ব্র্যাক ও এপিবিএনের হস্তক্ষেপ
সৌদিতে নির্যাতনে নিহত হানিফের মরদেহ দেশে এলো ৫ মাসপর
একবার প্রিয় মানুষের মুখ দেখার শেষ ইচ্ছে পূরণ করেছে ব্র্যাক ও এপিবিএন। তাদের হস্তক্ষেপে সৌদিতে নির্যাতনে নিহত হানিফের নিথরদেহ দেশে এলো ৫ মাস পর।
সোমবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে পরিবার বিমানবন্দর থেকে গ্রহণ করবেন মরদেহ।
আজ রবিবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ বিমানের (বিজি৩৪০) যোগে দেশে ফিরেছেন রিক্রুটিং এজেন্সি অপশন ম্যানপাওয়ার ওভারাসীজ (আরএল ১৩৮৪) এর মাধ্যমে সৌদি গিয়ে নির্যাতনে মৃত হানিফের মরদেহ।
ব্র্যাক ও এপিবিএনের যৌথ সহযোগিতায় বাংলাদেশ দূতাবাসে মাধ্যমে দীর্ঘ পাঁচ মাস পর দেশে ফিরছে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার আব্দুল মোতালেবের ছেলে মো. হানিফ (৩৩) এর মরদেহ। পরিবার জানায়, লাশ বিকালে দেশে আসলেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ লাশ দেশে আসার খবর নিশ্চিত করেন আজ সন্ধ্যায় জানান পরিবারকে।
মৃত হানিফের স্ত্রী জানান, পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় আগামীকাল সকালে বিমানবন্দর থেকে লাশ গ্রহণ করবেন তারা।
রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি গিয়ে নির্যাতনে যুবকের মৃত্যু, লাশ দেশে আনার আকুতি শিরোনামে চলতি বছরের ৩ জুলাই খবর প্রচার হলে বিষয়টি বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) নজরে আসে।
নিউজের সূত্রধরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ব্র্যাক এবং হানিফের মরদেহ সরকারি খরচে দেশে আনার বিষয়ে ব্যবস্থা করেন পরিবারকে। জীবিকার সন্ধানে রিক্রুটিং এজেন্সি অপশন ম্যানপাওয়ার ওভারাসীজের মাধ্যমে সৌদি আরবের আভা শহরে গিয়ে প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে তার বড় ছেলে হানিফের মৃত্যু হয়। গত ১৬ জুন রিয়াদের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। তার মৃত্যুর পর সেখানে বসবাসকারী নিকটাত্মীয়রা লাশ দেশে আনার বিষয়ে দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করছে। ফলে লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল।
নিহত হানিফের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা হানিফ অভাবের তাড়নায় ছোটবেলা থেকে নির্মাণশ্রমিকের (রাজমিস্ত্রি) কাজ করে জীবিকানির্বাহ করতেন। চলতি বছরের ১২মার্চ সৌদি আরবে গমন করেন।
দেশটিতে যাওয়ার পর তাকে রাজমিস্ত্রির কাজ না দিয়ে আভা শহরে ভেড়া চরানোর চাকরি দেওয়া হয়। যে মালিকের অধীন তাকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল ওই ব্যাক্তি তাকে নানা ধরনের শারীরিক নির্যাতন করতো। বিষয়টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে জানানোর পর তিনি যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। সেখানে নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৬ জুন রিয়াদের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একইদিন স্থানীয় সময় বিকাল ৩টায় হানিফ মারা যান।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: