এবার মুন্সীগঞ্জ গেলেন পবিত্র কাবা শরীফের সাবেক ইমাম

ছবি: সম্মেলনে বক্তৃতা করছেন কাবা শরীফের সাবেক ইমাম শায়খ ড. হাসান বোখারি
প্রথমবার বাংলাদেশে এসেছেন পবিত্র কাবা শরীফের সাবেক ইমাম শায়েখ ড. হাসান বোখারী। ফেনী ও ঢাকার পর শনিবার (১৮ জানুয়ারি) মুন্সীগঞ্জ সফর করেন তিনি। রাতে সিরাজদিখানে আজমতে কোরআন ও শানে রিসালাত আন্তর্জাতিক সম্মেলন ২০২৫-এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন তিনি।
ড. হাসান বোখারী পবিত্র কাবা শরীফের সাবেক ইমাম ও বর্তমান সিনিয়র মুহাদ্দিস, হারামাইন শরীফাইন পরিচালনা বোর্ড ও সর্বোচ্চ ওলামা বোর্ড, সৌদি আরবের সদস্য।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শায়েখ ড. হাসান বিন আবদুল হামিদ বোখারী বলেন, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই, হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম আল্লাহর বান্দা এবং প্রেরিত রসূল। এই কলেমা সাক্ষী দেওয়ার কারণে আমরা ইসলামের ভিতর প্রবেশ করেছি। আর যারা এই কলেমা পড়বে না, ইসলাম থেকে তারা বাইরে। তিনি বলেন, আল্লাহ আমাদের তৌফিক দিয়েছেন এই কলেমা পড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, ইসলামে কলেমা শাহাদাত গুরুত্বপূর্ণ রোকন। এটা ছাড়া কেউ মুসলমান হতে পারে না, কলেমা শাহাদাতের উপর ভিত্তি করে আমরা আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখি এবং রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর ঈমান রাখি। এর মাধ্যমে আমরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে মহব্বত করি। তিনি যে সমস্ত জিনিস নিয়ে আসছেন তা অনুকরণ করি, তাকে এত্তেবা ছাড়া উম্মত হওয়া যাবেনা। তার উপর ঈমান আনলাম এবং তিনি সর্বশেষ নবী, তারপরে কোন নবী আসে নাই এবং আসবেও না। যতোক্ষণ পর্যন্ত আমরা এটা বিশ্বাস না করবো ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা খাঁটি ঈমানদার হতে পারবো না।
হাসান বোখারী বলেন, কোরআন পাকে আল্লাহ্ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সর্বশেষ নবী বলে উল্লেখ করেছেন। আর রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তার পরে কোন নবী আসবেনা। এরপর যদি কোন ব্যক্তি দাবি করে সে নবী অথবা ধারণা করে যে সে নবী, তবে তিনি সর্বনিকৃষ্ট এবং খারাপ, মিথ্যুক ও প্রতারক।
রাজানগর ইউনিয়নের জামিয়া ইসলামিয়া হালিমিয়া মধুপুর মাদরাসা ময়দানে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন, আমিরে খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশ ও প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক জামিআ ইসলামিয়া হালিমিয়া মধুপুর, পীর সাহেব আল্লামা আব্দুল হামিদ। অনুষ্ঠানে কোরআন তিলাওয়াত করেন, শায়েখ ক্বারী মুহাম্মাদ নাসর আত-ত্বারুতী, মিশরি; ক্বারী মুহাম্মদ বিন হাসান বোখারী, সৌদি আরব; শায়েখ ক্বারী সাইয়েদ জাসেম মুসাওয়ী, ইরানী; শায়েখ সাদ সাইফুল্লাহ মাদানী ও স্বাগতিক বাংলাদেশের প্রখ্যাত ক্বারীগণ। সঞ্চালনায় ছিলেন, নায়েবে মুহতামিম জামিয়া ইসলামিয়া হালিমিয়া মধুপুর মাওলানা উবাইদুল্লাহ। বাংলা তর্জমা করেন হযরত মাওলানা মুফতি আনিছুর রহমান শায়খুল হাদিস, মাজহারুল উলুম মাদরাসা মিরপুর ঢাকা।
সম্মেলনে মধুপুর পীর সাহেব আল্লামা আব্দুল হামিদ বলেন, দীর্ঘ ১৫টি বছর আমরা এই ধরনের সম্মেলন করার চেষ্টা করেও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুমতি না পাওয়ায় করতে পারিনি। আল্লাহ আমাদের নসিব করেছেন তাই হারাম শরীফের ইমামকে আমরা পেয়েছি, দেশবাসী এবং মুন্সীগঞ্জবাসী জন্যে এটা হাদিয়া হিসেবে আমরা পেয়েছি।
পবিত্র কাবা শরীফের সাবেক ইমাম শায়খ ড. হাসান বোখারির ইমামতিতে সিরাজদিখানে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করেন মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে আগত হাজার হাজার মুসল্লি।
বিভি/এমআর
মন্তব্য করুন: