• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

একদিনেই আলুটিলা গুহা ভ্রমণ

মাজহারুল ইসলাম শামীম

প্রকাশিত: ১৯:২৮, ৪ অক্টোবর ২০২২

ফন্ট সাইজ
একদিনেই আলুটিলা গুহা ভ্রমণ

প্রাকৃতিক উপায়ে সৃষ্ট এক কৌতূহল গুহা হলো আলুটিলা গুহা।এটি খাগড়াছড়ি জেলায় অবস্থিত। খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় মূল শহর হতে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে সমুদ্র সমতল হতে ৩০০০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট আলুটিলা বা আরবারী পাহাড়ে আলুটিলা গুহা অবস্থিত। স্থানীয়রা একে বলে মাতাই হাকড় বা দেবতার গুহা। 

এই গুহাটি খুবই অন্ধকার ও শীতল। আপনার হাতের ছোট্ট বাঁশের মশালটাই গুহায় আলোর একমাত্র উৎস। সুড়ঙ্গের তলদেশ পিচ্ছিল এবং পাথুরে ও এর তলদেশে একটি ঝর্ণা প্রবাহমান। গুহাটি দেখতে অনেকটা ভূ-গর্ভস্থ টানেলের মত যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫০ ফুট। গুহাটির এপাশ দিয়ে ঢুকে ওপাশ দিয়ে বের হতে আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। গুহাটির উচ্চতা মাঝে মাঝে খুব কম হওয়ায় একপর্যায়ে হামাগুড়িও দিয়ে যেতে হয়।

অত্যন্ত শীতল এবং অন্ধকার হওয়াতে গুহাটি অনেক কৌতুহলের সৃষ্টি করেছে।অনেকের কাছে ভয়ংকর ও মনে হতে পারে।বাস্তবে যখন গুহার মধ্যে প্রবেশ করা হয় তখন অনেকটা ভয়ংকর পরিস্থিতি ও সৃষ্টি হয়।তবে গুহার এক পাশ থেকে অন্য পাশে পার হয়ে যেতে পারলে তখন পুরো ভয়ংকর বিষয়টি উপভোগ করার মতো হয়।

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে এর রহস্যময় সুড়ঙ্গ। পাহাড়ের চূড়া থেকে ২৬৬টি সিঁড়ির নীচে আলুটিলা পাহাড়ের পাদদেশে পাথর আর শিলা মাটির ভাঁজে গড়া এ রহস্যময় সুড়ঙ্গের অবস্থান। গুহামুখের ব্যাস প্রায় ১৮ফুট। আলুটিলার গুহায় যেতে হলে প্রথমেই আপনাকে টিকেট কেটে নিতে হবে মূল গেট থেকে। এরপর মশাল কিনে নিতে হবে। প্রধান গেট দিয়ে ঢোকার পরে বেশ খানিকটা পাহাড়ি পথ পেরুলেই মিলবে গুহার সন্ধান। গুহার পাথর গুলো পিচ্ছিল হবার কারনে পা পিছলে যায় এমন স্যান্ডেল বা জুতা পরা যাবে না। অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য মোবাইল টর্চ বা টর্চ লাইট নিয়ে যেতে পারেন সঙ্গে।

আমাদের আলুটিলা গুহা ভ্রমণঃ
আলুটিলা গুহার রহস্য এবং ভ্রমণের এডভেঞ্চারের খুঁজে আমরা ৩ বন্ধু (আমি,বিমল, তানজিম ফারুক) আলুটিলা গুহা ভ্রমণের পরিকল্পনা করি।রীতিমতো আমরা ফেনীর মহিপাল থেকে বাসে উঠি খাগড়াছড়ি শহরের উদ্দেশ্যে।ফেনী থেকে যেতে প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টা লাগে।খাগড়াছড়ি। আমরা দুপুর ১২ টায় পৌঁছায় খাগড়াছড়ি। এরপর দুপুর হওয়াতে আমরা দুপুরের খাবার শেষ করেনি।এরপর আমরা একটা সিএনজি ভাড়া করে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে আসি।যেখানে এই রহস্যময় গুহার অবস্থান। এরপর টিকেট কেটে আমরা পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করি।এই পর্যটন কেন্দ্রের প্রধান আর্কষণ ও হলো গুহাটি।
অবশেষে আমরা গুহার কাছাকাছি চলে আসি হাঁটতপ হাঁটতে।অনেকগুলো সিঁড়ি বেয়ে নামতে হয় গুহাতে।এরপর আমরা গুহার মধ্যে খুবই অন্ধকার হওয়াতে মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে পার হই।যদিও পার হওয়া বিষয় টা বলা যতটা সহজ পার হওয়াটা এতটা সহজ নয়।অনেক পিচ্চিল পথ,অন্ধকার, শীতল জায়গা,খুব উঁচু নিচু পাথরের খন্ডের উপর দিয়ে হাঁটতে হয়।আবার পানিও থাকে একটু গুহার মধ্যে। সব কিছু বিষয়টা কিছু টা জটিলময়। তারপরও আমরা অবশেষে পার হলাম গুহাটি। এরপর সে পর্যটন কেন্দ্রে আর গুরুত্বপূর্ণ স্থান না থাকাতে আমরা জায়গাটি ত্যাগ করি ।

কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে যেকোনো পরিবহন বাসে খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন। ভাড়া পড়বে ৫২০ টাকা। কেউ চট্টগ্রাম থেকে আসতে চট্টগ্রাম যেকোনো জায়গা থেকে খাগড়াছড়ি শহরে চলে আসা যায় বাসে করে।দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সরাসরি খাগড়াছড়ি শহরে চলে আসা যায় বাস যোগে।তারপর খাগড়াছড়ি শহর থেকে সিএনজি, বাইক,টমটম,বাস ইত্যাদি করে চলে আসা যায় আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের প্রবেশ মুখে। আর পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে গুহা।

কোথায় খাবেনঃ
খাগড়াছড়ি শহরের আশেপাশে বা শহরে বেশ কিছু রেস্তোরাঁ রয়েছে। যেকোনো মূল্যের খাবার খাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই শহরের পৌঁছালে খাবারের রেঁস্তোরার অভাব হবে না।যেকোনো রেস্তোরাঁয় ভালো মানের খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।

কোথায় থাকবেনঃ
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা হওয়াতে শহর ছাড়া বাহিরের হোটেলগুলো তে থাকা উচিত নয়।শহরের কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে।

যেগুলোর ভাড়াঃ এসি ২১০০-২৫০০ টাকা। নন এসি ১৩০০-২০০০ টাকা। এসি স্যুইট রুম ৩,১০০ টাকা। খুবই ভালো মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে থাকার জন্য খাগড়াছড়ি শহরে।চাইলে কেউ শহর কেন্দ্রীক যেকোনো হোটেলে বিশ্রাম নিতে পারবে।

অবশেষে পর্যটন কেন্দ্রগুলো ভ্রমণের সময় আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যেনো আমার দ্বারা অন্যদের ভ্রমণের সৌন্দর্য উপভোগের ক্ষতি না হয়।খাবারের উদ্দিষ্ট যেখানে সেখানে না ফেলা,প্রাকৃতিক সম্পদ ক্ষতি না করা,কোনো বন্য প্রাণী আঘাত না করা,আইনবহির্ভূত কোনো কাজ না করা।নিজে উপভোগ করুন অন্যকে ও উপভোগ করার সুযোগ করে দিন।

লেখক শিক্ষার্থী, ফেনী সরকারি কলেজ

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: