• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প: না নারীর পক্ষে না পুরুষের বিরুদ্ধে  

প্রকাশিত: ১৫:৫১, ২৭ আগস্ট ২০২২

আপডেট: ১৬:১৮, ২৭ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প: না নারীর পক্ষে না পুরুষের বিরুদ্ধে  

নারী এগিয়েছে বহুদূর। কিন্তু মানুষ হিসেবে নারীর মর্যাদা কতটুকু প্রতিষ্ঠা পেয়েছে? স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও এ দেশে নারী কেন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক? নারীর 'সংখ্যালঘু দশা'র অবসান কোন পথে? এই জরুরি প্রশ্নগুলোকে খতিয়ে দেখেছে আফরোজা সোমা'র প্রবন্ধগ্রন্থ 'বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প'। বইটি মূলত নারীর পক্ষে বা পুরুষের বিপক্ষে নয় যেখানে নিপীড়ন সেখান থেকেই শুরু বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প। হিন্দু-মুসলমান, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সমাজের সকল বর্গেই নারীরা ‘সংখ্যালঘু-দশা’র মধ্যে বন্দী হয়ে আছে। নারীর মুক্তি ও নরের মুক্তি একই সুতোর বাঁধা। এই বিষয়গুলোকে চিন্তার কেন্দ্রে রেখেছে প্রবন্ধগ্রন্থ ‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’। 

কবি, প্রাবন্ধিক এবং জেন্ডার ও মিডিয়া বিষয়ক গবেষক আফরোজা সোমা’র জেন্ডার ও মিডিয়া বিষয়ক প্রবন্ধগ্রন্থ ‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’ নিয়ে এক আলোচনা ও আনন্দ-আড্ডায় অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। 

শুক্রবার (২৬ আগস্ট)  লেখক-পাঠককে মুখোমুখি হয় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে। আড্ডার আয়োজন করে বইটির প্রকাশনী সংস্থা ‘হাসান’স’। 
 
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক, গবেষক ও রাজনীতি বিশ্লেষক মহিউদ্দীন আহমদ, লেখক-অনুবাদক ও সাংবাদিক রওশন জে চৌধুরী, সাহিত্যের ছোটো কাগজ ‘লোক’-এর সম্পাদক কবি অনিকেত শামীম, কবি ও কথাসাহিত্যিক মুজতবা আহমেদ মুরশেদ, কবি ও সাংবাদিক জুয়েল মোস্তাফিজ এবং গল্পকার বাকিবিল্লাহ।

সমাজ বদলাতে হলে, সামাজিক মনস্তত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন করতে হলে সমাজের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছোতে হবে। শহুরে জনগোষ্ঠীর কাছে পরিবর্তনের বার্তা পৌঁছানোর জন্য ‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে, গ্রামীণ ও প্র্রান্তিক মানুষের কাছে পরিবর্তনের এই ভাবনাগুলোকে কিভাবে পৌঁছে দেয়া যায় সে বিষয়ে আরো ভাবতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

কবি ও কথাসাহিত্যিক মুজতবা আহমেদ মুরশেদ বলেছেন, পুরুষতন্ত্র যে শুধু নারীকে নয়, পুরুষকেও বন্দী করে রাখে সেই বিষয়টিকে দারুণভাবে তুলে ধরেছে বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প।

লেখক-অনুবাদক রওশন জে চৌধুরী বলেছেন, সমাজে বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক চর্চার ভেতর দিয়েই যে মূলত  নারী ও পুরুষের চরিত্র ও পরিচয় নির্মিত হয় সেই বিষয়টিকে অত্যন্ত নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছে ‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’।

‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’-কে সময় ও সমাজের থেকে এগিয়ে থাকা গ্রন্থ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন আলোচক বাকিবিল্লাহ।

কবি জুয়েল মোস্তাফিজ বলেছেন, মূলধারার গণমাধ্যমে, বিশেষত পত্রিকায় ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও নিপীড়নের খবরগুলোর ভাষা যে লিঙ্গ-সংবেদনশীল নয় সেই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা রয়েছে এই গ্রন্থে। তাই, দেশের গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য বইটি অবশ্য জরুরি পাঠ্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

কবি অনিকেত শামীম বলেছেন, পুরুষতন্ত্রের জীবাণুতে শুধু পুরুষ নয় নারীরাও যে আক্রান্ত হতে পারে সেই বিষয়টিকে বিভিন্ন উদাহরণ ও প্রেক্ষিত টেনে এনে পরিস্কার করেছে ‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’।

প্রান্তিক জেন্ডার হিসেবে নারীর 'সংখ্যালঘু দশা'র পেছনে রাষ্ট্রের দায় কতটুকু? বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বিষয়ক খবরগুলোর ভাষা কিভাবে নারীর প্রতি বিদ্যমান অসহনশীলতা ও অসংবেদনশীলতাকে জারী রাখে? এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা কেমন করে পুরুষের পায়েও দিয়েছে বন্দীত্বের জিঞ্জির? এই জরুরি প্রসঙ্গগুলোকে খতিয়ে দেখেছে আফরোজা সোমা'র প্রবন্ধগ্রন্থ 'বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প'। বইয়ে মোট চারটি অধ্যায় ও ২৭টি প্রবন্ধ রয়েছে। 


 

বিভি/রিসি

মন্তব্য করুন: