• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

এতো গরম কী আল্লাহর পরীক্ষা, নাকি পাপের শাস্তি?

ইমরান মাহমুদ

প্রকাশিত: ১৪:১৮, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

আপডেট: ১৪:৪০, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

ফন্ট সাইজ

মহান আল্লাহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ দিয়ে থাকেন দুইটি কারণে। এক হচ্ছে বিশ্বাসীদের পরীক্ষার জন্য আর দুই হচ্ছে শাস্তি হিসেবে। কিন্তু বর্তমান সময়ের এ অসহনীয় গরমের পেছনে কারণ কী? আল্লাহ কি আমাদের পরীক্ষা করছেন নাকি আমাদের পাপের শাস্তি হিসেবে দেয়া হচ্ছে এই গরম।

মহানবী (স) বলেন, “হে মুহাজিরগণ, পাঁচটি জিনিস আছে যা দিয়ে তোমাদের পরীক্ষা করা হবে, আর আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা সেগুলো থেকে বেঁচে থাকো: কোন সম্প্রদায় যখন প্রকাশ্যে অশ্লীলতার চর্চা করে তখন আল্লাহ সেখানে মহামারি দেন আর এমন রোগ দেন যা তাদের আগে কেউ দেখেনি। যখন কোন জাতি ওজনে কম দেয় তখন তাদের উপর আসে চরম দুর্ভিক্ষ, প্রচন্ড দুর্যোগ এবং অত্যাচার। যারা জাকাত দেয় না সে জাতির আকাশে আল্লাহ বৃষ্টি বন্ধ করে দেন। যদি সে জমিনে কোন পশু পাখি না থাকতো তবে আল্লাহ তাদের কোন বৃষ্টিই দিতেন না। যে জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাথে অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, আল্লাহ তাদের শত্রুদের তাদের উপর ক্ষমতাবান করে দেন ও তাদের সব কিছু হাতিয়ে নেয়ার অনুমুতি দেন। আর যখন কোন শাসক আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী শাসন করে না, তখন আল্লাহ সে জাতিকে একে অন্যের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত করে দেন।” [সুনান ইবনে মাজাহ, ৪০১৯]

অর্থাৎ, হাদিসটি থেকে জানা যায় বৃষ্টি বন্ধ করে দেয়ার কারণ হচ্ছে যখন জাকাত দেয়া বন্ধ হয়ে যায় অথবা শুধুমাত্র লোক দেখানো জাকাত দেয়া হয়। জাকাত হচ্ছে ইসলামের ৫টি স্তম্ভের মধ্যে একটি। জাকাতের কারণে একটি সমাজে ভারসাম্য বজায় থাকে। যদি কোন সমাজে জাকাতের সঠিক বণ্টন হয় তবে সেই সমাজে ধনী গরীব ভারসাম্য রক্ষা পায়। আর তাই জাকাত না আদায় করার শাস্তি হিসেবে আল্লাহ বৃষ্টি বন্ধ করে দেন।

এ ছাড়াও মুসা (আ) এর জীবনের একটি ঘটনা থেকেও বৃষ্টি বন্ধের কারণের কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। একবার মুসা (আ) এর সময়ে বণি ইসরাইলদের উপর নেমেছিলো এক ভয়াবহ অনাবৃষ্টি। ফলে তাঁরা মুসা (আ) কে বললেন, আল্লাহ’র কাছে দোয়া করতে যেন আল্লাহ বৃষ্টি দেন। মুসা (আ) সবাইকে নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন আর আল্লাহ তাঁকে জানালেন যে, “বণি ইসরাইলদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি আছে যে বছরের পর বছর আল্লাহর অবাধ্য হয়েছে, আল্লার সাথে নাফরমানী করেছে। তাঁর কারণেই আল্লাহ বৃষ্টি বন্ধ করে দিয়েছেন।”

মুসা (আ) বনি ইসরাইলদের উদ্দেশ্যে বললেন, “তোমাদের মধ্যে কে আছে এমন যে বছরের পর বছর আল্লাহর অবাধ্য হয়েছে? তাঁর জন্যই আল্লাহ বৃষ্টি বন্ধ করে দিয়েছেন। সে যেন বেরিয়ে আসে।” তখন সে লোকটি মনে মনে ভাবলো, এখন যদি আমি সবার সামনে বের হয়ে আসি তবে পুরো জাতির সামনে আমাকে লজ্জিত হতে হবে আর তা না হলে অনা বৃষ্টিতে সবাই মারা যাবে। সে মনে মনে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলো আর বললো এত বছর যখন আল্লাহ তাঁকে অপমানিত করেননি, এখনও যেন তাঁর সম্মান রক্ষা করেন। ঠিক তখনই আকাশ অন্ধকার করে বৃষ্টি নামলো। 

মুসা (আ) আল্লাহর কাছে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহ আমি তো সে ব্যক্তিকে এখনও খুঁজে পাইনি, তবে বৃষ্টি দিলেন যে। আল্লাহ বললেন, আমার সে বান্দা ক্ষমা চেয়েছে আর আমি তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছি। মুসা (আ) তার পরিচয় জানতে চাইলে আল্লাহ বলেন, যখন সে অপরাধ করেছে তখন তাঁর পরিচয় গোপন রেখেছি আর এখন তো সে ক্ষমা চেয়েছে, এখন তাঁর পরিচয় কিভাবে প্রকাশ করি।

অর্থাৎ এই প্রচন্ড গরম থেকে বাঁচতে আমাদের বেশি বেশি ক্ষমা চাইতে হবে আর আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের দেখানো পথে চলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই হয়ত কমবে গরম আর নেমে আসবে স্বস্তির বৃষ্টি।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: