গণফোরামে বিরোধ চরমে, ড. কামালকে মিন্টুর আইনি নোটিশ

ড. কামাল ও মোস্তফা মোহসিন
১২ মার্চ শনিবার প্রেসক্লাব মিলনায়তনে কাউন্সিলের ডাক দিয়েছে গণফোরামের একাংশ। যার নেতৃত্বে রয়েছেন ড. কামাল হোসেন ও সংসদ সদস্য মোকব্বির খান। তবে মোস্তফা মহসীন মন্টুকে ও অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী নেতৃত্তাধিন অংশ শনিবারের কাউন্সিলকে অবৈধ বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে শুক্রুবার। তারআগে বুধবার ড. কামাল হোসেনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয় মোস্তফা মহসীন মন্টু ও অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীর পক্ষ থেকে।
তাদের দাবি বছরব্যাপী প্রস্তুতির পর গত ৩ ডিসেম্বর ড. কামাল হোসেন এর সম্মতিতে পার্টির গঠনতন্ত্রের ১০ ও ১১ অনুচ্ছেদের বিধান মতে গণফোরামের ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। লিখিত বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন উক্ত কাউন্সিলের সফলতা কামনা করেন। কাউন্সিলে প্রেরিত লিখিত শুভেচ্ছা বক্তব্য পাঠ করে শুনানো হয়। কাউন্সিলে মোস্তফা মোহসীন মন্টু’কে সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চৌধুরী’কে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫৭ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়।
মিন্টু পন্থিদের অভিযোগ মুকাব্বির খান সম্পূর্ণ মিথ্যার আশ্রয়ে ড. কামাল হোসেন এর নাম ভাঙ্গিয়ে ১২ মার্চ শনিবার গঠনতন্ত্র লংঘন করে তথাকথিত কাউন্সিল অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়ে গণফোরামের কর্মী ও সমর্থকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ক্রমাগতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল সম্পন্ন হবার পর ৩ মাসের মাথায় যারা গণফোরাম এর নামে কাউন্সিল আহবান করেছেন তা সম্পূর্ণ অবৈধ ও গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে ১২ মার্চ আহুত গণফোরাম এর তথাকথিত কাউন্সিল বন্ধ রাখার আহবান জানান।
তবে মুকাব্বির খান অংশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশতাক আহমেদ বলেন, 'গণফোরামের প্রতীক ব্যবহার করে মন্টু ও সুব্রত নিজেদের দল গঠন করেছেন। তারা গতকাল ড. কামাল হোসেনের কাছে গিয়েছিলেন এবং তার আশীর্বাদ নিয়েছিলেন।'
তবে মোস্তফা মহসীন এর দাবি ' দল বিভক্ত হয়নি, ড. কামাল হোসেন অসুস্থতার কারণে দল থেকে অবসর নিতে চেয়েছিলেন।
অপর অংশের নেতা সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, গণফোরাম থেকে ড. কামাল হোসেনকে বাদ দেওয়ার কোনো অধিকার ও সুযোগ কারো নাই। বিদ্রোহিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
আর কামাল হোসেনকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব ‘হাস্যকর’ উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট শফিক উল্লাহ বলেন, ‘ড. কামাল হোসেনের আদর্শে ও নেতৃত্বে এখনো গণফোরাম চলছে। সুতরাং তাঁকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাবে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। ’
একসময় সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া ও মোস্তফা মহসিন মিন্টুর নেতৃত্বাধীন দুটির অংশের বিরোধ চরমে পৌঁছলে গণফোরামে ভাঙনের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কারের মতো ঘটনা ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে গত ডিসেম্বরে দুই অংশের বিরোধ মেটানোর উদ্যোগ নেন দলটির সভাপতি কামাল হোসেন। সিদ্ধান্ত হয়, আগামী জাতীয় কাউন্সিল পর্যন্ত স্টিয়ারিং কমিটির মাধ্যমে দল পরিচালিত হবে। এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় ড. রেজা কিবরিয়া দলের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ফলে মন্টুবিরোধী বলে পরিচিত এই অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মোকাব্বির খান, শফিক উল্লাহ ও মোস্তাক আহমেদ। মন্টু সমর্থকদের বিশ্বাস, এই তিনজনের পরামর্শেই এখন ড. কামাল চলছেন।
মন্তব্য করুন: