সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা শেষে ২৪ ঘণ্টা পর বাবার মরদেহ দাফন
প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর সালিশের মাধ্যমে করা সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মরাপাগলা এলাকার মাজেদ বিশ্বাস (৫০) নামে এক ব্যক্তির মরদেহের দাফন কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তার দাফন সম্পন্ন হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হবিবুর রহমান। এর আগে মৃত মাজেদের দুই পুলিশ সদস্য ছেলের বিরুদ্ধে সৎ মা ও বোনদের বঞ্চিত করে বাবার সম্পত্তি নিজেদের নামে রেজিস্ট্রি করিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে সোমবার (২৮ এপ্রিল) মরদেহ দাফনে বাধা দেন দ্বিতীয় স্ত্রী হামফুল বেগম।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, মৃত মাজেদ বিশ্বাসের প্রথম স্ত্রীর ১০ জন সন্তান ছিল। এর মধ্যে ৩ জন মারা গেলে জীবিত থাকে ৪ মেয়ে ও ৩ ছেলে। তাদের দেখাশোনার জন্য ২০ বছর আগে প্রথম স্ত্রী মারা গেলে হামফুল বেগম নামে এক নারীকে বিয়ে করেন তিনি। যার সংসারে কোনো সন্তান না থাকায় মাজেদের প্রথম স্ত্রীর অবুঝ শিশু সন্তানদের আদর যত্নে বড় করেন তিনি। এদিকে পুলিশে চাকুরিরত মাজেদের দুই ছেলে লতিফুর রহমান ও আব্দুল জাব্বার মাস ছয়েক আগে শয্যাশায়ী তাদের অসুস্থ্য পিতা মাজেদ বিশ্বাসকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলে অন্য জায়গায় নিয়ে যান এবং বাবার সম্পত্তি নিজেদের ও এক ভাতিজার নামে লিখিয়ে নেন এবং বাবাকে দিয়ে চলতি মাসের ১৬ এপ্রিল বুধবার একটি তালাকনামা উকিল নোটিশের মাধ্যমে সৎ মা হামফুল বেগমের কাছে প্রেরণ করেন। কিন্তু হামফুল বেগম সেটি গ্রহণ না করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর সম্পত্তি ভাগ-বন্টনের অভিযোগ দিলে আগামী ৫ মে সোমবার গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে তা বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
এদিকে মাজেদ বিশ্বাস দ্বিতীয়বার অসুস্থ্য হলে দুই ছেলে আবারও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে সোমবার (২৮ এপ্রিল) লাশ দাফনের জন্য গ্রামের বাড়ি আনলে উত্তরাধিকার সূত্রে মাজেদের সকল সম্পত্তি সঠিকভাবে বন্টনের জন্য দ্বিতীয় স্ত্রী হামফুল বেগম তার স্বজন ও এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে লাশ দাফনে বাধা দেয়। ফলে মঙ্গলবার সকাল ও বিকেলে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তিনজন ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা দুই দফা গ্রাম্য সালিশে বসে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে অংশীদারদের মধ্যে সম্পত্তির বণ্টনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে সন্ধ্যায় মাজেদের মরদেহ দাফন করা হয়। এই পুরো সময় লাশ ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সে ছিলো।
এ বিষয়ে সদও মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, ঘটনা শুনে সেখানে পুলিশ টিম পাঠানো হয়। সালিশে মীমাংসা হয়ে লাশ দাফনের কথা জেনেছি। অভিযুক্ত দুই ছেলের পুলিশে চাকরির কথা নিশ্চিত করেছেন তিনি।
বিভি এ/আই




মন্তব্য করুন: