অন্তঃসত্ত্বা এনসিপি নেত্রীকে সহকর্মীর লাথি, অতঃপর...
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মামলা করেছেন দলটির এক নারী নেত্রী। মামলায় সহকর্মীদের বিরুদ্ধে পেটে লাথিসহ মারধরের অভিযোগ করেছেন এনসিপির এক অন্তঃসত্ত্বা নেত্রী।
এনসিপি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সদস্য বিপাশা আক্তার গত ২ ডিসেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। গত ২৯ নভেম্বর ঘটনা ঘটে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
বিপাশা মামলায় উল্লেখ করেন তিনি আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি জেলা শহরের উত্তর মৌড়াইল পুকুরপাড়ের বাসিন্দা।
আদালত মামলাটি নথিভুক্ত করে পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে পড়ে।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন-জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ (৩৪), এনসিপির বিজয়নগরের প্রধান সমন্বয়কারী ও জেলা কমিটির ১নং সদস্য আমিনুল হক চৌধুরী (৫০), আখাউড়ার প্রধান সমন্বয়কারী ইয়াকুব আলী (৪২), সদস্য সাকিব মিয়া (২৫) ও রতন মিয়া (৪২)। তবে অভিযুক্ত একাধিক নেতা বিষয়টি মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, প্রায় এক মাস আগে বিপাশার সঙ্গে তার স্বামীসহ অন্যান্য এনসিপির নেতারা ঢাকা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। সেখানে তারা এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর সঙ্গে ছবি তুলেন।
বিপাশার স্বামী আখাউড়া উপজেলা এনসিপির সদস্য কেফায়েত উল্লাহ ছবিটি দলীয় একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গ্রুপে পাঠান। এনসিপির স্থানীয় নেতাদের বাদ দিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর সঙ্গে ছবি তোলায় অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হন। এনসিপির আখাউড়ার সদস্য সাকিব বাদী সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য লেখেন। বিষয়টি এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা ও বিজয়নগর উপজেলার বাসিন্দা মো. আতাউল্লাহ অন্যদের কাছে জানিয়ে বিচার দাবি করেন। কিন্তু আতাউল্লাহর নির্দেশে অন্য অভিযুক্তরা বিপাশাকে আরো অপমান-অপদস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সুযোগ খুঁজতে থাকেন।
এরই মধ্যে বিপাশাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন এনসিপির নেতা আতাউল্লাহ। এতে রাজি না হওয়ায় অন্য আসামিদের লেলিয়ে দেন তিনি। গত ২৯ নভেম্বর বিপাশা পৈরতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকার এনসিপির জেলার দলীয় কার্যালয়ে যান। তিনি বিষয়টি নিয়ে এনসিপির নেতা আমিনুল হকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে এনসিপির অন্য নেতারা বিপাশা ও তার স্বামীর প্রতি ক্ষিপ্ত হন। এনসিপির অন্য নেতারা তখন বিপাশাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। এনসিপির নেতা ইয়াকুব বিপাশার পেটে লাথি মারেন। অভিযোগে গলা থেকে এক ভরি দুই আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকির কথা উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে এনসিপি নেতা ইয়াকুব আলী বলেন, ‘দলীয় কার্যালয়ে ভাড়া করা সন্ত্রাসী এনে আমাকে মারধর করা হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে আমাকে উদ্ধার করেছে। আদালতে দায়ের করা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে তখন আতাউল্লাহ ভাই উপস্থিত ছিলেন না।’
এনসিপির নেতা মোহাম্মদ আতাউল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এনসিপি নতুন দল। একটি পক্ষ চায় না আমরা এগিয়ে যাই। তাই তারা এ ধরনের ডাহা মিথ্যা অভিযোগ এনেছে। মূলত আমি সংসদ সদস্য প্রার্থী হব বলেও একটি পক্ষ পিছু লেগেছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গেছে সেটি বাইরের কিছু লোকের সঙ্গে ঝামেলা।’
বিভি/টিটি




মন্তব্য করুন: