• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

ভরা মৌসুমেও পদ্মায় মিলছে না প্রত্যাশিত ইলিশ, হতাশ জেলেরা

এম. দেলোয়ার হোসেন, রাজবাড়ী

প্রকাশিত: ১৯:৩২, ৯ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ১৯:৩২, ৯ জুলাই ২০২৫

ফন্ট সাইজ
ভরা মৌসুমেও পদ্মায় মিলছে না প্রত্যাশিত ইলিশ, হতাশ জেলেরা

এক সময় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের পদ্মা নদীর ইলিশের ইতিহাস দীর্ঘ। গোলন্দের পদ্মার রূপালি ইলিশ একসময় পার্শ্ববতী দেশ ভারতের কলকাতায় যেতো গোয়ালন্দঘাট থেকে ট্রেনযোগে। এছাড়াও অনেক কবি, লেখক তাদের গল্পের বইয়ের লেখনিতে গোয়ালন্দের পদ্মার নদীর রূপালি ইলিশের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে, পদ্মা নদীতে ভরা মৌসুমেও মিলছে না প্রত্যাশিত ইলিশ। এতে হতাশ জেলেরা।

জানা যায়, এখন পুরো বর্ষা মৌসুম ইলিশ ধরার উপযুক্ত সময়। কিন্তু, গোয়ালন্দের পদ্মা নদীতে মিলছে না পর্যাপ্ত ইলিশ। জেলেরা নদীতে জাল ফেলে ইলিশ না পাওয়ায় ফিরছেন খালি হাতে। অনেকে জেলেরা নদীর পাড়েই গুটিয়ে রাখছেন তাদের জাল-দড়ি। এ নিয়ে হতাশা বিরাজ করছে জেলেসহ ইলিশ ব্যবসায়ীদের মধ্যেও।

দৌলতদিয়া পদ্মা পাড় এলাকায় দেখা যায়, নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এসময় জেলেদের জালে ঝাকে ঝাকে ইলিশ ধরা পড়ার কথা থাকলেও প্রত্যাশিত ইলিশ মিলছে না। এ কারণে অনেক জেলে নদীর পাড়ে নৌকা ভিড়িয়ে জাল মেরামত করছেন। কেউ বা জাল গুটিয়ে স্তুপ দিয়ে রেখেছেন। আবার কেউ নৌকার সংস্কারের কাজও করছেন।

মৎজীবী প্রদীপ হালদার ও কৃষ্ণ হালদার জানান, পদ্মা নদীতে এখন আর আগের মত ইলিশ মাছ পাওয়া যায় না। সারারাত নদীতে জাল ফেলে খরচের টাকাও ওঠে না। বর্তমানে অন্যান্য মাছও নদীতে অনেক কম।

হরিপদ হালদার বলেন, নদীর পাড়ে বসে ছেঁড়া জাল মেরামত করছি। পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির পেয়েছে। এখন পদ্মায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ার কথা। কিন্তু, ৬ দিন যাবত কোন মাছ পাইনি। আজ একবার সহযোগীসহ নৌকা নিয়ে পদ্মায় গিয়েছিলাম। কিন্তু, কোন মাছ না পাওয়ায় ফিরে এসে নদীর পাড়ে বসে নৌকা এবং জাল মেরামত করছি। আমাদের সুতি জালে বড় মাছ ধরা পড়ে জাল ছেড়া থাকলে ছোট ছোট মাছ বেড়িয়ে যায়। তাই, সকলে মিলে জালগুলো ঠিক করছি।

জেলে হযরত আলি বলেন, একসময় পদ্মা নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়তো। তখন দামও কম ছিলো। এখন পদ্মায় ইলিশ কমে যাওয়ায় ইলিশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে দিন দিন মানুষের ইলিশ কেনা সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। সপ্তাহখানেক হলো কোন মাছই পাই না। নৌকায় রান্না করার মতও কোন মাছ জালে উঠছে না। আজ নৌকায় মুগডাল ও আলুভর্তা করেছি খেয়েছি। আমার দুটি নৌকায় ১০ জনের প্রতিদিন গড়ে ১ থেকে দেড় হাজার টাকা খরচ হয়। বর্তমানে ধারদেনা করে আমাদের খেতে ও চলতে হচ্ছে।

দৌলতদিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাটের মাছ ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা জেলেদের ওপর নির্ভরশীল। তারা যদি মাছ না পায় তাহলে আমরা কিভাবে মাছ কিনবো? আর, কীভাবে এই মাছ অন্যত্র বিক্রি করে ব্যবসা করবো? তারা (জেলেরা) মাছ না পেয়ে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, ঠিক তেমনি আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

দৌলতদিয়া এলাকার মৎস্যজীবীরা আরোও বলেন, আগে এখানে একবার জাল ফেললেই চার থেকে পাঁচ মণ ইলিশ পেতাম। জাল তুলতে কষ্ট হতো। আর এখন সারাদিন জাল ফেলে হতাশ হয়ে বসে থাকতে হয়। এখন সারাদিনে একটা ইলিশও পাওয়া যায় না। এখন নদীর গভীরতা না থাকায় ইলিশ পাওয়া যায় না।

রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা বলেন, ইলিশ সাধারণত গভীর পানির মাছ। পদ্মা নদীতে অসংখ্য ডুবোচরের সৃষ্টি হয়েছে। আর নাব্যতা সংকট থাকায় ইলিশের অবাধ বিচরণ কিছুটা কম হয়ে গেছে। নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা গেলে এই এলাকায় ইলিশের অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করা যাবে।

বিভি/পিএইচ

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2