আ. লীগ নিষিদ্ধে উপদেষ্টা মাহফুজের অবস্থান নিয়ে মুখ খুললেন আসিফ মাহমুদ

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে ছিলেন বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বলেন, কারও সঙ্গে চিন্তার পার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু সেটাকে নোংরা মিথ্যাচারের মাধ্যমে উপস্থাপন করা অনুচিত।
রবিবার (১১ মে) রাতে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আসিফ মাহমুদ লিখেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ফটোকার্ড দেখলাম, যেখানে দাবি করা হয়েছে—মাহফুজ ভাই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এমন মিথ্যাচার বন্ধ করুন। কারও সঙ্গে চিন্তার পার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু সেটাকে নোংরা মিথ্যাচারের মাধ্যমে উপস্থাপন করা অনুচিত। মাহফুজ ভাই শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার পক্ষে ছিলেন এবং এটি বাস্তবায়নের সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা কী হতে পারে—তা নিয়ে যুক্তিপূর্ণ আলোচনা করেছেন। (ডিটেইলে গেলে গোপনীয়তার শপথ ভঙ্গ হবে, তাই এখানেই থামছি।)
তিনি লিখেন, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তা রক্ষা করা কঠিন। এর চেয়ে কঠিন সত্য আর নেই। লড়াই যেন থামছেই না। রাজপথের লড়াইটা সামষ্টিক; জুলাইয়ের যোদ্ধাদের মিলনস্থলে পরিণত হওয়ায় একধরনের ভালো লাগার জায়গাও তৈরি হয়।
তিনি আরও লিখেছেন, মাঝে মাঝে মনে হয়, সব ছেড়ে রাজপথে নেমে যাই। সেটাই আমার জায়গা—যা করতে আমি অভ্যস্ত এবং যেখানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। তবুও ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা মাথায় আসলেও থেকে যেতে হয় গণ-অভ্যুত্থানের পাহারাদার হয়ে। জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আওয়াজ পৌঁছে দেওয়ার জন্য। আমাদের এই লড়াইটা হয়তো দেখা যায় না, শোনা যায় না।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু উপলব্ধির কথা তুলে ধরে আসিফ লিখেছেন, সরকারে থাকা যেন এখন দু’ধারী তলোয়ারের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা। সরকার কোনো ভুল করলে, সেটা আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে না পড়লেও জনতার কাঠগড়ায় আমাদেরই দাঁড় করানো হয়। আবার ছাত্র-জনতা মাঠে নামলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভরকেন্দ্রগুলো আমাদের সন্দেহের চোখে দেখে, টার্গেট করে। স্টাবলিশমেন্ট মনে করে—এই কাজ আমরা করছি। তাছাড়া, ক্ষমতার বিভিন্ন ভরকেন্দ্রের সঙ্গে ‘জুলাই’ প্রশ্নে আপোষ না করায় আমরা তাদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছি—এটাও একপ্রকার বোনাস!
তিনি লিখেছেন, রাষ্ট্র একটি বিশাল এবং জটিল পরিসর। এখানে কিছু বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত কঠিন। তবে স্বস্তির বিষয় হলো—এই উপদেষ্টা পরিষদ, অনেক বাধা আসলেও, দিনশেষে ছাত্র-জনতার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে, জনরায়ের বাস্তবায়নে সচেষ্ট হচ্ছে। যতদিন এটা পারবে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকবে, গণ-অভ্যুত্থানের কণ্ঠস্বরকে যথাযথ গুরুত্ব দেবে—ততদিনই আমি আছি। যদি শহীদদের পক্ষ ছেড়ে দিই, তবে আমার এখানে আর কাজ নেই।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া জুলাই জনতার আরেকটি বিজয় উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা লিখেছেন, স্টাবলিশমেন্টে যারা এখনও আওয়ামী-সিমপ্যাথাইজার—তারা সতর্ক হোন। সামান্য অসতর্কতা আপনাদের পতনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। জুলাইকে মেনে না নিয়ে এই দেশে শান্তিতে থাকার কোনো সুযোগ নেই।
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: