• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

‘গরু পালকের কুরবানি মানুষ না দেখলেও দেখেন শুধু আল্লাহ’

কেফায়েত শাকিল

প্রকাশিত: ১৭:২৫, ৬ জুন ২০২৫

আপডেট: ১৭:২৫, ৬ জুন ২০২৫

ফন্ট সাইজ
‘গরু পালকের কুরবানি মানুষ না দেখলেও দেখেন শুধু আল্লাহ’

লায়ন নামের একটি গরু নিয়ে শেরপুর থেকে রাজধানীর গাবতলী হাটে বিক্রি করতে এনেছিলেন মৌসুমি হোসাইন মিতু, তার ছেলে এবং ভাই নাজমুল হোসাইন মিলন। প্রথমে ৬-৭ লাখ চাইলেও বাজার পরিস্থিতির বিবেচনায় ৪ লাখ ৬০ হাজারে গরুটি বিক্রি করে দেন তারা। কিন্তু, দাম নিয়ে অসন্তোষ না থাকলেও ক্রেতার হাতে দড়ি তুলে দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন গরুটির মালিক মিতু।

কিছুক্ষণ প্রিয় গরুটিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদেন, আবার কিছুক্ষণ কাঁদেন ভাই কিংবা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে। চোখে মুখে পানি ছেড়ে গৃহস্থের সঙ্গে কাঁদছিল গরুটিও। 

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বিকেলে এমন আবেগঘন চিত্র দেখা যায় রাজধানীর গাবতলী পশুর হাটে।

মৌসুমি হোসাইন মিতুর বড় ভাই নাজমুল হোসাইন মিলন বাংলাভিশনকে জানান, তার বোনোর স্বামী মানসিক অসুস্থ। মিতু গত ৪ বছর ধরে বেসরকারি একটি চাকরি করে গরুটি পুষেছেন। মিলন নিজেও গরুটিকে বেশ আদর করতেন। ফলে, গরুটি তাদের পরিবারের অংশ হয়ে গিয়েছে। তাই, গরুটি বিক্রি করতে গিয়ে আবেগতাড়িত হচ্ছেন তারা।

মিলন বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল গরুটিকে আল্লাহর পথে কুরবানি করা। কিন্তু, সামর্থ অনুযায়ী তা সম্ভব নয়। এজন্য এটিকে কোনো একজন ভালো কোরবানিদাতার কাছে বিক্রি করার পরিকল্পনা ছিল। অবশেষে তারা সেরকম লোক পাওয়ায় কিছুটা কম দামে হলেও বিক্রি করে দিয়েছেন।

মিলনও কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমরা হয়তো লায়নের রক্ত দেখতে পাবো না। দেখলে বোধ হয় সহ্যও করতে পারতাম না। হয়তো যিনি কিনেছেন তার হাতে কোরবানি হবে। কিন্তু, আমি কি কুরবানি করছি তা শুধু আল্লাহ দেখছেন।

ওদিকে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর থেকে একই হাটে নিজেদের পালা একটি গরু নিয়ে এসেছেন ইলিয়াস হোসাইন। দীর্ঘ সময় ধরে তাকে গরুটির পাশে বসে কাঁদতে দেখা যায়। মাঝে মাঝেই তিনি হু হু করে কেঁদে উঠছিলেন, আর টিস্যু দিয়ে চোখ মুছছিলেন। কারণ জানতে চাইলে আরও কান্নায় ভেঙে পড়েন ইলিয়াস। বলেন, মায়ের শখের গরুটি অন্যের হাতে তুলে দিবেন ভাবতেই ক্ষণে ক্ষণে কান্না আসছে তার।

ইলিয়াস জানান, তিনি নিজে বেসরকারি চাকরি করেন। তার মা গত তিন বছর ধরে গরুটিকে পেলে-পুষে বড় করেছেন। ছেলে অসুস্থ হলে তিনি যেভাবে উদ্বিগ্ন হতেন গরুটির কিছু হলেও তেমনই উদ্বিগ্ন হতেন। কিন্তু, গরুটিকে হাটে আনার পর থেকে তার মা বার বার ফোন করে কান্না করছেন। মায়ের আবেগের গরুটি অন্যের হাতে তুলে দিবেন ভাবতে সেজন্য কাঁদছেন ইলিয়াসও।

ইলিয়াসও জানান তাদের ইচ্ছা প্রিয় গরুটি অন্য কাজের জন্য নয়, মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি হোক সেটাই চান তারা।

বিভি/পিএইচ

মন্তব্য করুন: