আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে পদক্ষেপ নিতে এবি পার্টির আহ্বান

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, গুম, খুন, গণহত্যা ও সীমাহীন লুটপাটসহ সকল ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ। তারা নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। সংবিধান, বিচার বিভাগ, শাসন বিভাগ ধ্বংস করে জনগণের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আইনগত ও সাংবিধানিকভাবে এই সন্ত্রাসবাদী দলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য সর্বদলীয় কনভেনশন আহ্বান করে মানবতাবিরোধী দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি।
শুক্রবার (৯ মে) বিকাল ৪টায় বিজয় নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
তিনি আরো বলেন, গণতন্ত্র হত্যাকারী দল নিয়ে আমরা প্রথম থেকেই একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছি। বাংলাদেশের মানুষ ৫ই আগস্টের পর আওয়ামী লীগকে সামাজিকভাবে বয়কট করেছে। সারাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে ঘেরাও করে প্রতিহত করেছে।
সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের বিষয়ে খুবই সচেতন। বরং আমরা রাজনৈতিক নেতারা চেষ্টা করেছি যাতে মব সৃষ্টি না হয়। কিন্তু প্রতিবার আওয়ামী লীগ উসকানি দিয়েছে এবং অনবরত তা করেই যাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে পরিবেশ বারবার ঘোলাটে হচ্ছে, এর দায় পতিত স্বৈরাচারের। প্রথমে বিএনপি ও জামায়াতের মতো বড় দলগুলো নীতিগতভাবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক চায়নি। কিন্তু আমরা সব দল মিলিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা কোথায়?
গোটা বাংলাদেশে পতিত স্বৈরাচাররা গুম করেছে, খুন করেছে, ধর্ষণ করেছে, এতোকিছুর পরও কেন আওয়ামী প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। আমরা মনে করি ইনাফ ইজ ইনাফ, এভাবে আর চলতে পারে না। এই আন্দোলনের সাথে আমরা একাত্মতা প্রকাশ করছি।
তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামজিকভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আইনি পদক্ষেপও নিতে হবে। শুধু দল নিষিদ্ধ করলেই হবে না।
আইনগতভাবে পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক দলকেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রত্যেক জায়গায় যেসব রাজনৈতিক দল গণহত্যায় জড়িত ছিলো তাদেরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। বাংলাদেশে কোন বিবেচনায় আওয়ামী লীগের মতো একটি সন্ত্রাসী দল রাজনৈতিক দল হতে পারে না।
বিমানবন্দরে সাবেক রাষ্ট্রপতির পালানোর ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আবদুল হামিদ জুলাই গণহত্যা নিয়ে কোনো কথা বলেন নি, তাই উনি ফ্যাসিস্টের একজন ধারক-বাহক, উনাকে গুম-খুন, আয়নাঘর নিয়ে প্রতিবাদ না করে ফাঁসির আসামিকে মাফ করতে দেখেছি।
সঠিক তদন্ত ও ভিডিও ক্লিপ দেখে কারা আবদুল হামিদকে দেশত্যাগে সাহায্য করেছে তা বের করতে হবে। সকল নাগরিককে পুঙ্খানুপুঙ্খ সার্চ করে ইমিগ্রেশন পার হতে হয়। তাহলে আবদুল হামিদ সাহেবের বেলায় কেন শৈথিল্য দেখানো হলো? এ বিষয়ে ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে মঞ্জু বলেন, রাস্তায় দাড়ালেই আপনারা শুধু দাবি মেনে নেন, এই সংস্কৃতি বন্ধ করুন। সকল দলের মতামত নিয়ে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন। ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করুন। গুম, খুন, ধর্ষণ, গণহত্যা ও আয়নাঘর যারা সৃষ্টি করেছেন তাদের রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নিতে হবে।
এয়ারপোর্টে সুস্পষ্ট ঘোষনা দিন আর কোনো খুনি যেন ইমিগ্রেশন পার হতে না পারে। যদি আর কোনো খুনিকে পালিয়ে যেতে কেউ সাহায্য করে তাহলে তার পিছনে কোন উপদেষ্টা রয়েছে তা খুঁজে বের করে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করানো হবে।
তিনি আরও বলেন, দল নিষিদ্ধের বিষয়ে আইন পাশ করতে হবে। যে দল অপরাধ করবে সেটি দলের আইনেই বিচারের বিধান রাখতে হবে। দলের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ হলেই দলের শাস্তি হবে অন্যথায় নয়। আওয়ামী লীগের যারা ১৪, ১৮ ও ২৪ সালে এমপি হয়েছিলো, এদের রাজনৈতিক অধিকার স্থগিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল অব. দিদারুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি, ব্যারিস্টার সানি আব্দুল হক, আলতাফ হোসাইন, শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শাহ আব্দুর রহমান, সড়ক ও জনকল্যাণ বিষয়ক সহ-সম্পাদক মতিয়ার রহমান, এবি যুব পার্টির সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা) শাহজাহান বেপারী, স্বেচ্ছাসেবক ও জনকল্যাণ বিষয়ক সহ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসাইন রমিজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব বারকাজ নাসির আহমাদ, নারী উন্নয়ন বিষয়ক সহ সম্পাদক শাহিনুর আক্তার শিলা, আমেনা বেগম, শিক্ষা বিষয়ক সহ-সম্পাদক ফয়সাল মনির, সহ-প্রচার সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, রিপন মাহমুদ, সহ-দফতর সম্পাদক শরন চৌধুরী, মশিউর রহমান মিলু, যুবপার্টির দফতর সম্পাদক আমানুল্লাহ সরকার রাসেল, যুবনেতা মাহমুদ আজাদ, রাশেদ, পল্টন থানা আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সী, যাত্রাবাড়ী থানা আহ্বায়ক আরিফ সুলতান রাফিউর রহমান ফাত্তাহ, মাহমুদুল হাসান আসিফ, সোলাইমান আল হাবিব, ফারহানুল ইসলাম ইফতি, সায়েমুল ইসলাম, জাওয়াদ হামিম, মাশরুর ইসলাম মাহিন, মেহরাজুল ইসলাম আদরসহ কেন্দ্রীয়, মহানগরী, যুবপার্টি ও ছাত্রপক্ষের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
বিভি/এসজি
মন্তব্য করুন: