সীমান্তে কাঁটাতারে ঝুলে থাকা ফেলানীর ভাই যোগ দিলেন বিজিবিতে

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে সীমান্তে নিহত হওয়ার পর কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা সেই কিশোরী ফেলানীর ভাই এবার যোগ দিলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবিতে।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতের কুচবিহার সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন কিশোরী ফেলানী খাতুন। তার মরদেহ কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখে অমানবিকতার ঘৃণ্য নজির গড়েছিল বিএসএফ।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) আয়োজিত নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন।
মাত্র ১৫ বছর বয়সী ফেলানীর মর্মস্পর্শী হত্যাকাণ্ড দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। সেই থেকে ন্যায়বিচারের দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল তার পরিবার। তবে এবার নতুন অর্জন তাদের জীবনে এনেছে আশার আলো।
নিয়োগপত্র পাওয়ার পর ফেলানীর ভাই আরফান হোসেন আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, ‘বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল দেশের জন্য কাজ করবো। ফেলানী হত্যার পর মানুষের প্রতিবাদ আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে বিজিবিতে যোগ দিতে। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। বিজিবিকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে দেশের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য।’
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রেখেছিল বিএসএফ। সেই দৃশ্য এখনো ভুলতে পারিনি। তবে দেশবাসী ও বিজিবি সবসময় আমাদের পাশে ছিল। দোকান করে দিয়ে সহায়তাও করেছে। আজ আমার ছেলে নিজ যোগ্যতায় বিজিবিতে চাকরি পেলো, এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। তার ছোট ভাই নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগ দেবে। আমরা আশা করি, তিনি দক্ষ সদস্য হয়ে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: