সুদানে ড্রোন হামলায় নিহত শান্তিরক্ষী সবুজ মিয়ার জানাজায় মানুষের ঢল
সুদানে ড্রোন হামলায় নিহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়ার মরদেহ আজ নিজ গ্রাম গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে আনা হয়। সেখানে জানাজা শেষে নিজ গ্রামে দাফন করা হয়। প্রিয়জনের শেষবারের মতো মুখ দেখার অপেক্ষা করেন স্বজন, প্রতিবেশী ও এলাকাবাসী।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা থেকে মরদেহবাহী একটি হেলিকপ্টার গাইবান্ধার তুলসীঘাট হেলিপ্যাডে অবতরণের কথা রয়েছে। সেখান থেকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে মরদেহ বহন করে নেওয়া হয়েছে পলাশবাড়ী উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের আমলাগাছি (ছোট ভগবানপুর) গ্রামে তার নিজ বাড়িতে।
এরপর মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পর বাদ জোহর বাড়ির পাশের ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন স্থানে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয় । জানাজার নামাজ পরিচালনা করেন মাওলানা নজরুল ইসলাম লেবু।
সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে মরদেহ আনা, জানাজা নামাজ ও গার্ড অফ অনারের মাধ্যমে দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। প্রিয়জনের শেষবারের মতো মুখ দেখার অপেক্ষা করেন স্বজন, প্রতিবেশী ও এলাকাবাসী।
এর আগে, সবুজ মিয়ার মরদেহ গ্রহণ ও আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে গতকাল শনিবার দুপুরেই তার এক ভাই ও চাচা ঢাকায় যান।
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত এই শান্তিরক্ষীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জানাজায় অংশ নেবেন সর্বস্তরের মানুষ।
নিহত সবুজ মিয়া পলাশবাড়ী উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের আমলাগাছি (ছোট ভগবানপুর) গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে। শৈশবেই বাবাকে হারান তিনি। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবুজ ছিলেন সবার ছোট। বড় বোনের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় বৃদ্ধ মা ছকিনা বেগম ও স্ত্রী নুপুর আক্তারকে নিয়ে চলছিল তার ছোট সংসার।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ৭ মার্চ নাটোর জেলার বাসিন্দা নুপুর আক্তারকে বিয়ে করেন সবুজ। দাম্পত্য জীবনের দেড় বছরেই থেমে যায় তাদের স্বপ্নযাত্রা। তাদের কোনো সন্তান নেই।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে এক মামার মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অসামরিক ধুপি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন সবুজ মিয়া। পরবর্তীতে তিনি লন্ড্রি কর্মচারীর পদে উন্নীত হন। সর্বশেষ গত ২৯ অক্টোবর ছুটিতে বাড়িতে এসে ৩ নভেম্বর পুনরায় কর্মস্থলে যোগ দেন। এরপর ৭ নভেম্বর শান্তিরক্ষী মিশনের দায়িত্বে সুদানে যান তিনি।
রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে জীবন দেওয়া এই শান্তিরক্ষীর মৃত্যুতে গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
বিভি/এজেড




মন্তব্য করুন: