হতাশা থেকে মুক্তি পেতে যে দোয়া পড়বেন

ডিপ্রেশনসহ মানুষের মানসিক নানা পরিবর্তন হয়। কারণে-অকারণে অশান্তি, অবসাদ, ক্লান্তি ও হতাশা ঘিরে ধরে আমাদের। এসব থেকে মুক্তি পেতে নবীজি অনেক দোয়া শিখিয়েছেন।
হজরত আসমা বিনতে উমাইস (রা.) বলেন, একবার রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেন, আমি কি তোমাকে এমন কয়েকটি বাক্য শিক্ষা দেব না, যা তুমি বিপদের সময় পাঠ করবে? তা হচ্ছে,
আল্লাহু আল্লাহু রাব্বি লা উশরিকু বিহি শাইয়ান।
অর্থ: আল্লাহ, আল্লাহ, আমার রব (প্রতিপালক) তার সঙ্গে আমি কাউকে শরিক করি না। (সুনানে আবু দাউদ ১৫২৫)
মানুষ পৃথিবীতে এমন একটা সময় পাড় করছে, গোটা বিশ্বজুড়ে অশান্তি আর যুদ্ধবিগ্রহ। শুধু দেশে নয়, অনেক অনেক পরিবারে অশান্তির কালোমেঘ ঘিরেই থাকে। এসবই আমাদের আমলের কারণে। আল্লাহর পথ থেকে দূরে থাকার কারণেই। এমনকি অনেক তরুণ মানসিক অবসাদে ভুগছেন। এর ক্ষতি ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে।
যে আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সে মানুষ যখনই সৃষ্টিকর্তাকে ভুলে অন্য পথে দৌঁড়ায় তখনই সে নানা ধরনের অবসাদে ভুগতে থাকে। অশান্তিতে নিপতিত হতে থাকে। অন্তরে যখন দীনের আলো না থাকে তখন তার অন্তরে এক ধরনের হাহাকার কাজ করে।
মানুষের জীবনে নানা ধরনের মুসিবত আসবে। সব কিছু নিজের মনমতো হবে না, এটাই স্বাভাবিক। যদি সবকিছু নিজের মনমতো হতো তাহলে এটা দুনিয়া না হয়ে জান্নাত হতো। কিছু বিষয়ে যদি নিজেকে অভ্যস্ত করে নেয়া যায় তাহলে আশা করা যায় ধীরে ধীরে মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি পাবেন, ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাবেন। মানসিক প্রশান্তির জীবন ধারন করতে পারবেন।
অবশ্যই সবসময়ই আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখা। এ কথা বিশ্বাস করা যে আল্লাহ তাআলা মানুষের ভাগ্যে যা লিখে রেখেছেন তা অবধারিত। এ জন্য সর্বাবস্থায় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। সব সমস্যার কথা আল্লাহর কাছে বলুন। মন হালকা হবে। পৃথিবীর কারো কাছে বলতে পারেন না, আল্লাহর কাছে বলুন। মন থেকে পাথর সরে যাবে। আল্লাহ বলেন,
বলে দাও, আল্লাহ আমাদের জন্য তাকদিরে যা লিখে রেখেছেন, তা ছাড়া অন্য কোনো কষ্ট আমাদের স্পর্শ করবে না। তিনিই আমাদের অভিভাবক। আর আল্লাহরই ওপর মুমিনদের ভরসা করা উচিত। (সুরা তাওবা-৫১)
কখনই আল্লাহ থেকে নিরাশ না হওয়া। কেননা নিরাশ মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, কোনো একসময় আমি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পেছনে ছিলাম।
তিনি বললেন, ‘আর জেনে রেখো, যদি সব উম্মত তোমার কোনো উপকারের উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে ততটুকু উপকারই করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। অন্যদিকে যদি সব উম্মত তোমার কোনো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে একতাবদ্ধ হয়, তাহলে ততটুকু ক্ষতিই করতে সক্ষম হবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা তোমার তাকদিরে লিখে রেখেছেন। কলম তুলে নেওয়া হয়েছে এবং লিখিত কাগজও শুকিয়ে গেছে। (জামে তিরমিজি ২৫১৬)’
কোরআন-হাদিসে বর্ণিত দোয়ার প্রতি গুরুত্ব দেয়া। কারণ আল্লাহর জিকির অন্তর প্রশান্তির অন্যতম মাধ্যম। আল্লাহ তাআলা বলেন, এরা সেই সব লোক, যারা ঈমান এনেছে এবং যাদের অন্তর আল্লাহর জিকিরে প্রশান্তি লাভ করে। স্মরণ রেখো, শুধু আল্লাহর জিকিরেই অন্তরে প্রশান্তি লাভ হয়। (সুরা আর-রাদ-২৮)
ছোট ছোট দোয়াগুলো চলতে ফিরতে পড়তে পারেন। যেমন, আস্তাগফিরুল্লাহ, আলহাদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম।
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: