গৃহবধূ থেকে রাজনীতির মাঠেও ছড়িয়েছেন আলো
গৃহবধূ থেকে রাজনীতির আপোসহীন নেত্রী হয়ে ওঠা বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জীবনের দীর্ঘ সময় কেটেছে কারাগারে। সকল প্রলোভন উপেক্ষা করে নীতিতে তিনি আঁকড়ে থেকেছেন দেশ, মাটি ও মানুষকে। স্বৈরাচার এরশাদ আমলে কয়েক দফায় আটক, এক এগারোর সরকারের সময় কারাবাসেও আপোস করেননি। সব শেষে সাজানো দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ডেও নত হননি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে।
কুসুমাস্তীর্ণ ছিলো না স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, আপোসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবনও। নানা সংকট আর প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি তার জীবনের দীর্ঘ সময় কেটেছে কারাগারে।
সব শেষ ২০১৮ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট থেকে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় তাকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আমলে। অথচ, এটি দিবালোকের মত সত্য-ট্রাস্টের কোনো টাকাই তসরুপ করেননি বেগম খালেদা জিয়া। এক একাউন্ট থেকে আরেক একাউন্টে স্থানান্তরকেই ইস্যু করা হয়।
এরপরই তাকে বন্দি করে রাখা হয় ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত এক ভবনে।
এক এগারোর সরকারের নির্মম নির্যাতনে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু এবং বড় ছেলে তারেক রহমানের প্রবাস জীবনে একাকীত্ব ও কষ্টেও এতটুকু আপস করেননি। মঈনুল রোড থেকে শহীদ জিয়ার স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি থেকে বিতাড়ন, সন্তান হারানোর কষ্ট আর একের পর এক মিথ্যা মামলায় কাবু খালেদা জিয়া চাইলেই আপস করে পাড়ি দিতে পারতেন বিদেশে। বরং, ঘোষণা দেন- বাংলাদেশই তার একমাত্র ঠিকানা।
দশম জাতীয় সংসদের বিনা ভোটের নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর গুলশানের বাসায় এবং ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি গুলশানে নিজ কার্যালয়ে দু'দফায় খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকেন টানা ৯৩ দিন।
এর আগে, ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর। সেনা সমর্থিত ওয়ান ইলেভেন সরকার আটক করে বেগম খালেদা জিয়াকে। প্রথম দফায় গ্রেফতারের পর সংসদ ভবন এলাকার স্পিকারের বাসভবনকে সাব জেল ঘোষণা করে সেখানে রাখা হয় তাকে। প্রায় এক বছর আট দিন জেলে থাকার পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আদালতের নির্দেশে মুক্ত হন তিনি।
গৃহবধূ থেকে রাজনীতির মাঠ উত্তাল করে আলো ছড়িয়েছেন দেশনেত্রীখ্যাত এই রাজনীতিক। এর বিপরীতে প্রতিশ্রুতি ভেঙে ১৯৮৬ সালে স্বৈরশাসক এরশাদের সাথে আপসরফার নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী।
অন্যদিকে, সকল প্রলোভন পায়ে দলে নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন শহীদ জিয়ার সহধর্মিনী। তখন থেকেই দেশের মানুষের মনের মণিকোঠায় তার জায়গা।
বিভি/পিএইচ




মন্তব্য করুন: