• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

পর্যটক আকৃষ্ট করতে সুন্দরবনে হবে ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র

মোংলা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:৪৬, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

ফন্ট সাইজ
পর্যটক আকৃষ্ট করতে সুন্দরবনে হবে ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র

সংগৃহীত ছবি

সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন। তাই পৃথিবীর অনেক পর্যটকের প্রধান আকর্ষণের জায়গা এই সুন্দরবন। সুন্দরবনকে পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে এবং এখানকার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে প্রায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হবে সুন্দরবন ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র। একইসংগে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে বনজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে কাজ করা হবে। 

‘সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন বা ইকোট্যুরিজম সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রতিবেশ সুরক্ষা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করা। এজন্য সাড়ে ৬ হাজার বর্গমিটারের একটি আরসিসি ফুট ট্রেইল, একটি ইন্টারপ্রিটেশন ও ইনফরমেশন সেন্টার, সাতটি স্যুভেনির শপ নির্মাণ করা হবে।

তিনি আরও জানান, বন কর্মকর্তা, কর্মচারী, ইকো-ট্যুর অপারেটর, গাইড কো ম্যানেজমেন্ট কমিটির ৬০০ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং স্থানীয়দের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বিলি করা হবে লিফলেট।

বনবিভাগ সূত্র জানায়, চলতি সময় থেকে জুন ২০২২ মেয়াদে সুন্দরবনকে ঘিরে এ বিশাল কর্মযজ্ঞ হাতে নিতে যাচ্ছে বন অধিদফতর। নতুন এই প্রকল্পের আওতায় সাতটি ফাইবার বডি ট্রলার, তিনটি পন্টুন ও গ্যাংওয়ে, তিন কিলোমিটার আরসিসি সড়ক, ছয়টি পাবলিক টয়লেট, সাড়ে ৮ হাজার ঘনমিটার পুকুর খনন, একটি সেডশহ প্রদর্শনী ম্যাপ, ৩০টি আরসিসি বেঞ্চ নির্মাণ করা হবে। পাঁচটি গাইড ম্যাপ, ২০টি ডাস্টবিন ও পর্যটকদের জন্য ১০টি পথ নির্দেশনা তৈরি করা হবে। প্রকল্পটি সুন্দরবনের পশ্চিম ও সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে বাস্তবায়িত হবে।

বনবিভাগের সিএফ (বন সংরক্ষক) মিহির কুমার দে বলেন, বর্তমানে সুন্দরবনে ইক্যোট্যুরিজম কেন্দ্র হিসেবে করমজল, হাড়বাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, দুবলারচর, হিরণপয়েন্ট, কলাগাছিয়া রয়েছে। ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র সম্প্রসারণের জন্য সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে আন্দারমানিক ও শরণখোলা এবং সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগে শেখেরটেক মন্দির রয়েছে। এছাড়া সুতারখালী এলাকার কৈলাশগঞ্জ ও কলাবগী এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন চারটিসহ মোট ১১টি ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটির আওতাভূক্ত। ব্যবস্থাপনা কমিটির আওতায় ৩৪ হাজার গ্রাম সংরক্ষণ দলের সদস্য রয়েছে। কমিটিকে সম্পৃক্ত করে ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে বনের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো হবে।

এ বিষয়ে প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, সুন্দরবনের সম্পদের ওপর চাপ কমানো ও স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যেই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে। পর্যটনের বিকাশ হলে স্থানীয়রা ঝুঁকিপূর্ণ পেশা ছেড়ে দেবে। ফলে সুন্দরবনের ওপর নেতিবাচক চাপও কমবে। পর্যটকদের সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হবে। পর্যবেক্ষণ টাওয়ার করা হবে। প্রতিবেশ, পরিবেশ ঠিক রেখে ঝুলন্ত ব্রিজসহ অন্য অবকাঠামোও গড়ে তোলা হবে।

সুন্দরবন বিভাগের করমজল পর্যটন স্পটের ওসি হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশ আছে তাদের আয়ের একমাত্র আয়ের উৎস পর্যটন খাত। আমাদের পর্যটন খাতে বড় বিনিয়োগ করা যায় তাহলে যেমন কর্মসংস্থান বৃদ্ধি তেমনি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী হবো।

সুন্দরবনে পর্যটক বাড়াতে নতুন উদ্যোগকে স্বাগত জানান সুন্দরবন ট্যুরস লাইভের সত্বাধিকারী গোলাম রহমান বিটু। বলেন, এটি করা খুবই প্রয়োজন। তাহলে পর্যটন খাত থেকে সরকার বড় রাজস্ব পাবে বলে মনে করেন তিনি।

মন্তব্য করুন: