• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

অস্ট্রেলিয়ার আবিষ্কারক জেমস কুকের মৃত্যু রহস্য

প্রকাশিত: ১৪:০৮, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ১৬:১৫, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ফন্ট সাইজ
অস্ট্রেলিয়ার আবিষ্কারক জেমস কুকের মৃত্যু রহস্য

এখনকার দিনে যেমন বিল গেইটস, ইলন মাস্ক বা জেব বেজোসদের কথায় পুরো পৃথিবী নড়েচরে বসে ঠিক তেমনি আজ থেকে ২০০ বা ৩০০ অথবা ৫০০ বছর আগের পৃথিবী নড়েচরে বসতো কিছু দুর্ধর্ষ নাবিকদের কথায়, তাদের নামে ও কাজে। এদেরই একজন ক্রিস্টোফার কলম্বাস তৎকালিন সভ্য দুনিয়ার কাছে উম্মুক্ত করেন আমেরিকাকে। ভাস্কোদাগামা সমুদ্র পথে ভারত আবিস্কার করেন। আর বৃটিশ নেভীর ক্যাপ্টেন জেমস কুক আবিস্কার করেন অস্ট্রেলিয়া।

এসব গল্প তো আমরা সকলেই জানি। কিন্তু যা জানি না, সেটাই জানার চেস্টা করবো আজ। জেমস কুক সাহেব অস্ট্রেলিয়া আবিস্কার করেই থেমে থাকেননি। তিনি তার দলবল নিয়ে প্যাসিফিক ওসেনের আরও অনেক দ্বীপ আবিস্কার করেন। মিস্টার কুক আবিস্কারের নেশায় পুরো প্যাসিফিক ওসেন তন্নতন্ন করে ঘুঁড়ে বেড়াতেন। আর এভাবেই তিনি আবিষ্কার করে ফেলেন হাওয়াই আইল্যান্ডসও। এখানেই আসল গল্প।

হাওয়াই আইল্যান্ডস এখন আমেরিকার একটি স্টেট। এটি সর্বশেষ সংযুক্ত অর্থাৎ এটি আজ আমেরিকার ৫০তম স্টেট।
জেমস কুক যখন তার নৌ বহর নিয়ে হাওয়াই পৌছান তখন সেখানে আদিবাসী হাওয়াইনরা বসবাস করতো। তারা ছিলো দরিদ্র এবং অশিক্ষিত।  তারা ইতিপূর্বে কোনদিনও ’সাদা চামড়ার মানুষ’ চোখে দেখেনি।

তারা ধবধবে সাদা জেমস কুক ও তার দলবল এবং হাতে বন্দুক দেখে হকচকিয়ে যায়। তারা ভেবে বসে সাদা চামড়ার জেমস কুক কোনভাবেই মানুষ হতে পারেন নাহ; অর্থাৎ জেমস কুক স্বর্গ থেকে আসা দেবতা।

তারা তাদের রাজা সমেত জেমস কুকের পায়ের কাছে এসে আশির্বাদ কামনা করে এবং জেমস কুককে এই দ্বীপে আসার জন্য ধন্যবাদ জানায়। এমনকি তারা জেমস কুককে এই দ্বীপের শাসনভার গ্রহন করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করে।
ক্যাপ্টেন কুক তো মহা খুশী।

না চাইতেই চাওয়ার চেয়েও বেশী পেয়ে যাওয়া। কুক তাদের রাজা হয়ে যান। আরামে আয়াশে কিছুদিন কাটান এই দ্বীপে তার সংগীদের অর্থাৎ সহকারী দেবতাদের নিয়ে- বাকীরাও সকলেই সাদা চামড়ার মানুষ ছিলো বিধায় হাওয়াইনরা তাদেরও দেবতাই ভাবতে থাকে। এবং যথাযথ সম্মান জানাতে থাকে।

যাই হোক এভাবে কিছু দিন চলার পর জেমস কুক তার দলবল নিয়ে ঐ দ্বীপ ছেড়ে অন্য আরও দ্বীপ আবিস্কারের নেশায় বেড়িয়ে পরে। হাওয়াইনরা ব্যথিত হয় তাদের দেবতা চলে যাওয়ায়। কয়েক বছর পর জেমস কুক আবারও হাওয়াই দ্বীপে ফিরে আসে কিছু রসদ সংগ্রহের জন্য। আর ওদিকে হাওয়াইনরা কুককে পেয়ে দেবতাদের ফিরে আসায় মহাখুশী। 
কিন্তু সমস্যা হয়, জেমস কুকের এক সহকারী সৈনিক হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পরায়। একজন সৈনিক অসুস্থ হয়ে দিন কয়েকের মধ্যে মারা যায়।

একজন দেবতার মৃত্যু হাওয়াইনদের চোখ খুলে দেয়! তারা বুঝে ফেলে সাদা চামড়ার জেমস কুক ও তার দলবল তো দেবতা নয়,  দেবতা হলে তারা মারা যায় কিভাবে? চালাকি করার জন্য জেমস কুক ও তার দলবলের উপর ক্ষেপে উঠে হাওয়াইনরা। এখানে বলে রাখি হাওয়াইনরা খুবই দুর্ধর্ষ জাতি, ক্ষ্যাপাটে এবং লড়াকু জাতি। প্রতারনার অভিযোগ এনে তারা দ্রুত সংগঠিত হয়ে তীর ধনুক নিয়ে আক্রমন করে জেমস কুকের বাহিনীকে। জেমস কুকের বাহিনীর হাতে কিছু বন্দুক থাকলেও জনবল তেমন একটা ছিলো না। পাল্টা বন্দুকের গুলি চালিয়ে কিছু হাওয়াইনকে হত্যা করলে হাওয়াইনরা ক্ষোভে ফেটে পরে। এবং তীর ধুনক তলোয়ার দিয়ে সম্মিলিত আক্রমন করে হত্যা করে ক্যাপ্টেন জেমস কুকসহ তাদের দলের সকলকে। বৃটিশ নেভীর দুর্ধর্ষ অফিসার ক্যাপ্টেন কুকের জীবন সেখানেই শেষ হয়ে যায়।

অস্ট্রেলিয়ার মেলবর্ন সিটিতে জেমস কুকের বাড়ির সামনে লেখক
আমার পেছনের কটেজটিতে জেমস কুক বসবাস করতেন। এটা অস্ট্রেলিয়ার মেলবর্ন সিটিতে ভিক্টোরিয়া স্টেট পার্লামেন্ট হাউজের পেছনে অবস্থিত। মুর্তিটিও জেমস কুকের। আর আমি আমার অস্ট্রেলিয়া ভ্রমন শেষ করে ২৮ তারিখে যাচ্ছি সেই হাওয়াই দ্বীপেই

মন্তব্য করুন: