সারাদেশে একদিনে বজ্রপাতে প্রাণ গেলো ১৩ জনের

প্রতীকী ছবি
সারাদেশে বজ্রপাতে প্রাণ গেলো ১৩ জনের। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঁচজন, কিশোরগঞ্জে চারজন; চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, শেরপুর ও হবিগঞ্জে একজন করে মারা গেছেন।
রবিবার (১১ মে) বিকাল থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পাওয়া খবরে এ মৃতের সংখ্যা জানা গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক স্থানে বজ্রপাতে পাঁচজন নিহত হয়েছে। জেলার নাসিরনগর ও আখাউড়া উপজেলায় এসব ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- সরাইলের কালিকচ্ছ গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, নাসিরগরের গোর্কণ গ্রামের শামসুল হুদা, ভলাকুট ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের জাকিয়া বেগম (৮), আখাউড়া উপজেলার রুটি গ্রামের সেলিম মিয়া, বনগজ গ্রামের জামির খাঁ।
শিশু জাকিয়া বেগম ছাড়া বাকি চারজনই ফসলের মাঠে কাজ করতে গিয়েছিলেন। আখাউড়া ও নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা পাঁচজন মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজ খবর নেয়া হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জের ভৈরব, কুলিয়ারচর ও করিমগঞ্জের পৃথক স্থানে বজ্রাঘাতে চারজন নিহত ও আহত হয়েছেন একজন। ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর গ্রামে ও কুলিয়ারচর এবং হোসেনপুর উপজেলায় বজ্রাঘাতের ঘটনায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের ইউনুস মিয়ার ছেলে ফয়সাল মিয়া (২৮) ও রসুলপুর গ্রামের আফছর উদ্দিন মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়া (৬৫) এবং কুলিয়ারচর উপজেলার হাজারিনগর গ্রামের সফিকুল ইসলাম সফু মিয়ার ছেলে কবির মিয়া (২৫)। আহত হয়েছেন হোসেনপুর উপজেলার আড়াইবাড়িয়া গ্রামের আবু বকর (৬০)। কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে বাড়ির পাশে কাজ করার সময় বজ্রাঘাতে নিহত হয়েছেন হাদিস মিয়া (৩২)। তিনি উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের সাগুলি গ্রামের মাজু মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেল তিনটার দিকে বজ্রাঘাতসহ বৃষ্টি শুরু হয়। আগে থেকেই জমিতে কাজ করছিলেন ওই তিন কৃষক। বজ্রাঘাতে আক্রান্ত হয়ে তিনজন গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে হোসেনপুর উপজেলার কুড়িঘাট এলাকায় বজ্রপাতে আহত হন আড়াইবাড়িয়া গ্রামের আবু বকর। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তিনি বর্তমানে সুস্থ আছেন।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. উম্মে হাবিবা জুঁই ও হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানভীর হাসান জিকো এসব হতাহতের ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব মোর্শেদ জানান, রবিবার বিকালে বাড়ির পাশে কাজ করছিলেন হাদিস মিয়া। এ সময় হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রাঘাত হলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
ধান কাটার সময় বিকালে সদর উপজেলার বুলনপুর গ্রামে বজ্রপাতে মো. কাইমুল (৪০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নওগাঁ
নওগাঁয় হঠাৎ হানা দেয় কালবৈশাখী। বিকাল ৫টার দিকে শুরু হয় এই তাণ্ডব। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জেলায়। বিশেষ করে জেলার মান্দা, সাপাহার ও পত্নীতলা উপজেলার কিছু এলাকার ওপর দিয়ে এই ঝড় বয়ে যায়। ঝড়-বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে উপজেলার কুসুম্বা দিয়াড়াপাড়া গ্রামে জিলুর রহমান নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টি দেখে ক্ষেত থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তড়িঘড়ি করে। কিন্তু পথে ফাঁকা মাঠে বজ্রাঘাতে মারা যান তিনি। এ সময় আহত হন শফিকুল ইসলাম নামে এক যুবক। তাকে চিকিৎসার জন্য মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে।
শেরপুর
কাটা ধান আনতে গিয়ে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন অপর এক কৃষক। রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার আন্ধারুপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত খবির উদ্দীন (৪৫) উপজেলার কাপাশিয়া এলাকার জালাল উদ্দীনের ছেলে। আহত সকুল উদ্দীন (২০) একই এলাকার জামাল উদ্দীনের ছেলে।
হবিগঞ্জ
বিকাল ৫টার দিকে জেলার আজমিরীগঞ্জে ড্রেনে গোসল করার সময় বজ্রপাতে সাজু মিয়া (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের ডেমিকান্দি গ্রামের তজম আলী মিয়ার ছেলে।
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: