• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

১০ মাসেও হয়নি কাউন্সিল, কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপি জিম্মি কয়েকজনের হাতে

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:০২, ১১ অক্টোবর ২০২৫

আপডেট: ১৮:০২, ১১ অক্টোবর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
১০ মাসেও হয়নি কাউন্সিল, কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপি জিম্মি কয়েকজনের হাতে

দলীয় গঠনতন্ত্র উপেক্ষা, কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য, স্বেচ্ছাচারিতা, কমিটির সদস্যদের মতামত না নেয়া, ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুগতদের কমিটিতে স্থান দেয়া, স্বজন প্রীতির মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির ১২টি ইউনিটের মধ্যে ৮টি উপজেলা ও ৩টি পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি দেয়ায় বিএনপির নেতা কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিল চেয়ে সংবাদ সম্মেলন, কালো পতাকা মিছিল, এমনকি প্রতিকার চেয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আবেদন করেছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৯ বছর পর গত ২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আংশিক ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক মোস্তাফিজ আর রহমান, ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বেবু, ২নং যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান হাসিব, সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ ও সদস্য তাসভীর উল ইসলামকে সদস্য করা হয়।

গত ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখে কমিটির কলেবর বৃদ্ধি করে কেন্দ্রীয় বিএনপি কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির কমিটি ৫১সদস্যে উন্নীত করেন।

বিএনপি রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু'র নির্দেশনা ছিল উপজেলা কমিটি গঠনে ৫১ সদস্য মতামতের ভিত্তিতে অথবা সবার সম্মতিক্রমে রেজুলেশন করে ৫সদস্যের কমিটি গঠন করে কমিটি গঠন করতে হবে। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স গত ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৫১ সদস্যের সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

কমিটির সদস্য বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি সাইফুর রহমান রানা, সাবেক এমপি উমর ফারুখ, সদস্য ও কুড়িগ্রাম জেলা চেম্বার এন্ড কমার্স এর পরিচালক মাসুদ রানা সহ অনেক সদস্য উপজেলা কমিটি গঠনে তাদের অবস্থান ও কর্মকান্ড জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমানের কাছে জানতে চান। আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বিষয়টি এড়িয়ে যান।

পরবর্তীতে, কমিটির সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে জেলা বিএনপির ৯ উপজেলা ও ৩ পৌরসভা সহ ১২টি ইউনিটের মধ্যে ১১ টিতে আহবায়ক মোস্তাফিজার রহমান ও সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদের স্বাক্ষরে কমিটি প্রদান করেন।

এ প্রসঙ্গে সাবেক এমপি বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী  কমিটির সদস্য ও বতর্মান জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য  সাইফুর রহমান রানা বলেন, আমাদের দল গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ৫১ সদস্যের আহবায়ক কমিটির মতামত উপেক্ষা করে আহবায়ক এবং সদস্য সচিব যে কমিটি দিয়েছেন তা অগণতান্ত্রিক ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। 

তিনি আরও বলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান একজন ভারতীয় নাগরিক। তার এনআইডি কেন বাতিল করা হয়নি এই মর্মে হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। হাইকোর্টের নির্দেশে দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি তার পৈত্রিক নিবাস ভারতে চলে যাবেন ঠিকই কিন্তু জেলা বিএনপির যে ক্ষতি করে যাবেন সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নেতা কর্মীদের বেশ বেগ পেতে হবে।

জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি উমর ফারুখ বলেন অগণতান্ত্রিক পন্থায় কমিটি দেয়ায় জেলা,উপজেলা, ইউনিয়ন,এমনকি ওয়ার্ড পর্যায় পযর্ন্ত বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চরম মূল্য দিতে  হবে। এই আহ্বায়ক কমিটি দ্বারা জেলা কাউন্সিল হওয়ার কোন সম্ভাবনা দেখছি না। তাছাড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি কয়েকজনের হাতে জিম্মি।

সাবেক জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক মেয়র আবু বকর সিদ্দিক বলেন, গত ২৩ ডিসেম্বর ২৪ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠিত হবার পর প্রায় ১০ মাস অতিবাহিত হলো, আহবায়ক ও সদস্য সচিব স্বৈরাচারী কায়দায় কমিটি গঠন এবং ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করায় এই কমিটির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে কালো পতাকা মিছিল এবং এই কমিটির বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে ইতিমধ্যে প্রায় ২০ এর অধিক সক্রিয় নেতা কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। এছাড়া ১০ মাসেও জেলা সম্মেল না হওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তিনি আরও বলেন, জেলায় ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭১টি ইউনিয়নের ৬৩৯ ও পৌরসভার ২৭ মোট ৬৬৬টি ওয়ার্ড কমিটির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়নি। 

কেন্দ্র থেকে জেলা কাউন্সিলের তাগিদ দেয়া হলেও বিশেষকরে আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান ও সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ আমলে নিচ্ছেন না।ফলে জেলা কমিটির কাউন্সিল নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। 

এবিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির রংপুর বিভাগিয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু বলেন,আহবায়ক কমিটির  ৫১ সদস্যের  মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠন করতে হবে, উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পূর্বে আহবায়ক কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে বিষয়টি কেন্দ্র অবশ্যই গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতো।

১০ মাস অতিবাহিত হলেও কেন জেলা কাউন্সিল হচ্ছে না জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, আমি ব্যস্ত, পরে কথা হবে।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2