নরসিংদীর নাছিমা কাদির মোল্লা স্কুলে বাহারি ফল ও পিঠা উৎসব

নরসিংদীর নাছিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল এন্ড হোমসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ফল ও পিঠা উৎসব। শনিবার (১৩ জুলাই) দিনভর বিদ্যালয়ের মাঠে ৪৮টি স্টলে বাহারী এসব ফল ও পিঠার প্রদর্শনী নিয়ে উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বিকালে লাঠিখেলা ও সাংস্কৃতিক পর্বের মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি হয়।
উৎসবে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্রদের স্টলগুলো সাজানো ছিল বাহারী সব ফল দিয়ে আর ছাত্রীরা তাদের স্টলে প্রদর্শন করে বাড়ি থেকে তৈরি করে আনা শতাধিক জাতের পিঠা। অভিভাবকসহ আগত সব দর্শনার্থীদের কাছে এসব ফলের গুণাগুণ ও পিঠার ইতিহাস বর্ণনা করছেন স্টলের শিক্ষার্থীরা।
বৈচিত্র্যময় ফলের মধ্যে ছিল অ্যাভোকাডো, সূর্যডিম আম, ব্যানানা ম্যাঙ্গু, আলুর বোকরা, চেরি, রাম্বুটান, কিউই, মিস্টি তেঁতুল, রকমেনন, ত্বিনফলসহ বাহারী সব দেশীয় ফল। অন্যদিকে বাহারী সব পিঠার মধ্যে ছিল, জামাই আদর পিঠা, বিবিখানা পিঠা, চন্দ্রপুলি, শংসা পিঠা, হাতের শিউই, খিলি পিঠা, ডিমসুন্দরী, ভাপা, নারিকেল দুধপুলি, পাটিসাপটা, আনারকলি, দুধসাগর ও চিতই পিঠার সমাহার।
৪২ নম্বর স্টলের নাম 'জামাই যাবে শ্বশুরবাড়ি, নিয়ে যাবে পিঠার হাঁড়ি'। ওই স্টলে গিয়ে দেখা যায়, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ৫২ ধরনের পিঠা সাজিয়েছেন। দলনেতা মাহবুবা কামাল জানান, তারা দলে দলে ভাগ হয়ে বাড়ি থেকে মায়েদের সহযোগিতায় এসব পিঠা তৈরি করে নিয়ে এসেছেন। উৎসবে তারা বেশ আনন্দ করছেন। স্টলে আসা ব্যক্তিদের পিঠা সম্পর্কে বর্ণনা দিচ্ছেন। তাদের স্টলের উল্লেখযোগ্য পিঠার মধ্যে রয়েছে, কমলাপুলি ও ডিমসুন্দরী।
দাদি-নানির ভালোবাসা নামের আরেকটি স্টলে ৯২ ধরনের পিঠা সাজানো হয়েছে। বিদ্যালয়টির ইংরেজির শিক্ষক লাবনী রানি কুন্ডুর পরিচালনায় দুই শিক্ষার্থী দাদি ও নানি সেজে ছিলেন। ওই স্টলে উল্লেখযোগ্য পিঠার মধ্যে ছিল জামাই আদর পিঠা, বিবিখানা পিঠা, চন্দ্রপুলি ও শংসা পিঠা।
২৫ নম্বর স্টলটির নাম ইউনিক ফ্রুট ভিলেজ। নবম শ্রেণির ছাত্ররা অ্যাভোকাডো, আলুর বোকরা, ত্বিনফল, রাম্বুটানসহ ৬৩ ধরনের ফলের সমাহার ঘটিয়েছেন ওই স্টলে। ফ্রুক্টোজ নামের ২৩ নম্বর স্টলে ছিল ৬৫ ধরনের ফল। জাপানের সূর্যডিম আম ও মালয়েশিয়ার রাম্বুটান ফল প্রদর্শনের পাশাপাশি ভার্টিক্যাল প্লান্টের মাধ্যমে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ কৌশল দেখাচ্ছিলেন তারা। এছাড়া ফল রাসায়নিকমুক্ত করার কৌশলও উপস্থাপন করে।
বিকাল ৫টায় উৎসব মঞ্চে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা নাছিমা বেগম। প্রধান শিক্ষক ইমন হোসেন এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান। এর আগে অতিথিরা স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে ফল ও পিঠা চেখে দেখেন।
নাছিমা কাদির মোল্লা বক্তব্যে বলেন, বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে বাহারী সব ফল আর পিঠা। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নানান স্বাদের পিঠা ও নানান ধরনের ফলের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য এ আয়োজন।
বিভি/রিসি
মন্তব্য করুন: