• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

মুক্তিযুদ্ধ বিকৃত করলে জনগণ ক্ষমা করবে না: ইশরাক হোসেন

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
মুক্তিযুদ্ধ বিকৃত করলে জনগণ ক্ষমা করবে না: ইশরাক হোসেন

ঢাকা-৬ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেছেন, যে রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিকৃত করবে, দেশের জনগণ তাদেরকে ক্ষমা করবে না। আগামী নির্বাচন সেটাই প্রমাণ করে দিবে ইনশাআল্লাহ। 

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরে এসে যে দল স্বাধীনতাকে অস্বীকার করতে চাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় দিবস পালন করে আসছি। জন্মের পর থেকেই ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস আমরা পালন করে আসছি।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওয়ারীতে জিয়া শিশু কিশোর মেলার উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ইশরাক হোসেন বলেন, আজ যে বা যারাই হোক, কিংবা যে কোনো রাজনৈতিক দল যদি আমাদের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করতে চায়, আমাদের বিজয়কে অস্বীকার করতে চায় এবং মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, তাহলে আমাদের ইতিহাসের পাতায় ফিরে তাকানো উচিত।

তিনি আরও বলেন, গত বছর স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছিল, ১৯৭১ এর গণহত্যা মুছে ফেলা যাবে না, এটি চিরন্তন সত্য। অনেক কিছু যতই করা হোক, এই সত্য মুছে ফেলা যাবে না।

ইশরাক হোসেন বলেন, আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একটি বিভক্ত বাংলাদেশ থেকে একটি ঐক্যবদ্ধ ও বিভাজনমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। সে কারণেই যখন সকল রাজনৈতিক দলকে পুনরায় গণতান্ত্রিক উপায়ে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হয়, তখন তার উদারতায় অনেক রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ফেরত পায়।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হলে তা ভুল হবে। মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামী লীগ তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করেছিল নিজেদের অপকর্মকে জায়েজ করার জন্য। কিন্তু, তাই বলে কি বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি? ১৯৭১ সালে কি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দ্বারা বাংলাদেশে গণহত্যা হয়নি? আল-বদর, আল-শামস ও রাজাকার বাহিনীগুলো কি ছিল না? তখনকার পত্রপত্রিকায় কি তাদের বিভিন্ন সময়ের বক্তব্য ও নেতৃবৃন্দের ভূমিকার প্রমাণ আজও পাওয়া যায় না? আমরা তো বোকার স্বর্গে বাস করি না। বাংলাদেশের মানুষ খুব ভালো করেই জানে, সে সময় তাদের ভূমিকা কী ছিল।

ইশরাক হোসেন বলেন, আজ পচাগলা রাজনীতির কথা বলে যারা রাজনীতি করছে, তারা নিজেরাই পচাগলা ভণ্ড রাজনীতির ধারক, যাদের বাংলাদেশের মানুষ বিনা দ্বিধায় প্রত্যাখ্যান করেছে। এই রাজনীতি বাংলাদেশের মানুষ চায় না। শিশুদের মিথ্যা কথা বলে, আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে যারা রাজনীতি করতে চায় তাদেরকে মানুষ আগামী ১২ তারিখ ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দেবে।

তিনি বলেন, এই চিরন্তন সত্যকে অসম্মান করে যারা রাজনীতি করতে চায় তাদেরকে বলব, আপনারা কেন আবার দেশকে বিভক্তির মুখে ঠেলে দিতে চান? কী প্রয়োজন আপনাদের? মিথ্যা কথা বলে মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করে ১৯৭১ সালে আপনাদের যে ভুল ছিল, সেটিকে আড়াল করার জন্য আজ আপনারা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন।

ইশরাক হোসেন বলেন, ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। যদি ইতিহাস আমি ভুল না করি, মিত্রবাহিনীর দুইজন কমান্ডার ছিলেন; একজন ভারতের ইস্টার্ন কমান্ডের সেনাপতি জেনারেল অরোরা এবং অন্যজন ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম.এ.জি. ওসমানী। যদিও তিনি সেখানে উপস্থিত থাকতে পারেননি, তাতে কি আমাদের বিজয় ম্লান হয়ে গেছে? আমাদের বিজয় কি মিথ্যা হয়ে গেছে? আমরা কি স্বাধীন বাংলাদেশ পাইনি? অবশ্যই পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশের কাছেই আত্মসমর্পণ করেছিল, ভারতের কাছে নয়। ভারত তাদের প্রয়োজনে বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীকে সমর্থন ও সহযোগিতা করেছিল। যদি তারা তা না-ও করত, তবুও বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ হতো এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হতো।

ইশরাক হোসেন যোগ করেন, বিভ্রান্তিকর ইতিহাস ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে যারা রাজনীতি করতে চায়, তাদের এই অপচেষ্টা বাংলাদেশের জনগণ কোনোদিন মেনে নেবে না। আমরা আগেও দেখেছি আওয়ামী লীগ ইতিহাস বিকৃত করেছে এবং এক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্ব দাবি করেছে। এখন আবার আরেক রাজনৈতিক দল মুক্তিযুদ্ধকেই অস্বীকার করার চেষ্টা করছে। এই ধরনের অপতথ্য বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে মানুষ অত্যন্ত সচেতন। আগামী নির্বাচনে সেটাই প্রমাণ হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।

উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কে.এস. হোসেন টমাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ারী থানা বিএনপি আহবায়ক লিয়াকত আলী, কাজী আবুল বাসার, জাহাঙ্গীর শিকদার, ওয়ারী থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রহিম ভূঁইয়া, জাসাস নেতা শিবা শানু, ৩৮ নং ওয়ার্ড সভাপতি মনা, সাধারণ সম্পাদক শহীদ। এছাড়া স্থানীয় এলাকাবাসীও এতে অংশগ্রহণ করেন।

বিভি/পিএইচ

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2