বিদেশ থেকে কতটুকু স্বর্ণ আনতে পারবেন? দেশ ভেদে আলাদা নিয়ম

বিদেশে স্বর্ণ কিনে দেশে ফিরছেন? সাবধান! দেশের সীমান্তে পা রাখার আগেই জেনে নিন কতটুকু স্বর্ণ বহন করা বৈধ। একটু অসতর্কতায় মূর্যবান স্বর্ণ হারানোর পাশাপাশি দিতে হতে পারে মোটা অঙ্কের জরিমানাও। এ ছাড়াও পোহাতে হতে পারে আইনি ঝক্কি। স্বর্ণের জন্য বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় দুবাইয়ে দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় অনেকেই দেশে ফেরার আগে স্বর্ণ কেনেন। কিন্তু ভ্রমণকারীরা প্রায়ই ভুলে যান, প্রতিটি দেশের নিজস্ব কাস্টমস নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম না জানলে স্বর্ণ জব্দ হওয়া তো বটেই, হতে পারে মামলা কিংবা জেল পর্যন্ত।
সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বের হওয়ার সময় নিয়ম
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইইএই) আইন অনুযায়ী, কোনো যাত্রীর সঙ্গে স্বর্ণের মূল্য যদি ৬০ হাজার দিরহাম (প্রায় ১৫০ গ্রাম) ছাড়ায়, তাহলে তা কাস্টমসে ঘোষণা দেয়া বাধ্যতামূলক। সঙ্গে থাকতে হবে রশিদ ও বিশুদ্ধতার সার্টিফিকেট।
বাংলাদেশে বছরে একবার, সর্বোচ্চ ১০ ভরি
দুবাইসহ বিদেশ থেকে বাংলাদেশে স্বর্ণ আনার নিয়মে বড় পরিবর্তন এনেছে সরকার। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে একজন যাত্রী বছরে একবার সর্বোচ্চ ১০ ভরি (১১৭ গ্রাম) ওজনের স্বর্ণবার বা স্বর্ণ পিণ্ড আনতে পারবেন। বর্তমানে একজন যাত্রী ২৩৪ গ্রাম (২০ ভরি) ওজনের স্বর্ণবার আনতে পারলেও, নতুন নিয়ম কার্যকর হলে এই পরিমাণ কমে যাবে অর্ধেকে। এ ছাড়া প্রতি ভরিতে ২ হাজার টাকা হারে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে আগের মতোই।
একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার আনতে পারবেন। তবে এক ধরনের অলংকার ১২টির বেশি আনা যাবে না। অর্থাৎ, ১২টি আংটি বা ১২টি কানের দুলের বেশি বহনযোগ্য নয়।
ভারতে নারী-পুরুষ ভেদে ভিন্ন সীমা
ভারতে স্বর্ণ আনার ক্ষেত্রে যাত্রীর অবস্থানকাল ও পেশা অনুযায়ী সীমা নির্ধারিত। পুরুষ যাত্রী আনতে পারেন ২০ গ্রাম, নারী যাত্রী আনতে পারেন ৪০ গ্রাম, শিশু (১৫ বছরের নিচে) আনতে পারে অলঙ্কার বা উপহার হিসেবে ৪০ গ্রাম। ৬ মাসের বেশি বিদেশে অবস্থান করলে সর্বোচ্চ ১ কেজি স্বর্ণ আনা যায়, তবে শুল্ক দিতে হবে। বেশি স্বর্ণ আনলে ৩ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক প্রযোজ্য। ঘোষণা না দিলে কাস্টমস আইনে জব্দ বা মামলা হতে পারে।
পাকিস্তানে ১০ গ্রাম পর্যন্ত শুল্কমুক্ত
পাকিস্তানে প্রবেশের সময় ১০ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণ শুল্কমুক্ত। এর বেশি হলে শুল্ক দিতে হবে। রশিদ ও সনদ সঙ্গে থাকা বাধ্যতামূলক।
যুক্তরাজ্যে ১০ হাজার পাউন্ডের বেশি হলে ঘোষণা জরুরি
যুক্তরাজ্যে স্বর্ণের পরিমাণে সীমা নেই, তবে মূল্য যদি ১০ হাজার পাউন্ড ছাড়ায়, তাহলে কাস্টমসে ঘোষণা দিতে হবে। ঘোষণাবিহীন স্বর্ণ ধরা পড়লে জব্দ হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে ১০ হাজার ডলারের বেশি হলেই ঘোষণা
যুক্তরাষ্ট্রে স্বর্ণ আনার ক্ষেত্রে ওজনের সীমা নেই, তবে মূল্য যদি ১০ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়, তাহলে FinCEN Form 105 পূরণ করে কাস্টমসকে জানাতে হবে। ব্যক্তিগত অলঙ্কারের ক্ষেত্রে শুল্ক না লাগলেও ব্যবসায়িক মনে হলে জটিলতা হতে পারে।
ভ্যাট রিফান্ড পাবেন কারা?
দুবাইয়ে স্বর্ণ কেনা পর্যটকেরা ৫ শতাংশ ভ্যাট রিফান্ড পেতে পারেন, তবে এটি ইউএই’র বাসিন্দাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। বিমা করা চালানে (সিআইএফ) আনলে কিছু ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড় পাওয়া যেতে পারে।
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: