পশ্চিমা সমৃদ্ধশালী দেশের অনেককেই আমরা ভিসা দেই না: নাছিম
ভিসা দেওয়ার জন্য যার যার দেশের একটা নিয়ম আছে। বাংলাদেশও সবাইকে ভিসা দেয় না। সেটা সমৃদ্ধশালী দেশের হোক, কিংবা পশ্চিমা কোনো দেশের হোক বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বিএজেএফ প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। 'রিপোর্টিং অন এগ্রিকালচার ট্রান্সফরমেশন ইন বাংলাদেশ'-শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ)।
বিএজেএফের সভাপতি গোলাম ইফতেখার মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সঞ্চালনা করেন বিএজেএফ সাধারণ সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান ও এনআরবিসি ব্যাংকের হেড অব কমিমউনিকেশনের প্রধান মো. হারুন অর রশিদ। দেশের কৃষি সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ৬০ জন গণমাধ্যমকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনা অস্থিতিশীল করতে ব্যবসায়ীরা 'সিণ্ডিকেট'র আশ্রয় নিচ্ছে। ঘুষখোর, পাচারকারী, মুনাফাখোর এরা হলো দুর্বৃত্তকারী। এগুলো এক ধরনের দস্যুতা, এরা দেশের শত্রু। দেশ গোল্লায় গেলেও এরা কিছু ভাবেন না। তবে এ ধরনের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান রয়েছে এবং তাদের দমন করতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি, কৃষি, সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করলে আমরা দেখব, স্বাধীনতা-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা যে বাংলাদেশ পেয়েছি। মানুষ, শিক্ষা, গবেষণা ও আধুনিকতার সাথে এর গুরুত্বকে মিলিয়ে কৃষিকে কোথায় নিয়ে যেতে হবে, সেই পরিকল্পনা থাকতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি, কৃষি যদি বলি ব্যর্থ হয়েছে, এটা ঠিক হবে না। সাড়ে সাত কোটি মানুষের দেশেও কিন্তু অভাব ছিল। দুর্ভিক্ষ হানা দিয়েছিল। এখন বাংলাদেশ এ অবস্থায় এসেছে, আমরা বলতে পারি, আমরা খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ। কৃষিখাতে কী ধরনের সংকট রয়েছে তা তুলে ধরতে সাংবাদিকদের আহ্বান জানান বাহাউদ্দীন নাছিম। আমাদের সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। প্রধানমন্ত্রী কৃষি অন্তঃকরণ একজন মানুষ বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৃষি সংকটে, বাংলাদেশের কৃষকরা ন্যায্য দামে সারের জন্য জীবন দিয়েছে। অধিকার অর্জনে তারা জীবন দিয়েছে। একবার নয়, একাধিকবার। এই কৃষির জন্য সরকার চাইলে পাশে দাঁড়াতে পারে। আন্তরিকতা, নিষ্ঠার সাথে যদি দাঁড়ায়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ভর্তুকির জায়গাটা ধরে রেখেছেন। কৃষি নিয়ে যারা রাজনীতি করে তাদের অর্জন টেকসই হবে না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের কৃষকদেদর জন্য অন্তপ্রাণ। আমাদের দেশের মানুষের বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আমরা কাজ করি। বাংলাদেশ ভয়াবহ খাদ্য সংকটে পড়ছে, এমন আতঙ্ক মানুষের মাঝে ছড়ানো হয়েছিল। তাতে লাভ হয়নি। বাংলাদেশ খাদ্য সংকটে পড়বে না।
দুদিনব্যাপি বিএজেএফ জাতীয় কৃষি সম্মেলনের প্রথম দিনেও সেমিনার আয়োজন করা হয়। প্রথম দিন সোমবার বিএজেএফের প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কৃষি আমাদের দেশে অনেক সমৃদ্ধি এনেছে। তারপরেও কৃষি কাজে নিয়োজিত অনেকেই অবহেলিত। দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ কৃষির সাথে জড়িত। বাকিরা অন্য পেশায়। কিন্তু আমাদের মোট আয়ের মাত্র ১২ শতাংশ পায় ৪২ শতাংশ মানুষ। বাকি ৮৮ শতাংশ অন্য খাতের লোকজনের কাছে যায়। এই হিসাব থেকেই বোঝা যায় কৃষিখাতের মানুষের আয় কম ও অবহেলিত। আমরা যে বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখছি সেটাতে কৃষিতে আনতে পারছি না।
বিএজেএফ সভাপতি গোলাম ইফতেখার মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে কৃষকদের অর্ধেকের বেশিই তরুণ। কিন্তু আমাদের যারা উচ্চশিক্ষিত তারা কৃষিতে বিনিয়োগ করছে না। দেশের কৃষিতে যে রূপান্তর ঘটছে, আমাদের সাংবাদিকতায়ও তার প্রতিফলন থাকতে হবে।
বিভি/কেএস/টিটি
মন্তব্য করুন: