বরিশাল বিএনপিতে সরোয়ার-যুগের অবসান!

সদ্য ঘোষিত আহবায়ক কমিটিকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিএনপির পদবঞ্চিত এবং বিলুপ্তকৃত ওয়ার্ড কমিটির নেতাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পদবঞ্চিত এবং ওয়ার্ড কমিটির নেতারা জোট বাধায় নতুন গ্রুপিং প্রকাশ্যে রুপ নিলেও তেমন একটা সুবিধা করতে পারছে না। সরোয়ার এবং তার অনুসারীদের ছাড়াই এখন চলছে কেন্দ্রীয় সব কার্যক্রম। পদবঞ্চিতরা বলছে, নিষ্ক্রিয়দের নিয়ে আহবায়ক কমিটি গঠনের পর সরোয়ারপন্থীদের বাদ দিতে বিলুপ্ত করা হয়েছে ওয়ার্ড কমিটিগুলোকেও। তবে আহবায়ক কমিটি বলছে, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হলে কেউ পদ বঞ্চিত থাকবে না।
সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাসের কারণে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বরিশাল ছিল বিএনপির শক্তঘাটি। ১৯৯১ সালে রাষ্ট্রপতি হবার পরে তার ছেড়ে দেয়া আসন থেকে সংসদ সদস্য হন মজিবর রহমান সরোয়ার। সেই থেকে গত ৩১ বছর তিনিই একক আধিপত্যে দল পরিচালনা করেছেন। সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদের হুইপ, সিটি করপোরেশনের মেয়র, বরিশাল বিএনপির সভাপতি-সম্পাদক যখন যে পদ চেয়েছেন, সেটাই আদায় করেছেন। নিজে পদ নিয়েছেন এবং অন্যকে পদ দিয়েছেন। তার মতের বিরুদ্ধে গেলেই ঝুলত বহিষ্কারের খড়গ। এক কথায় দলে মজিবর রহমান সরোয়ার ছিলেন অপ্রতিরোধ্য নেতা।
গত ৩ নভেম্বর বরিশাল মহানগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উল্টোযাত্রা। তিনি নিজে এবং তার অনুসারীরা পদ পাননি। যারা সরোয়ারের আধিপত্য খর্ব করতে গত কয়েক বছর মাঠে সক্রিয়, সেই নেতাদের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব করা হয়েছে নবগঠিত তিন কমিটিতে। সরোয়ার এখন শুধু দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব। সবশেষ গত ১১ই মার্চ বিলুপ্ত করা হয় মজিবর রহমান সরোয়ার গঠিত মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড কমিটি।
তার আগে গেল ৫ই মার্চ জেলা শ্রমিকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বশির আহমেদের মৃত্যু বার্ষিকীর অনুষ্ঠানকে ঘিরে জোট বাধে সরোয়ার অনুসারীরা। পূর্বঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ এক ঝটিকা মিছিল বের করে আলোচনায় আসে তারা। তাদের অভিযোগ সক্রিয় নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে নিষ্ক্রিয়দের মূল্যায়ন করা হচ্ছে নতুন কমিটিতে।
এ দিকে বরিশাল মহানগর বিএনপি আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেছেন, দলীয় কর্মসূচিতে সরোয়ারসহ তার অনুসারীরা ডাকলেও আসেন না।
সদস্য সচিব জাহিদুল কবির জাহিদ জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে কেউ পদবঞ্চিত থাকবে না।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, নিষ্ক্রিয়দের হাতে নেতৃত্ব দেয়ার আগে তাদের বায়োডাটা দেখা উচিৎ ছিল।
অন্যদিকে সম্প্রতি বরিশাল সফরে গিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ নতুন কমিটির কর্মকাণ্ড সন্তোষজনক বলে মন্তব্য করেন।
তবে নেতাকেন্দ্রীক গ্রুপিং রাজনীতি বাদ দিয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলন বেগবান করতে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করে সকল কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন তৃনমূল নেতা-কর্মীরা।
বিভি/এসএইচ/এজেড
মন্তব্য করুন: