পাহাড়ে সেনাবাহিনী ও গণমাধ্যমের লক্ষ্য এক এবং অভিন্ন: ব্রি. জে. হাসান মাহমুদ
ঐতিহ্যবাহী খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের ৪০ বছর পর্দাপণে প্রকাশিত হলো প্রথম স্মারকগ্রন্থ ‘উজ্জীবন’। বৃহস্পতিবার বিকেলে খাগড়াছড়ি অফির্সাস ক্লাবে প্রকাশনাটির মোড়ক উন্মোচন হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের চার দশকের দীর্ঘ পথচলায় প্রথম প্রকাশনা ‘উজ্জীবন’এর প্রশংসা করে বলেন “আমি বিশ্বাস করি এই স্মরণিকা আলো ছড়াবে। নতুন প্রজন্মকে দেখাবে খাগড়াছড়ির ইতিহাস কি ছিল। কীভাবে এই সাংবাদিক সমাজ ১৯৮৬ সাল থেকে আজকের এই জায়গায় এসেছে। নতুন যে সাংবাদিকেরা আসবে তারা এই স্মরণিকার মাধ্যমে ইতিহাস জানবে-তাদের অগ্রজরা কীভাবে কি করেছেন। এটি আগামী প্রজন্মের জন্য সংরক্ষিত থাকবে এবং প্রাসঙ্গিকও থাকবে।’
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। এবং এই দায়িত্বশীল প্রচেষ্টায় এই গণমাধ্যমের ভূমিকা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান। সেনাবাহিনী ও গণমাধ্যম উভয়ের লক্ষ্য ভূমিকা অভিন্ন।উভয়ের লক্ষ্য জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, ‘সময়ের প্রয়োজনে আমাদের কাজের পরিধি বেড়েছে। আমরা এখন জঙ্গলে বেস করে থাকি। এটা ইদানিংকালে অনেকের জন্য গাত্রদাহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছি। আমরা কেন এতো ভেতরে যাচ্ছি। আমরা যাচ্ছি সময়ের দাবিতে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন দাঁড়িয়েছে এই পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণ করতে হয় আমাকে স্বাভাবিক কার্যক্রমের বাইরে যেতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি যারা অস্ত্রসহ চলাচল করছে তারা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে না পারে। আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম রাজু ও কার্যনির্বাহী সদস্য জয়ন্তী দেওয়ান-এর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সভাপতি তরুণ কুমার ভট্টাচার্য।
এসময় তিনি বলেন, ১৯৮৩ সালে জেলা সৃষ্টির তিন বছর পর ১৯৮৬ সালে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের যাত্রা শুরু হয়। ২০২৪ সালে প্রেসক্লাবের নতুন নেতৃত্ব দায়িত্বে আসার পর প্রেসক্লাবের ঐতিহ্য, পথচলা, গণমাধ্যমকর্মীদের সংগ্রাম এবং অতীত সন্ধানের পথে অগ্রসর হয়। সেই অগ্রযাত্রার পথে একটি ধাপ হল-"উজ্জীবন” প্রকাশনা। আমরা 'উজ্জীবন' এ সমাজের বহুমুখী চিন্তার সমাবেশ ঘটানোর চেষ্টা করেছি। পাহাড় ও সমতলের লেখকেরা "উজ্জীবন” এ তাদের মতামত দিয়ে চিন্তার প্রতিফলন ঘটিয়েছি। আমাদের বিশ্বাস কেবল একটি স্মরণিকা নয়; এটি সময়ের দলিল হয়ে উঠবে। সাংবাদিকতায় যারা নবীন তারা পাহাড়ের সাংবাদিকতায় কঠিন পথ পার করা ইতিহাস যেমন জানবে তেমনই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি প্রেরণা জোগাবে। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের জন্য এই প্রকাশনা নস্টালজিক হবে।
খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সমির মল্লিকের সম্পাদনায় প্রকাশিত স্মরণিকায় বিভিন্ন লেখকের প্রবন্ধ, মতামত, প্রাণ-প্রকৃতি, ভ্রমণ, কবিতা, স্মৃতির খেরোখাতা, ৩৬ জুলাইয়ের স্মৃতি বিশেষভাবে স্থান পেয়েছেন।
প্রকাশনা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার মো.খাদেমুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি রিজিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর কাজী মোস্তফা আরেফিন, জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা হেমদা রঞ্জন ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো.হাসান মারুফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো.ফরিদ মিঞা, জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমীর সৈয়দ আবুল মোমেন, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মধু মঙ্গল চাকমা, জাবারাং এর নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা, হোটেল গাইরিং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা, জনস্বাস্থ্য বিশ্লেষক ডা:সুশান্ত বড়ুয়া, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক ঞ্যোহ্লা মং, অংসু মারমা, মারমা ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাথোয়ায় মারমা,কবি চিংলামং চৌধুরী, দীঘিনালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ধর্মরাজ বড়–য়া,কবি ইউসুফ আদনান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মো.ক্উাসার আজিজী,খাগড়াছড়ি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল মালেক মিন্টু,সাধারণ সম্পাদক বেদারুল ইসলাম প্রমুখ।
বিভি/এজেড




মন্তব্য করুন: