• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’র আত্মপ্রকাশ

প্রকাশিত: ২২:২৮, ১৭ জুলাই ২০২৫

ফন্ট সাইজ
নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’র আত্মপ্রকাশ

নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ (জেপিবি)।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে দলটি আত্মপ্রকাশ করে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে দলটির নেতারা বলেন, “২০২৪ সালের জুলাইয়ে দেশের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল। ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ও জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী সরকার পতন ঘটে। এই অভ্যুত্থান বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের ভিত্তি তৈরি করে।”

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলটির নির্বাহী চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার মিলন। সূচনা বক্তব্য দেন মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর লিটন এরশাদ। কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। দলটির মহাসচিব শওকত মাহমুদ উপস্থিত সাংবাদিকদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “জাতি যখন বর্ষপূর্তি পালনে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে জুলাই শহীদদের, তখনি পতিত স্বৈরাচারের নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের পক্ষথেকে কোনো ক্ষমা প্রার্থনা কিংবা অনুশোচনা প্রকাশের পরিবর্তে তারাই আবার শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা ও সমাবেশের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে জাতিকে স্তম্ভিত করেছে, যা এখন ক্ষমার অযোগ্য। তাই অনতিবিলম্বে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।”

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, “স্বাধীনতা যুদ্ধের তিন লক্ষ্য-সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার স্তম্ভকে সামনে রেখে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে এই ছাত্র গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। চূড়ান্ত পর্যায়ে তা ফ্যাসিবাদের পতন এবং নতুন রাষ্ট্রীয় বন্দোবস্তের আকাংখায় তা চূড়ান্ত সাফল্য পায়। ধর্মনিরপেক্ষতা ও সাম্প্রদায়িকতা বিভাজন-রাজনীতির অবসানে সকল রাজনৈতিক দল স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল। ৮ আগস্ট গঠিত ড. ইউনূসের অন্তবর্তী সরকারকে তারা সমর্থন জানিয়েছিল। ঠিক জাতির এই যুগসন্ধিক্ষণে অভ্যুত্থানের পরবর্তীতে আমরা নবীণ ও প্রবীণের নেতৃত্বে ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ‘২৪ শে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সমন্বয়ে আগামী দিনের নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জনতা পার্টি বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ ঘটে।”

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দুঃখজনক হলেও সত্য দেশের বর্তমান অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলতা সাধারণ আপামর জনতাকে চরমভাবে হতাশ করেছে। কারণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে সামাজিক অস্থিরতা, বিদেশি বিনিয়োগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত সাফল্য দেখতে পারেনি। সংস্কার সাধনের ক্ষেত্রে ধীরগতি আজকের জনমনে প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে। তদুপরি বিগত স্বৈরাচারের সহযোগীরা এখন বিচারালয় ও প্রশাসনে বহাল আছে । ঐকমত্য কমিশন আলোচনার সংস্কৃতি তৈরী করলে ও বর্তমানে তা রাজনৈতিক বিভাজন সৃষ্টি করেছে। গণঅভ্যুত্থানের অংশীজনদের বাইরে রেখে এক ধরনের এলিট সংস্কারে তারা ব্যস্ত।

বক্তব্যে আরও বলা হয়, জুলাই সনদ-এর নামে বর্তমান সরকারের বৈধতামূলক একটা স্বীকৃতি সনদ জন্ম করানোই যেন মূল লক্ষ্য। এ জন্যে কখনও বিএনপি, কখনও জামায়াতের বা এনসিপির কাঁধে ভর করা, মব জাস্টিসের ওপর নির্ভর করে বিভাজন সৃষ্টির চক্রান্তও পরিলক্ষিত হয়। বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলো পারস্পরিক কুৎসা বিনিময় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ইসলামী আন্দোলনের নেতা চরমোনাইয়ের পীর, জামায়াতের ইসলামীর নেতৃবৃন্দ নামে গঠিত নজীরবিহীন অশালীনতায় পর্যবসিত হয়েছে। আমরা এর আশু অবসান চাই। বর্তমানে দুর্যোগপূর্ণকালে একদিকে মেকি জাতীয় ঐক্য অন্যদিকে পারস্পরিক কটুবাক্যের প্রতিযোগিতার অবসানে প্রকৃত জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা গণঅভ্যুত্থানের এই বর্ষপূর্তিতে আমাদের একান্তিক কামনা।”

নেতৃবৃন্দ বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের অংশীজনদের বাইরে রেখে সংস্কার কার্যক্রম চালানো, কেবল কিছু নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে প্রাধান্য দেওয়া—জাতীয় ঐক্যের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

নেতারা দাবি করেন, “ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত পতনের মধ্য দিয়ে জনতাকে সম্পৃক্ত করে একটি প্রকৃত অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন এখন সময়ের দাবি।”

তারা সতর্ক করে বলেন, জনতা পার্টি বাংলাদেশ একটি জাতীয় রাজনৈতিক মেলবন্ধনের মধ্য দিয়ে 'জুলাই সনদ' চায়। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চাই। ভোটের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছাড়া নির্বাচন হলে তা জাতীয় সংকটকে মোচন করা তো দূরের কথা বরং আরেক অনিশ্চয়তাপূর্ণ ভবিষ্যত আরও আন্দোলনের আশংকা দৃশ্যমান হতে পারে। 

দলের লক্ষ্য ও দাবি
‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ জানায়, তাদের মূল লক্ষ্য হলো— আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, চাঁদাবাজি ও মব ভায়োলেন্সের অবসান, ফ্যাসিবাদীদের বিচার, বেকারত্ব নিরসনে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, হাটবাজার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে দলীয় দখলমুক্ত করা ও নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চাই। কিছু মৌলিক সংস্কার, ফ্যাসিবাদীদের দৃশ্যমান বিচার, মব ভায়োলেন্স ও নারী শিশুর প্রতি সহিংসতার অবসান, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয় দখলদারির ও চাঁদাবাজদের অবসান চাই। 

“জনতা পার্টি স্পষ্টভাবে জানাতে চায় যে, দেশে কোনো মব ভায়েলেন্স আমরা প্রশ্রয় দেব না, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের গুম-খুন, অন্যায়-অবিচার, অর্থ-লুণ্ঠনকারী ও পাচারকারীদের দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সঠিক বিচার করতে হবে। আমরা জানি অর্থনীতি সচল না হলে, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে, যতই রাজনীতির কথা বলি না কেন জনগণের কাছে তার কোনোৃ মূল্য থাকবে না।”

তারা আরও জানান, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য যথাযথভাবে আবেদন করা হয়েছে এবং তথ্য সংশোধনের সুযোগ থাকলে তা তারা আইন মোতাবেক করবে।

আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ও জেপিবির উদ্বেগ
সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানিমুখী পণ্যে ৩৫% শুল্ক আরোপের বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়, “দেশের অন্যতম প্রধান বৈদেশিক রপ্তানিখাত বিপর্যস্ত হতে পারে। এর বিকল্প বাজার খুঁজে বের করতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন।” সরকারকে এ বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাসও দেয় দলটি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল হক হাফিজ, সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান, রেহানা সালাম, অ্যাডভোকেট এম. আব্দুল্লাহ, মেজর অব. ইমরান, এম. এ. ইউসুফ, উপদেষ্টা শাহ মো. আবু জাফর, মেজর অব. মুজিব, মোজাম্মেল হক, যুগ্ম মহাসচিব রফিকুল হক তালুকদার রাজা, শিউলি সুলতানা রুবি, সাংগঠনিক সম্পাদক ফেরদৌসী মাহমুদ, মুরাদ আহমেদ, ডা. মো. মাসুদুজ্জামান, আবু সুফিয়ান, দফতর সম্পাদক মৃধা মো. আল-আমিন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. সোলায়মান, সদস্য এস. কে. রোমা, নাজমুল হাসান লিমন প্রমুখ।

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2