ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা হলে ঈদ আরও প্রাণবন্ত হতো: এমরান সালেহ প্রিন্স

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে ঈদুল আজহা আরও প্রাণবন্ত হতো, যদি নির্বাচিতদের শাসন ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা হতো।
তিনি ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা প্রদানে রবিবার (৮ জুন) দুপুরে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে ঈদ পূণর্মিলনী আয়োজন করেন। এ সময় তিনি উক্ত মন্তব্য করেন। হালুয়াঘাট পৌর শহরের অগ্রযাত্রা কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত ঈদ পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও বিপুল সংখ্যক শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, আলেম-ওলামা, গারো, হাজং, হিন্দু সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নেতৃবৃন্দ এবং চব্বিশের গণঅভুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতরা উপস্থিত ছিলেন ।
সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, জনআকাঙ্ক্ষা ছিলো দ্রুত নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও চব্বিশের গণ অভুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করা। এ লক্ষ্যে বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল প্রধান উপদেষ্টার সামনেই আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবি করেছে। কিন্তু, ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা জাতিকে ঈদ শুভেচ্ছা জানানোর সময় আগামী এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের যে সময়সীমা উল্লেখ করেছেন, তা জনগণ ও রাজনৈতিক দলসমূহের প্রত্যাশার সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। জনগণ তথা রাজনৈতিক দলের মতামতকে অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করে এপ্রিলে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ দুরভিসন্ধিমূলক ও স্বৈরাচারী মনোবৃত্তির পরিচয় বহন করে। কেনো প্রধান উপদেষ্টা বা অন্তর্বর্তী সরকার এপ্রিলে নির্বাচন নিতে চায় তা উল্লেখ করেন নাই। তিনি বলেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে একমাসের মধ্যে সংস্কার করে অবলীলায় ডিসেম্বরের আগেই নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, বিএনপিও যেনো তেনো নির্বাচন চায় না। বিএনপি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সমর্থন যাচাই করতে চায়। জনগণের আস্থা ও রায় নিয়ে তাদের সেবা করতে চায়। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, তিন মাসের মধ্যেই অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেখানে গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন অয়োজন করেছে, সেখানে তিনটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় পার করেও ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার কেন নিরপেক্ষ নির্বাচন অয়োজন করতে পারছে না?
তিনি বলেন, সরকারের ভেতর ও বাহিরে কয়েকটি স্বার্থান্বেষী মহল ড. ইউনূসকে ব্যবহার করে নির্বাচন অনিশ্চিত করতে যড়যন্ত্র করছে। ডক্টর ইউনূসও তাদের প্ররোচনায় সম্প্রতি কয়েকটি বিতর্কিত পদক্ষেপ নিয়ে নিজেও বিতর্কিত হচ্ছেন যা বিএনপিসহ রাজনৈতিক দল এবং জনগণের কাছে বিস্ময়কর। বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলসমূহ আস্থা রেখে তার নেতৃত্বেই ইতিহাস সৃষ্টিকারী নিরপেক্ষ নির্বাচন চেয়েছে। কিন্তু, তিনি বা তার সরকার কেনো রাজনৈতিক দলকে অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করছে তা জাতি জানতে চায়। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি রাজনৈতিক দলসমূহের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানান।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, হালুয়াঘাট উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মোয়াজ্জেম হোসেন মাস্টার, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, সদস্য সচিব আবু হাসনাত বদরুল কবীর, পৌর বিএনপির আহবায়ক হানিফ মোহাম্মদ শাকের উল্লাহ, সদস্য সচিব আবদুল আজিজ খান, মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আমজাদ আলী, বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আফাজ উদ্দিন, ট্র্যাইবল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি বিপুল হাজং, হালুয়াঘাট শাখার চেয়ারম্যন সুব্রত রেমা, শিক্ষাবিদ জয়দেব দত্ত, কয়লা আমদানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু সরকার, হালুয়াঘাট প্রেসক্লাবের একাংশের সভাপতি সুমন সুভ, অপরাংশের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রজ্জাক, হালুয়াঘাট পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ সাহা, চব্বিশের গণঅভুত্থানে শহীদ বিজয় ফরাজীর পিতা সায়েদুল ফরাজী, ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার ইঊনূস হোসেন খান, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই, মোনায়েম হোসেন তালুকদার খোকন, প্রাথমিক শিক্ষক নেতা আবুল মাষ্টার, আবদুল হান্নান এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার দেড় সহশ্রাধিক মানুষ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে মধ্যাহ্ন ভোজের মাধ্যমে আপ্যায়ন করা হয়। এছাড়াও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স রাতে হালুয়াঘাটের স্বদেশী ইউনিয়নের নশুল্লা বাজারে শহীদ জিয়া টি টুয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট এর ফাইনাল খেলা উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ করেন।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: