আমরাও ছাত্র সংসদ নির্বাচন চাই: ছাত্রদল সভাপতি রাকিব

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব
আমরাও ডাকসু জাকসহ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চাই। সেখানে আমরা অবশ্যই অংশগ্রহণ করব। আমরা কিভাবে অংশগ্রহণ করব সেটা আমাদের বিষয়। যদি ছাত্রলীগ এবং ফ্যাসিবাদের পক্ষের শিক্ষকদের বিচারের আওতায় না এনে ছাত্র সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করা হয় তাহলে এটা ইতিহাসে ছাত্রলীগের পুনর্বাসনের ক্ষেত্র হিসেবে হয়তো বিবেচিত হবে বলে জানান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
সোমবার (২৩ জুন) বেলা ১১ টায় ঢাকা কলেজের শহীদ আ ন ম নজীব উদ্দীন খান খুররম অডিটোরিয়ামে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সদস্য ফরম বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক পিয়াল হাসানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মিল্লাত হোসেনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব,কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মৃধা জুলহাস, আহ্বায়ক আবির রায়হান, মামুনুর রহমান মামুন, শাহাবুদ্দিন ইমন, মাহফুজুর রহমান এবং শাহজাদ হোসেন মানিক।
ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, আমরাও ডাকসু জাকসহ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চাই। সেখানে আমরা অবশ্যই অংশগ্রহণ করব। আমরা কিভাবে অংশগ্রহণ করব সেটা আমাদের বিষয়।আমরা আমাদের মত করে অংশগ্রহণ করব। যদি ছাত্রলীগ এবং ফ্যাসিবাদের পক্ষের শিক্ষকদের বিচারের আওতায় না এনে ছাত্র সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করা হয় তাহলে এটা ইতিহাসে ছাত্রলীগের পুনর্বাসনের ক্ষেত্র হিসেবে হয়তো বিবেচিত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে আমাদের বীর শহীদদের নামে যা লেখা রয়েছে সেগুলো খুলে ফেলার দুঃসাহস দেখায় ছাত্রলীগ। যখন বিদ্যুৎ চলে যায় তখন ছাত্রলীগের স্লোগান শোনা যায়। এখনো ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিতরণ করা যায়নি।
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বর্বরতার বিষয়ে তিনি আরও, জুলাই আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে ছাত্র সমাজের প্রধান দাবি ছিল বিগত ১৫ বছরে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যে সন্ত্রাসী রাজত্ব, সাধারণ শিক্ষার্থীদের জীবনকে অতিষ্ঠ এবং নারীদের সম্মানহানির যারা জড়িত সেই সকল সন্ত্রাসীদের বিচার করা ছিল সবচেয়ে প্রধান দাবি। জুলাই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজসহ সকল ক্যাম্পাসের ছাত্রলীগ যে বর্বর হামলা পরিচালনা করেছিল সেই সন্ত্রাসীদের বিচার দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু যারা জুলাই আন্দোলনের ক্রেডিট চুরি করেছে তারা কেউ ছাত্রলীগের বিচারের দাবিতে সোচ্চার নেই। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ছাত্রলীগ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল ও বোমাবাজি করার মতো দুংসাহস দেখায়। আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিষ্কার। যারা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কথা বলে কিন্তু গোপনে তাদের পুনর্বাসনে লিপ্ত রয়েছে তাদের বলতে চাই এই ভূমিকা ছাত্রসমাজ মনে রাখবে। এই ছাত্রলীগকে এককভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। কিন্তু দেশের অন্য কোন সংগঠন এমন দৃষ্টান্ত দেখাতে পারেনি। আমরা শুধু ছাত্রলীগের বিচার নয় দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে শিক্ষক সরাসরি ফ্যাসিবাদের পক্ষে ছিল তাদেরও বিচার চাই।
ভারতের আধিপত্যবাদের বিষয়ে রাকিব বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে বিগত ১৫ বছর একক কণ্ঠস্বর হিসেবে বিবেচিত ছিল। এখনো ছাত্রদল ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে ভূমিকা পালন করে চলেছে। আমরা কোন আধিপত্যকে মেনে নেব না সেটা দিল্লি হোক বা পিন্ডি হোক। যারা বিগত সময়ে ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলে নাই তারা আমাদের এখন ভারতে আধিপত্যবাদের বয়ান শুনায়।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের অবদান নিয়ে রাকিব বলেন, আমরা গর্ব করি বলি ঢাকা কলেজ ছাত্রদল একটি মডেল। বিগত সাড়ে পনের বছরে ঢাকা কলেজ ছাত্রদল ছাত্র রাজনীতি ও শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় করতে গিয়ে ক্যাম্পাস বারবার রক্তাক্ত হয়েছে এবং বিভিন্ন নেতাকর্মীকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করা হয়েছে। এর জন্য তাদের স্বাভাবিক শিক্ষা জীবন ব্যাহত হয়েছে। জুলাই আগস্ট আন্দোলনে ঢাকা কলেজ ছাত্রদল সাইন্সল্যাব ও নীলক্ষেত মোড়ে অগ্ৰণী ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হলো উৎপাদনশীল ও কর্মমুখী তরুণ সমাজ প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রের সহায়ক ভূমিকা পালন করা। সার্টিফিকেট নির্ভর শিক্ষা থেকে কর্মমুখী শিক্ষাকে উদ্বুদ্ধ , শিক্ষা খাত ও ক্যাম্পাসগুলোর গবেষণা খাতে বাজেট বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে ছাত্রদল। নারী শিক্ষাকে অগ্রাধিকার মর্যাদা রক্ষার কথা মাথায় রেখে শিক্ষানীতি প্রণয়ন সহায়তা করবে। ক্যাম্পাসগুলোতে ক্রীড়া, সুস্থ ধারার দেশীয় সংস্কৃতি বিকাশ, লাইব্রেরির মান ও সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সহ বাংলাদেশের সকল গোষ্ঠী কে নিয়ে একত্রে কাজ করবে ছাত্রদল।
এছাড়াও ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক পিয়াল হাসান বলেন, শিক্ষা ঐক্য প্রগতি স্লোগানকে সামনে রেখে ঢাকা কলেজ ছাত্রদল কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। জুলাই আগস্ট আন্দোলনে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের অনেক নেতা কর্মী গুলিবিদ্ধ ,আহত ও জেল জুলুমের শিকার হয়েছিলেন। বিগত ১৭ বছর ছাত্রদল সন্মুখ সারিতে থেকে আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৯০ সাল থেকে শুরু করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সুস্পষ্ট অবস্থান ছিল আমাদের। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ঢাকা কলেজ ছাত্রদল ক্রিকেট টুর্নামেন্টসহ বেশ কয়েকটি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। আগামী দিনে ঢাকা কলেজ ছাত্রদল সুন্দর শৃঙ্খলভাবে শিক্ষা বান্দব, কর্মীবান্ধব,মুক্তচিন্তা ও সহাবস্থানের একটি সংগঠন উপহার দেব।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: