• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

নজর সামলে রাখুন, কুদৃষ্টির পরিণতি ভয়াবহ

প্রকাশিত: ১৮:৩৪, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

আপডেট: ২৩:২৩, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
নজর সামলে রাখুন, কুদৃষ্টির পরিণতি ভয়াবহ

চোখ আল্লাহর অশেষ নিয়ামত। কিন্তু এই চোখের বড্ড অপব্যবহার করছেন অনেকে। ইসলামি শরীয়তের দৃষ্টিতে চোখের বা নজরের হেফাজত করা ইবাদতের সমান। এই বিষয়টি নিয়ে হাদিসে রয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা।

কুদৃষ্টির ভয়াবহতা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) এক হাদিসে বলেছেন, ‘চোখের জিনা ও ধর্ষণ হলো হারাম দৃষ্টি।’ (বুখারি : ৬৬১২)। সুতরাং চোখের জিনা ও ধর্ষণ থেকে বাঁচতে হলে- ১.পুরুষের জন্য গায়রে মাহরাম নারীর দিকে তাকানো নিষেধ। নারীর জন্য গায়রে মাহরাম পুরুষের দিকে তাকানো নিষেধ। ২. গঠন-আকৃতিতে আকর্ষণীয় নাবালিকা মেয়েদের দিকে তাকানো থেকেও বিরত থাকতে হবে। ৩. দাড়িহীন কমনীয় বালকের প্রতি দৃষ্টিপাত থেকেও বাঁচতে হবে।

নিষিদ্ধ দৃষ্টিপাত সম্পর্কে নবীজি (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘তোমার অনুমতি ছাড়া কেউ যদি তোমার ঘরের ভেতর তাকায় আর তুমি কঙ্কর মেরে তার চোখ ফুটো করে দিয়ে থাকো, এতে তোমার কোনো দোষ হবে না।’ (বুখারি : ৬৮৮৮)। 

এছাড়াও কুদৃষ্টির ফলাফল কতটা ভয়ংকর হতে পারে তার উপমা নিয়ে একটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন, আল্লামা ইবনুল জাওযি (রা.)। ‘বাগদাদে বাস করত এক মুয়াজ্জিন। যার নাম ছিল সালেহ। সালেহ মুয়াজ্জিন নামে প্রসিদ্ধ ছিল সে। প্রায় চল্লিশ বছর আজান দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেছিল। তার সততা ও সদাচার কারো অজানা ছিল না। সকলেই তাকে খুব ভালো জানত। সত্যিই সে ছিলও তেমনই। 

একদিনের কথা। মুয়াজ্জিন সালেহ আজান দিতে মসজিদের মিনারায় উঠেছে। এমতাবস্থায় তার চোখ পড়েছে মসজিদ-সংলগ্ন বাড়িতে থাকা এক খ্রিষ্টান রমণীর দিকে। দেখামাত্রই সে তার প্রেমে পড়ে যায়। এরপর সে সব ফেলে সেই রমণীর কাছে পৌঁছায়। দরজায় কড়া নাড়তেই ভেতর থেকে আওয়াজ আসে, কে...? জবাবে সে বলে, আমি সালেহ মুয়াজ্জিন। 

দরজা খুলে দিলেই সালেহ মেয়েটিকে স্পর্শ করতে চায়। নিরুপায় হয়ে মেয়েটি বলে, আপনারা তো আমানতদার! তবে এ কেমন খেয়ানতের আচরণ করছেন? সালেহ বলে, যদি আমার কথা না শোনো, তাহলে প্রাণে মেরে ফেলব। ‘আপনার কথা শুনতে পারি, তবে আপনাকে ইসলাম ত্যাগ করতে হবে।'—বলে মেয়েটি। 

সালেহ তৎক্ষণাৎ বলে ফেলে, 'আমি ইসলাম ত্যাগ করলাম, মুহাম্মদ আনীত কোনো কিছুর সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।' মেয়েটি বলে, 'এভাবে বললে তো হবে না; হতে পারে আপনার কামনা চরিতার্থ করে আপনি আবার ইসলাম গ্রহণ করবেন; তা হবে না। স্থায়িত্বের প্রমাণস্বরূপ আপনাকে শূকরের মাংস খেতে হবে।

সালেহ তা-ই করে। তারপর তাকে মদপান করতে বলা হয়; সে তাও করে। সব কথা শোনার পর যখন আবার সে মেয়েটিকে স্পর্শ করতে যায়, তখন মেয়েটি অন্দরমহলে গিয়ে দরজা আটকে দেয় এবং সালেহকে বলে ছাদে ওঠে অপেক্ষা করতে—যেন মেয়েটির বাবা এসে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করতে পারে। এবার সে তা-ই করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ছাদ থেকে পড়ে সে মারা যায়। তারপর বেরিয়ে এসে মেয়েটি তাকে একটি কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে রাখে। তার পিতা ঘরে ফিরলে সে তাকে সব খুলে বলে। 

অতঃপর রাতের অন্ধকারে শহরের গলিতে ফেলে দেওয়া হয় সালেহ মুয়াজ্জিনের লাশ। পরদিন সকালে ঘটনা জানাজানি হলে,সালেহের জায়গা হয় ময়লার স্তূপে!” সূত্র: নজরের হেফাজত বইয়ের পৃষ্ঠা ৫৫ ও ৫৬।

এভাবেই আমল-আখলাক সব ভালো হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র কুদৃষ্টির কারণে নিজের ঈমান-আমল হারিয়ে নিকৃষ্টভাবে মৃত্যুবরণ করেন সালেহ মুয়াজ্জিন। শিক্ষামূলক এই ঘটনা থেকে অবশ্যই প্রতিটা মুসলমানের শিক্ষা নেওয়া জরুরি।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2