• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

৮’শ বছরের পুরনো দ্বীপ ‘মনপুরা’, হতে পারে ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয়

ফয়সল বিন ইসলাম নয়ন

প্রকাশিত: ১৬:০৬, ২২ জুলাই ২০২৩

ফন্ট সাইজ
৮’শ বছরের পুরনো দ্বীপ ‘মনপুরা’, হতে পারে ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয়

চারদিকে সাগরের অথৈ জলরাশি। মাঝখানে গ্রাম আর সবুজের মেলায় দূর থেকে এক টুকরো দ্বীপ। সময়ের চাকা ঘুরতে ঘুরতে এর বয়স এখন দাঁড়িয়েছে ৮শ বছরে। কিন্তু হতাশ হবার কারণ নেই। একটুও বয়স বাড়েনি ভোলা জেলার দ্বীপ এই মনপুরার। 

প্রকৃতির অপূর্ব রূপ এখানে বিচ্ছুরিত হয়। একটু যত্ন পেলে এটি হতে পারতো ভ্রমন পিপাসুদের প্রিয় স্থান। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় মনপুরা তার অপার সৌন্দর্য্য নিয়ে নীরবে সময় কাটাচ্ছে। 

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পূর্বাকাশের সূর্যোদয় আর নীল আকাশের পশ্চিম প্রান্তে সাগরের বুকে সূযাস্ত দেখার জন্য মনপুরায় ঘুরতে আসে না লোকজন। 
এছাড়াও শিল্পের অপার সম্ভবনা জীবন পাচ্ছে না অবহেলায়। প্রাণী ও উদ্ভিদ সম্পদের বৈচিত্র্যে ভরপুর মনপুরায় একটি বারের জন্য পা না রাখলে বোঝাই যাবে না এখানে প্রকৃতির কী রূপ লুকিয়ে রয়েছে। 

ভোলা জেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন ছোট্ট এক দ্বীপের নাম মনপুরা। জেলা সদর থেকে ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষে মেঘনার বুকে জেগে উঠে মনপুরা। দেখতে দেখতে এক দুই করে বছরের চাকা ঘুরে এখন আট শতাব্দী পার করেছে মনপুরা।

বংশ পরস্পরায় মনপুরার ইতিহাস স্থানীয়রা জানেন। তাদের কথায়, আটশ বছরের আগে পর্তুগিজ জলদস্যুদের আস্তানা ছিল মনপুরা। এর নির্দশন হিসেবে এখনো দ্বীপটিতে ঘুরে বেড়ায় কেশওয়ালা লোমশ কুকুর। মনপুরার প্রধান আর্কষণ হাজার হাজার একরের ম্যাগ্রোভ বন। যেখানে জীবিত গাছের সংখ্যা ইতোমধ্যে এক কোটির সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে।

যতদূর দৃষ্টি যায় দ্বীপকে মনে হয় এ যেন এক সবুজের বিশাল ক্যানভাস। বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল চর তাজম্মুল, চর জামশেদ, চর পাতিলা, চর পিয়াল, চর নিজাম, লালচর, বালুয়ার চর, চর গোয়ালিয়া, সাকুচিয়াসহ ছোট-বড় মিলে কমপক্ষে ডজন চরে বন বিভাগের প্রচষ্টোয় চলছে নীরব সবুজ বিপ্লব।

আট শতাব্দীর মনপুরায় শুধু প্রাকৃতিক দৃশ্যই দেখা যাবে তা কিন্তু ঠিক নয়। গতানুগতিক সব খাবার ছাড়াও তিনটি বিশেষ খাবার রয়েছে এ দ্বীপে। এগুলো হচ্ছে খাসি মাংশ, পাঙ্গাস মাছ, মহিষের দুধের কাচা দই ও শীতের হাস। এর বাইরে মূল আর্কষণ টাটকা রূপালী ইলিশের স্বাদও নিতে কে না চায়। যারা দ্বীপে বসবাস করেন এটি তাদের কাছে নিত্যকার বিষয়। 

এতোসবের পরও মনপুরার দুঃখ একটাই। সেটি হচ্ছে জেলা সদরসহ সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা। ইচ্ছে করলেই যে কেউ মনপুরায় যাতায়াত করতে পারে না। ঢাকা থেকে সরাসরি লঞ্চে মনপুরায় যাওয়া যায়। তবে এ ব্যবস্থা একেবারেই অপ্রতুল। 

অপরদিকে বিভাগীয় শহর বরিশাল থেকে ভোলা হয়ে তজুমদ্দিন ঘাটে সি-ট্রাকে মনপুরায় চলাচল করে। এটি তজুমদ্দিন থেকে ছেড়ে প্রতিদিন বিকাল ৩টায় আর মনপুরা থেকে সকাল ১০টায়। চরফ্যাশনের বেতুয়াঘাট থেকে মনপুরার জনতা বাজার রুটে দিনে দুটি লঞ্চ চলাচল করে। বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর আট মাস নদী পথটি ডেঞ্জার পয়েন্ট হিবেবে চিহিুত হওয়ায় বন্ধ থাকে লঞ্চে চলাচল। 

এব্যাপারে মনপুরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার চৌধুরী বলেন, দ্বীপটিকে পর্যবটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে প্রথমই যাতায়েত ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তারাও যদি গুরুত্বের সাথে অবহেলিত এ সম্ভাবনার উপর দৃষ্টি রাখতো, তাহলে এখানে আর্ন্তজাতিক মানের পয্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। যদি সেটি করা যায় তার সুফল ভোগ করবে পুরো দেশ। 

তিনি আরো বলেন, জেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও চোখ জোড়ানো প্রকৃতির বৈচিএময় নানা আয়োজন ছড়িয়ে রয়েছে দ্বীপে। অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে মনপুরা দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হয়েছে বলে তিনি জানান।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2