• NEWS PORTAL

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বেশ ধারণকারী নারী-পুরুষরা যেসব শাস্তির মুখোমুখি হবেন

প্রকাশিত: ০১:২৪, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
বেশ ধারণকারী নারী-পুরুষরা যেসব শাস্তির মুখোমুখি হবেন

প্রতীকী ছবি

মহান আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিজগতে রেখেছেন চরম বৈচিত্র্য। নারী-পুরুষ সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টি জগতের অস্তিত্বকে বংশ বিস্তারের মাধ্যমে টিকিয়ে রাখতে। শুধু তাই নয়, নারী ও পুরুষের জন্য রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। কিন্তু বর্তমানে অনেক নারীদের মধ্যে পুরুষের বেশ ধারণ কিংবা পুরুষের মধ্যে নারীর বেশ ধারণের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

তবে এ ধরনের কাজ ইসলাম কখনোই সমর্থন করে না। স্রষ্টার উদ্দেশ্যকে পরিবর্তন করে প্রকাশ করা নারী-পুরুষের জন্য এক নোংরা আচরণ। এ আচরণে নারী-পুরুষের চরিত্র ধ্বংস হয়ে যায়। সমাজ কলুষিত হয়। মানুষের উপর আল্লাহর গজব নেমে আসে।

পবিত্র কুরআনের সুরা রুম এর ২১ নং আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেন,

وَ مِنۡ اٰیٰتِهٖۤ اَنۡ خَلَقَ لَکُمۡ مِّنۡ اَنۡفُسِکُمۡ اَزۡوَاجًا لِّتَسۡکُنُوۡۤا اِلَیۡهَا وَ جَعَلَ بَیۡنَکُمۡ مَّوَدَّۃً وَّ رَحۡمَۃً ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّتَفَکَّرُوۡنَ  

সরল অর্থ: আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য, যারা চিন্তা করে।

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরে ইবনে কাসিরে বলা হয়েছে,  আল্লাহর কুদরতের দ্বিতীয় নিদর্শনঃ দ্বিতীয় নিদর্শন এই যে, মানুষের মধ্য থেকে আল্লাহ তাআলা নারী জাতিকে সৃষ্টি করেছেন। তারা পুরুষের সংগিনী হয়েছে।

হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও শেষ দিবসে ঈমান রাখবে সে যেন তার পড়শীকে কষ্ট না দেয়। আর তোমরা মহিলাদের প্রতি কল্যাণকর হওয়ার ব্যাপারে পরস্পরকে উপদেশ দাও; কেননা তারা বাঁকা হাড় থেকে সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বাঁকা অংশ হচ্ছে হাড়ের উপরের অংশ। যদি তুমি তাকে সোজা করতে যাও তবে তা ভেঙ্গে ফেলবে। পক্ষান্তরে যদি তুমি ছেড়ে যাও তবে সব সময় বাঁকাই থেকে যাবে। সুতরাং তোমরা মহিলাদের প্রতি কল্যাণকর হওয়ার ব্যাপারে পরস্পরকে উপদেশ দাও। [বুখারী: ৫১৮৫, ৫১৮৬]

অপরদিকে, সুর নূর এর ১৯ নং আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেন,

 اِنَّ الَّذِیۡنَ یُحِبُّوۡنَ اَنۡ تَشِیۡعَ الۡفَاحِشَۃُ فِی الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَهُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ۙ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ؕ وَ اللّٰهُ یَعۡلَمُ وَ اَنۡتُمۡ لَا

সরল অর্থ: যেসব লোক পছন্দ করে যে,ঈমানদারদের মধ্যে নির্লজ্জতা ও অশ্লীলতার প্রসার লাভ করুক,তাদের জন্য ইহকাল ও পরকালে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি রয়েছে।

অত্র আয়াতে নির্লজ্জতা ও অশ্লীলতার পরিণাম যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি বলা হয়েছে। আর পরস্পর বেশ ধারন করা হচ্ছে অন্যায়-অপকর্ম নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনার বাস্তবরুপ।

ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন রাসূল (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা সেই সব মহিলাদের উপর অভিশাপ করেছেন যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে এবং সে সকল পুরুষদের উপর অভিশাপ যারা মহিলাদের বেশ ধারণ করে। (বুখারী,মিশকাত হাঃ৪৪২৯)। একই হাদিস বর্ণনা করেছেন হযরত আবু হুরায়রাও (রাঃ)। (আবু দাউদ,মিশকাত হাঃ৪৪৬৯)

ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন রাসূল (সাঃ) হিজরার বেশ ধারণকারী পুরুষের উপর অভিশাপ করেছেন এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী নারীর উপর অভিশাপ করেছেন। (বুখারী,মিশকাত হাঃ৪৪২৮)

ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন রাসূল (সাঃ) বলেছেন, তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে যাবে না। ১. পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, ২. বাড়ীতে বেহায়াপনার সুযোগ প্রদাননকারী, ৩. পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী। (নাসাঈ হাঃ২৫৬২)

আবু মুলায়কা (রাঃ) বলেন একদা আয়েশা (রাঃ) কে বলা হলো, একটি মেয়ে পুরুষের জুতা পরে। তখন আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ) পুরুষের বেশধারী নারীর প্রতি অভিশাপ করেছেন। (আবু দাউদ,মিশকাত হাঃ৪৪৭০)

অত্র হাদীসসমূহ দ্বারা প্রমাণীত হয় যে, যেসব পোষাক পুরুষের পোষাক বলে পরিচিত সে সব পোষাক নারীরা পরিধান করলে তাদের ‍উপর আল্লাহর অভিশাপ হবে। উল্লেখ্য নারীদের মাথার চুল ছোট করা পুরুষের বেশ ধারণ করার অন্তর্ভূক্ত। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন এবং সঠিক পথে পরিচালনা করুন।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: