• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

অপহরণের ৮ দিন পর মিললো পোলট্রি ব্যবসায়ীর লাশ

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:০৪, ১৫ জুলাই ২০২৫

ফন্ট সাইজ
অপহরণের ৮ দিন পর মিললো পোলট্রি ব্যবসায়ীর লাশ

রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার সুগারমিল আদর্শগ্রাম থেকে অপহরণের ৮ দিন পর পোলট্রি ব্যবসায়ী মোঃ মামুনের (২৫) বস্তাবন্দি দ্বিখন্ডিত লাশ উদ্ধার করেছে কাউখালী থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে কাউখালীর মাঝের পাড়া এলাকা থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় পুতে রাখা দ্বিখন্ডিত এই লাশ উদ্ধার করা হয়। সুগারমিল আদর্শগ্রাম এলাকার আলী আহম্মেদের একমাত্র সন্তান মোঃ মামুন। মামুনের দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে বলে জানা যায়। এর মধ্যে তিন ও আট বছর বয়সি ছেলে এবং নয়মাস বয়সি মেয়ে। 

 

এর আগে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নিহত মামুনের সাবেক কর্মচারী মূল ঘাতক মোঃ কামরুল ইসলামকে (৩০) লক্ষীপুর জেলার ভবানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়াও এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত কামরুলের স্ত্রীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জানা যায়, অপরহণ করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হলেও টাকা দেওয়ার আগেই খুন হন পোলট্রি ব্যবসায়ী মামুন। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের সুগারমিল আদর্শগ্রাম এলাকার পোলট্রি ব্যবসায়ী মোঃ মামুন (২৫) গত ৭ জুলাই বিকাল থেকে নিখোঁজ হয়। ৭ জুলাই রাতেই স্ত্রীকে ফোন করে মামুন তার ব্যাংকের ২টি চেক চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনীয়া উপজেলার রানীরহাট বাজার এলাকার জনৈক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিতে বলে। সে তখন স্ত্রীকে জানায়, ঝামেলায় আছে ও চিন্তা না করতে। কিন্তু, ঘাতকরা ঐ রাতেই চায়ের সাথে নেশাজাতীয় খাবার খাইয়ে তাকে অজ্ঞানের পর হত্যা করে। তারপর থেকে পরিবারের কারো সাথে আর যোগাযোগ হয়নি মামুনের। ৮ জুলাই মামুনের স্ত্রীর ফোনে মামুনের নম্বর থেকে ফোন করে জানানো হয় অপহরণ করা হয়েছে মামুনকে। মুক্তিপণ হিসেবে দিতে হবে ১০ লাখ টাকা। একইদিনে কাউখালী থানায় মামুনের স্ত্রী নিখোঁজ ডায়েরি করেন। স্থানীয়দের সহযোগীতায় আটক করা হয় চেক গ্রহণ করা আনোয়ার (২০) নামের এক ব্যক্তিকে। আনোয়ারকে আটকের পর উঠে আসে অপহরণের সাথে জড়িত মামুনেরই সাবেক কর্মচারী কামরুলের নাম। মামুনের স্ত্রী জানায়, ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ফোন করেন কামরুল। কামরুল একই ইউনিয়নের ডাব্বুনিয়া এলাকার সেলিম সওদাগরের ছেলে। স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন রাঙ্গুনীয়া উপজেলার রানীরহাট বাজার এলাকায় ৬ তলা আবাসিক ফ্ল্যাটে।

কাউখালী থানায় মামুনের স্ত্রী জিডি করার পর নড়েচরে বসে কাউখালী থানা পুলিশ। প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন এলাকায় কামরুলের সন্ধানে নামে। পরে গত সোমবার লক্ষীপুর জেলার ভবানীগঞ্জ থেকে এক বন্ধুর বাড়ি থেকে কামরুলকে গ্রেফতার করে কাউখালী থানায় নিয়ে আসলে মামুনের অপহরণসহ মামুন কোথায় তার সন্ধান পায় পুলিশ। পরে কামরুলের স্বীকারোক্তি মোতাবেক মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের মাঝের পাড়া এলাকায় বস্তাবন্দি অবস্থায় মাটিতে পুতে রাখা অবস্থায় মামুনের লাশ উদ্ধার করে কাউখালী থানা পুলিশ।

পুলিশ হেফাজতে কামরুল জানায়, মামুনকে রানীরহাট এলাকায় তার ভাড়া বাসায় স্ত্রীসহ চায়ের সাথে নেশাজাতীয় খাবার খাইয়ে অজ্ঞান করে ফেলে। পরে তাকে হত্যা করে লাশ দ্বিখন্ডিত করে স্ত্রীসহ বস্তায় করে কাউখালী উপজেলার মাঝের পাড়া এলাকায় এসে তার ফুফা শশুরের বাড়ির পাশে লাশ মাটিতে পুতে রেখে পালিয়ে যায়।  

কামরুলের স্বীকারোক্তি মোতাবেক এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তার স্ত্রী সাথী আক্তারকেও (১৯) গ্রেফতার করেছে কাউখালী থানা পুলিশ। 

কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদুল ইসলাম জানান, নিহত মামুনের সাবেক কর্মচারী ছিলো কামরুল। কিন্তু, কর্মচারী থাকলেও সম্প্রতি তারা দুজনে মিলে শেয়ারে ব্যবসা করছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ব্যবসায়ীক দ্বন্দের কারণে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। 

কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম সোহাগ জানান, এ ব্যাপারে কাউখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘাতক কামরুলকে আদালতে উপস্থাপন করে রিমান্ড চাওয়া হবে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত আছে সকলকে খুজে বের করা হবে। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে চেক গ্রহণ করা আনোয়ারকে গ্রেফতার করে রাঙ্গামাটির আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। 

রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) নাদিরা নুর, কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদুল ইসলাম, কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী আতিকুর রহমানসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বিভি/পিএইচ

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2