নর্থ সাউথের ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুদকে ফের অভিযোগ

রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান সদস্য এম এ কাসেমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে অভিযোগ জমা পড়েছে। এর আগে ২০২৩ সালেও তিনিসহ আরও ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি কেনাকাটায় ৩০৪ কোটি হাতিয়ে নেওয়া, অবৈধভাবে বোর্ড সদস্যদের জন্য দামি গাড়ি কেনা ও সিটিং অ্যালাউন্স বাবদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে। পাশাপাশি সাউথইস্ট ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগও আনা হয়েছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) নিজামুল আলম নামে ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি এ অভিযোগ করেন।
এদিকে, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকাকালে এম এ কাসেম দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে তিনি সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে দুদক। টিমের সদস্যরা হলেন—উপ-পরিচালক আজিজুল হক, সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী মুসা জেবিন ও সহকারী পরিচালক আল-আমিন।
তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন এম এ কাসেম। তিনি বলেন, দুদক যদি কোনো তদন্ত করে, তাহলে আমার পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
দুদকে জমা দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম এ কাসেম ক্যাম্পাসের উন্নয়নের নামে ৯০৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমাল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অতিরিক্ত অর্থ হস্তন্তর, রূপান্তর, স্থানান্তর ও গোপন করার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। কম মূল্যের জমি বেশি দামে ক্রয়, ডেভেলপার কোম্পানি থেকে কমিশন নেওয়া, ছাত্রদের টিউশন ফি থেকে অবৈধভাবে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয়, লাখ টাকা করে সিটিং অ্যালাউন্স, অনলাইনে মিটিং করেও সমপরিমাণ অ্যালাউন্স গ্রহণ, নিয়ম ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডের ৪০৮ কোটি টাকা নিজেদের মালিকানাধীন ব্যাংকে এফডিআর, ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে কয়েকগুণ শিক্ষার্থী ভর্তিসহ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিয়মের বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়লেও অজ্ঞাত কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অভিযোগের তথ্যমতে, তিনি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে পূর্বাচল সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ২৫০ বিঘা নিচু জমি কিনে প্রায় ৪২০ কোটি টাকা লোপাট করেছেন। তারা ২০১৪ সালে আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভলপার্স লিমিটেডের কাছ থেকে ৮০ কোটি টাকার জমি ৫০০ কোটি দিয়ে কিনে সেই টাকাও আত্মসাৎ করেন। এরপর নিচু জমি ভরাটের নামে ২০-২৫ কোটি টাকা লোপাট করা হয়।
তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অমান্য করে আটটি কমিটির বিপরীতে ২৫টি কমিটি গঠন করে অতিরিক্ত সিটিং অ্যালাউন্স আদায় করেন। এসব কমিটির মাধ্যমে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সব ক্ষমতা নিজেদের হাতে কুক্ষিগত করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট অর্থের (২০২১ সালের ৩১ আগস্টের হিসাব অনুযায়ী) ৪৩ শতাংশেরও বেশি (৪০৮ কোটি ৪০ লাখ) টাকা নিজেদের মালিকানাধীন সাউথইস্ট ব্যাংকে জমা রেখেছেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান কাসেম।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: