিচালনা করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। জানা গেছে, সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া আইন পেশায় আসার পর থেকে এ পর্যন্ত যতগুলো মামলা লড়েছেন সবগুলোই সার্ভিস মেটার। এ ছাড়াও মাঝেমধ্যে প্রজেক্টের মামলা করেন তিন। প্রায় দেড় হাজারের অধিক রিট মামলা করেছেন এ আইনজীবী। তার মধ্যে অধিকাংশ তার পক্ষে রায় এসেছে। নেগেটিভ এখনো হয়নি। মামলা ফি নেয়ার ক্ষেত্রেও মানবিকতার উদাহরণ রয়েছে সিদ্দিক উল্যাহ মিয়ার। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা চাকরি সংক্রান্ত হাজার হাজার মামলার আইন লড়াই করছেন তিনি। কম খরচে উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই করে হাজারো তরুণের ভাগ্য গড়ার কারিগর এ আইনজীবী। হাজারো শিক্ষকসহ অসংখ্য বেকার যুবকের চাকরির পক্ষে লড়ছেন বিরামহীন।
৩২ হাজার প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক নিয়োগে সফলতা
২০১০ সালে বেসরকারি রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদে নিয়োগ বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ান এ আইনজীবী। ওই নিয়োগে ১৪ হাজারের মতো প্রার্থীকে নিয়োগও দেয় সরকার। এতে মেধাতালিকার প্রথম দিকে থেকেও অনেকে নিয়োগবঞ্চিত হন। ২০১৩ সালে বেসরকারি রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হলে প্যানেল থেকে নিয়োগ দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর নিয়োগ বঞ্চিত ও প্যানেলভুক্ত নওগাঁর মহাদেবপুরের ১০ জন শিক্ষক ইউনিয়নভিত্তিক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট ইউনিয়নভিত্তিক নিয়োগের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন এবং রিট আবেদনকারী ১০ জনকে নিয়োগের নির্দেশ দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ অন্যরা আপিলের অনুমতি চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন (লিভ টু আপিল) করে। আপিল বিভাগে তা খারিজ হয়। ১২৭টি রিট আবেদনের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে সদ্য জাতীয়করণ করা বেসরকারি রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে রিটকারীদের ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দিয়ে রায় দেন। আবেদনকারীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া।
২০১০ সালে সারা দেশে ১৪০০ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয় কিন্তু উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে ৪০০ প্রতিষ্ঠানের এমপিও বাতিল করে দেয়া হয়। উক্ত বাতিলকৃত ৫০টির মতো প্রতিষ্ঠানের এমপিও বাতিলের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে মামলা করে উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট/আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত হয়ে বর্তমানে চলমান আছে।
যেভাবে প্রতিবন্ধীদের জন্য লড়ছেন সিদ্দিক উল্যাহ
প্রতিবন্ধী রাসেল ঢালি ও সুমন সিদ্দিক উল্যাহর আইনি সহায়তায় হাইকোর্টের এক আদেশে চাকরি পেয়েছেন। এছাড়া লিখিত পরীক্ষায় পাস করেও চাকরি না পাওয়া ২৫০ প্রতিবন্ধী এবার নিয়োগ পেতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তারা ২০২০ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ পাননি। পরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সিদ্দিক উল্যাহ মিয়ার সহায়তায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগে প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের জন্য ১১৪টি পদ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিবন্ধীদের পাশে থাকতে বরাবরই ইচ্ছা পোষণ করেন সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া। বিনা ফিতে দিতে চান আইনি সহায়তাও।
বিদ্যুতের আলো ছাড়াই কেটেছে শৈশব
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট সিদ্দিক উল্যাহ মিয়াকে ছেলেবেলা থেকেই লেখাপড়ার জন্য নানা সংগ্রাম করতে হয়েছে। বিদ্যুতের আলো ছাড়াই কুপি জ্বালিয়ে লেখাপড়া করেছেন। তবে বৈদ্যুতিক আলো না পেলেও আলো ছড়িয়েছেন পাঠচক্রে। প্রতি ক্লাসে প্রথম হয়েই মাধ্যমিক শেষ করেছেন তিনি। নানা প্রতিকূলতার মাঝেই কৃতিত্বের সঙ্গেই শিক্ষা জীবন শেষ করেন। তারপর উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে খালি হাতে পাড়ি জমান রাজধানী ঢাকায়। মালিবাগে ভাড়া মেসেই শুরু হয় ঢাকার জীবন। ছোটবেলা থেকে স্বাধীনচেতা সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া একপর্যায়ে শুভাকাক্সক্ষীর পরামর্শে হাইকোর্টে জুনিয়র হিসেবে কাজ শুরু করেন। নিজ এলাকা ভোলায় পোস্টার লাগিয়ে জানান দেন তার আইনজীবী হয়ে কাজ শুরু করার খবর। শুরুতেই চাকরি সংক্রান্ত একাধিক মামলায় রায় পক্ষে নিয়ে আসায় এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে সুনাম। পরিশ্রমী আর সহজ-সরল মনের অধিকারী সিদ্দিক উল্যাহ মিয়াকে সফলতার মুখ দেখার জন্য বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। সারা দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্যানেল শিক্ষকদের মামলা করে তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। উচ্চ আদালতে তার প্রচেষ্টায় ৩২ হাজার প্রাইমারি শিক্ষকের চাকরি হয়। দেশের সকল গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয় সে খবর। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সফল আইনজীবী হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে এডভোকেট সিদ্দিক উল্যাহর নাম। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চাকরি সংক্রান্ত আরও শত শত মামলা আসতে থাকে তার কাছে। কম খরচে উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই করে হাজারো তরুণের ভাগ্য গড়ে দেন তিনি। ভাগ্য বদল হয় তার নিজেরও। প্রথম জীবনে মেসে থাকা সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া কম সময়ের ব্যবধানে অর্থ, যশ, খ্যাতি সব অর্জন করেন। দেশের লাখো মানুষের কাছে পরিচিতি পান শিক্ষক বন্ধু আইনজীবী হিসেবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন কর্মরত প্রায় ৫ হাজার কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) তাদের চাকরির সুযোগ-সুবিধা প্রদানের নির্দেশের জন্য হাইকোর্টসহ আপিল বিভাগের আইনি সহায়তা প্রদান করেন। আইসিটি মন্ত্রণালয়ের পিএসসি’র মাধ্যমে ৫২ জেলায় ৫২ জন প্রোগ্রামার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে বিভাগীয় কর্মরত চাকরিজীবীদের মামলার কারণে তাদের নিয়োগ স্থগিত হয়ে যায় পরবর্তীতে এডভোকেট সিদ্দিক উল্যাহ্ মিয়া ৫২ জন প্রোগ্রামারদের পক্ষে আইনি সহায়তা প্রদান করেন এবং তারা নিয়োগপ্রাপ্ত হন। স্থানীয় সরকার, পল্লী ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের একটি বাড়ি একটি খামার নামে একটি প্রকল্পের পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে কর্মরত মাঠ সহকারীদের স্থানান্তর করে ২০১৬ সালের ২৮শে জুন ও ২০১৬ সালের ৩রা আগস্ট পৃথক দুটি অফিস আদেশ জারি করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে কর্মরত মাঠ সহকারীদের পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে স্থানান্তর করা হয়। পরে ২০১৬ সালে প্রকল্প চলমান থাকবে বলে পুনরায় অফিস আদেশ জারি করে। পরে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে স্থানান্তরের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী মাঠ সহকারীরা। পরে ২৫৮ জন মাঠ সহকারীকে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে স্থানান্তরের আদেশ দিয়ে রায় প্রদান করেন আদালত। এ ছাড়াও আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পে কর্মরত উপজেলা সমন্বয়কারী সিনিয়র অফিসার পদে পদোন্নতির রিটে আদালতের রায়ের আলোকে ১২৯ জন উপজেলা সমন্বয়কারী পদ হতে সিনিয়র অফিসার পদে পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে কর্মরত আছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে নওগাঁ, নোয়াখালী, ফরিদপুর, বরিশাল, নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহ জেলার ২৫ জন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সুইপার, এম এল এস এস, মালি ও ওয়ার্ডবয় পদে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগ না দিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে অকৃতকার্যদের নিয়োগ দেয়ায় তারা বিগত ২০২১ সালে রিট দায়ের করেন। পরে ৯০ দিনের মধ্যে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়ে রায় দেন আদালত। তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিষয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি (আইসিটি) পদে আবেদন করার অনুমতি দিতে রিটকারীদের পক্ষে রায় প্রদান করেন হাইকোর্ট। ২০১৪ সালে নিয়োগ বঞ্চিত ১৫০০০ পুল শিক্ষকদের মধ্যে প্রায় ২৫০০ নিয়োগ প্রার্থীর পক্ষে রিট পিটিশন দায়ের করেন। পরে আদালত তাদের পক্ষে রায় প্রদান করেন এবং তারা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে প্রায় ৩১৫ জন প্রধান শিক্ষকের পক্ষে রিট পিটিশন দায়ের করলে আদালত শিক্ষকদের পক্ষে রায় প্রদান করেন। জাতীয়করণ তালিকা থেকে বাদ পড়া শতাধিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করলে আদালতে বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য শিক্ষকদের পক্ষে রায় প্রদান করেন। একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৪৭০০০ শিক্ষকের টাইমস্কেল কর্তন করার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করলে শিক্ষকগণ উক্ত প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে বিজ্ঞ প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে এ.টি. মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত উক্ত প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করে শিক্ষকদের পক্ষে রায় প্রদান করেন।
বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিতদের শেষ ঠিকানা সিদ্দিক উল্যাহ
২০১৬ সালের ১৭ই আগস্ট ৩৫তম বিসিএস’র ফল প্রকাশ করা হয়। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ২ হাজার ১৫৮ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (পিএসসি) সুপারিশ করলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সময়ে ২ হাজার ১১৮ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ প্রদান করেন কিন্তু তাদের মধ্যে থেকে প্রায় ৪০ জনকে নিয়োগ দেয়নি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নিয়োগ না দেয়ায় নিয়োগ বঞ্চিতদের মধ্যে থেকে ১৭ জন বিগত ২০১৯ সালে আদালতে একটি রিট মামলা দায়ের করেন। ৩৭ ও ৩৯তম বিসিএস লিখিত, মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন ৩৭তম বিসিএস এ বিভিন্ন ক্যাডারে ১৩১৪ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১২৪৮ জনকে নিয়োগ প্রদান করে, কিন্তু সুপারিশকৃত ১৩১৪ জনের মধ্যে ৬৬ জন নিয়োগ বঞ্চিত হয়, ৩৯তম বিসিএসে ৪৭৯২ জনকে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে সহকারী সার্জন পদে সুপারিশ করে পরে সুপারিশকৃতদের মধ্যে থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৪৭২০ জনকে সহকারী সার্জন পদে নিয়োগ প্রদান করেন, কিন্তু ৭২ জন নিয়োগ বঞ্চিত হয় এবং ৩৬তম বিসিএসে ২৩২৩ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে পরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২২৫৬ জনকে নিয়োগ প্রদান করে, কিন্তু ৬৭ নিয়োগ বঞ্চিত হয়। বার বার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেও তাদেরকে নিয়োগ প্রদান না করায় তারা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। পরবর্তীতে ৩৫তম, ৩৭তম এবং ৩৯তম বিসিএস এ সুপারিশ প্রাপ্ত ৯৬ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের নির্দেশ দিয়ে রায় প্রদান করেন আদালত।
জানতে চাওয়া হলে সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া বলেন, লিখিত পরীক্ষা এমনকি ভাইভায় পাস করেও অনেকের চাকরি হয় না। এটা আমাকে খুব ব্যথিত করে। একজন মানুষ এত সংগ্রামের পরেও চাকরি না পাওয়া বেদনাদায়ক। তাই আমি সকল প্রকার চাকরি বঞ্চিত ও অবিচারের শিকার চাকরিপ্রত্যাশীদের পাশে আছি, ছিলাম এবং সামনের দিনেও থাকবো। তাদের আইনি সহায়তা দিতে পারলে আমার ক্যারিয়ারের পূর্ণতা আসবে। আমি প্রতিবন্ধী চাকরি প্রার্থীদের বিনামূল্যে আইন সেবা দিতে প্রস্তুত আছি।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: