• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

সিলেটে মাঠ সংকট, অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে শিশু-কিশোররা

প্রকাশিত: ২০:৫১, ১৭ মার্চ ২০২২

ফন্ট সাইজ
সিলেটে মাঠ সংকট, অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে শিশু-কিশোররা

অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে শিশু-কিশোররা

সিলেট নগরীতে বিলীন হয়ে গেছে অধিকাংশ খেলার মাঠ। ভূমিখেকোদের দৌরাত্ম্য, আবাসন প্রকল্প গড়ে ওঠায় খেলার মাঠ নেই বললেই চলে। আগে যেখানে প্রত্যেক পাড়া মহল্লায় খেলার একাধিক মাঠ ছিলো, এখন তা আর নেই।

সিলেট নগরীর আধুনিকায়নের বলি হচ্ছে মাঠগুলো। আর এ কারণে নতুন প্রজন্মের সময় কাটছে মোবাইল গেম কিংবা জানালায় আকাশ দেখে। ফলে স্বাস্থ্যহানিসহ মেধা শূন্যতার দিকে এগুচ্ছে তারা।

বর্তমানে সিলেট নগরীতে হাতেগোনা কয়েকটি মাঠ থাকলেও বছর বছর বাণিজ্য মেলা, কোরবানির পশুর হাটের কারণে মাঠগুলো অস্তিত্ব সংকটে। একটা সময় সিলেটে পুলিশ লাইন, মেডিকেল কোয়ার্টার, আম্বরখানা কলোনী মাঠ, ওসমানী হাসপাতালের অভ্যন্তরে মাঠ, নয়াসড়কে মিশনটিলার মাঠসহ প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় ছিলো একাধিক মাঠ। 

মানুষের আগ্রাসী তৎপরতার কারণে এ মাঠগুলো বিলীন হয়ে গেছে।  বর্তমানে ধুঁকে ধুঁকে টিকে আছে এমসি কলেজ মাঠ, কালাপাথর মাঠ, আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ ও শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠ। 

সিলেটে টিকে থাকা এ মাঠগুলো নানা সময়ে ওয়াজ মাহফিল, বাণিজ্য মেলা, কোরবানির পশুর হাট হিসেবে ব্যস্ত থাকে। ফলে উঠতি খেলোয়াড়েরা প্রয়োজনীয় অনুশীলনও করতে পারছেন না। বেরিয়ে আসছে না নতুন প্রজন্মের প্রতিভাবান খেলোয়াড়। তারপরও সবেধন নীলমনি হিসেবে টিকে থাকা কয়েকটি মাঠে একই সময়ে ফুটবল আর ক্রিকেটের অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন খেলোয়াড়েরা। তাদের দাবি সিলেটে টিকে থাকা মাঠগুলো সংরক্ষণ ও নতুন মাঠের ব্যবস্থা করে খেলাধুলার পথ সহজ করা হোক।

খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আফছর আহমদ বলেন, শুধু সিলেট নগরীতে নয়, আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নেও মাঠের সংকট প্রকট। এ কারণে বেরিয়ে আসছে না আশানুরূপ প্রতিভাবান খেলোয়াড়। খাদিমপাড়াসহ সকল ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় একটা সময় প্রচুর মাঠ ছিলো। সময়ের ব্যবধানে আজ মাঠ নেই। 

ফুটবল খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি, সিলেটের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া চৌধুরী শিপলু বলেন, মাঠ সংকটের কারণে ভবিষ্যতে খেলোয়াড় ওঠে আসবে কী না এমন শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সিলেটে নতুন মাঠ না হলে তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় বের হওয়া কিংবা জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কাউকে পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা থেকেই যায়।

সিলেটের অন্যতম ক্রিকেট কোচ আলমাস আহমদ শুকুর বলেন, মাঠ সংকটের কারণে অনুশীলন করার পর্যাপ্ত সুযোগ নেই সিলেটে। এ কারণে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় খেলাধুলা ছেড়ে অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। ৪-৫টি মাঠ বরাদ্দ হলে সিলেটে খেলাধুলার সুদিন ফিরবে।

সিলেট সিটি করপোরেশন প্যানেল মেয়র-১ তৌফিক বক্স লিপন বলেন, সিলেটে মাঠের সংকট কাটাতে কাজ করছে সিটি করপোরেশন। ৩টি মাঠের প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বাজেটে ৪টি মাঠের উন্নয়নের জন্য ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। 

স্থানীয়রা জানান, করোনার কারণে দীর্ঘ দিন ধরে শিশু কিশোরীরা ঘরবন্দী ছিলো। সম্প্রতি স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে। করোনাকালে বন্দী সময়ে শিশু কিশোররা খেলাধুলা করতে না পারায় বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগেছে। সিলেটে খেলার মাঠ না থাকায় প্রতিভার বিকাশ ঘটছে না। ফলে তারা মোবাইল গেইমে আসক্ত হয়ে পড়েছে। আবার খেলার মাঠ না থাকায় ঘরবন্দী দিন কাটিয়ে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক অবসাদ দেখা দিচ্ছে। সিলেট নগরী ও আশপাশের উপজেলায় কয়েকটি খেলার মাঠ তৈরি হলে ক্রীড়াঙ্গনের সুদিন ফিরবে- এমন প্রত্যাশা সিলেটবাসীর।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2