‘ব্লাড মুন’ দেখলো সারাবিশ্বের কোটি মানুষ

ছবি: সংগৃহীত
মহাজাগতিক এক নিদর্শন উপভোগ করলো সারাবিশ্বের কোটি মানুষের সাথে বাংলাদেশিরাও। একদিকে পূর্ণিমার ভরাট চাঁদ, তার গায়েই লাগলো পূর্ণ গ্রাস। পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের পরপরই একপর্যায়ে রক্তি হয়ে উঠলো গোটা চাঁদ। ‘ব্লাড মুন’ নামের এই মহাজাগতিক দৃশ্য উপভোগ করতে শিশু-কিশোর-ছেলে-বুড়ো অনেকেই ছাদে চন্দ্রাহত হয়ে থাকলেন গভীর রাত পর্যন্ত।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত প্রায় সাড়ে ৯টার দিকে বাংলার আকাশে ধরা দেয় চাঁদের এক অন্য রূপ। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের আকাশে দেখা ভিন্ন এক দৃশ্য। কতশত গল্প, কবিতা; উপমা আর আখ্যা। কারও কাছে প্রিয়তমা কারও বা চাঁদ মামা— সব যেন একসাথে অবলোকন করার উপলক্ষ এসে হাজির হলো।
বাহারি রূপকের মতো চাদের রূপেও আছে বৈচিত্র আর বৈশিষ্ট্য। পূর্ণিমার ভরাট চাঁদ দেখে বিমোহিত হয় না এমন মানুষ পাওয়া দুস্কর। অবাক চোখে আকাশের পানে চেয়ে চন্দ্রাহত হতে ভালবাসে মানুষ।
মূলত, রবিবার রাত ছিলো চন্দ্রপ্রেমীদের জন্য বিশেষ। চাঁদের পূর্ণ গ্রহণ; সেই সাথে ব্লাড মুন বা রক্তিম চাঁদ। একসাথে একাধিক মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হতে তাই অনেকেই ছিলেন অপেক্ষায়। ঘটা করে টেলিস্কোপ, বাইনোকুলার নিয়ে হাজির হন ছাদে।
রবিবার রাত ১১ টার খানিক পর টের পাওয়া গেল চাঁদের একটি পাশ যেন কালচে হয়ে আসছে। পূর্ণ গ্রহণ লেগেছে ভরাট চাঁদে। দেখতে দেখতে চাঁদ হারিয়ে যেতে থাকলো গ্রাসের কবলে। ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই গোটা চাঁদটাই ঢেকে গেল পৃথিবীর ছায়ায়। পুরো চাঁদ হারিয়ে যেতে না যেতেই ধীরে ধীরে ঢেকে যাওয়া শরীরে একটা লালচে আভা ফুটে উঠতে শুরু করলো। আসলে রক্তিম চাঁদের আলো নেই খুব একটা। তবুও চন্দ্রদর্শন চলে গভীর রাত পর্যন্ত।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যমতে, বাংলাদেশ সময় রবিবার রাত ৯টা ২৭ মিনিটে চন্দ্রগ্রহণ শুরু হয়। পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ শুরু হয় রাত সাড়ে ১১টায়। রাত ১২টা ১১ মিনিটে শুরু হয় কেন্দ্রীয় গ্রহণ। পূর্ণ গ্রহণ থেকে চাঁদের নির্গমন শুরু হয় রাত ১২টা ৫৩ মিনিটে। গ্রহণ থেকে চাঁদ সম্পূর্ণরূপে বেরিয়ে স্বাভাবিক রূপে ফেরে রাত ২টা ৫৬ মিনিটে। পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণটি টানা ৮২ মিনিট স্থায়ী হয়। ২০২২ সালের পর এটিই দীর্ঘতম পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ।
এর আগে, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, চন্দ্রগ্রহণটি পুর্ণাঙ্গভাবে দেখা যাবে এমন স্থান হলো পূর্বে ইন্দোনেশিয়ার হিলা দ্বীপ হতে শুরু করে পশ্চিমে কেনিয়ার মোম্বাসা বন্দর পর্যন্ত। এই দু’দিকের কিছুটা পূর্ব-পশ্চিমেও আংশিক গ্রহণ দেখা যাবে। তবে উত্তর আমেরিকা, ক্যারিবীয়ান অঞ্চল ও দক্ষিণ আমেরিকার ৯০ ভাগ অঞ্চল থেকে এটি দেখা যাবে না।
বিভি/এআই
মন্তব্য করুন: